নবীগঞ্জের এক কিশোরীকে সিলেটে এনে ৮ মাস টানা ধর্ষণ ও নির্যাতন, মামলা দায়েরের প্রস্তুতি

26

ছনি চৌধুরী হবিগঞ্জ থেকে :
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে বিয়ের প্রলোভনে কাজের মেয়েকে ৭-৮ মাস যাবত মানসিক, শারীরিক নির্যাতন ও একাধিক বার ধর্ষণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
(১৮ আগষ্ট) সোমবার সকালে টানা ধর্ষণের ফলে ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা কিশোরী (১৭) নির্যাতনে গুরুতর আহত অবস্থায় হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
সূত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর গ্রামের মৃত উরুস আলী ছেলে হুমায়ুন মিয়া (২২) সিলেট উপশহর এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন। প্রায় ৮ মাস পূর্বে হুমায়ুন মিয়া নিজ গ্রামের পার্শবর্তী মিছকিনপুর এলাকার জনৈক (১৭) কিশোরীকে তার বাসায় গৃহকর্মীর কাজের জন্য উপশহরের বাসায় নিয়ে যায়।
এক পর্যায়ে মেয়েটির সাথে প্রেমের অভিনয় করে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তুলেন হুমায়ুন মিয়া। কয়েক মাসে একাধিক বার ধর্ষণে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে মেয়েটি বিয়ের জন্য একাধিকবার হুমায়ুনকে চাপ দেয়। এতে হুমায়ুন গর্ভ নষ্ট করার পরামর্শ দেয় । কিন্তু মেয়েটি গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে অনিহা প্রকাশ করলে তার উপর অমানুষিক নির্যাতন শুরু হয়। গত শনিবার (১৭ আগষ্ট) বিকেলে মেয়েটি আবারো বিয়ের জন্য চাপ দিলে গৃহকর্তা তার শয়ন কক্ষে বেঁধে মারপিট করে। মারপিটের এক পর্যায়ে মেয়েটি গুরুতর আহত হয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়লে। (১৮ আগষ্ট) রবিবার ভোর সকালে নির্যাতিত মেয়েটিকে নবীগঞ্জ উপজেলার বিবিয়ানা বিদ্যুৎ পাওয়ার প্ল্যান্টের রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যায় গৃহকর্তা হুমায়ূন মিয়া।
পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় মেয়েটিকে উদ্ধার করে তার বাড়িতে নিয়ে আসে। পরে সোমবার সকালে তাকে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মেয়েটিকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। কিশোরী মেয়েটি বর্তমানে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। কিশোরী গৃহকর্মীর মা ছায়ারুন বেগম বলেন, আমাদের দারিদ্রতার সুযোগে হুমায়ুন মিয়া বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমার মেয়েকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে। এতে মেয়েটি অন্তঃসত্তা হয়। হুমায়ুন মিয়া আমার মেয়ের গর্ভ নষ্ট করার জন্য তার উপর অমানবিক নির্যাতন করায় সে গুরুতর আহত অবস্থায় এখন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। আমার মেয়েকে হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে না পারি এর জন্য অভিযুক্তকরীর লোকজন হাসপাতালে তৎপর রয়েছে।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকবাল হোসেন বলেন, বিষয়টি শুনেছি, এখনো মামলা দায়ের করা হয়নি। অভিযোগ দাখিল করলে আমরা প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।