কুলাউড়া থেকে সংবাদদাতা :
‘আমার জীবনের ১৬টি বছর খুব সুন্দর ছিলো। কিন্তু ১৭তম বছরে অনেক কিছু ঘটে গেছে।’ শেষ লেখা শিরোনামের একটি চিরকুটে এমন কথাটি লিখে শারমীন আক্তার (১৭) নামে এক কলেজছাত্রী ঘরের ভিতর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের বালিয়াটিলা গ্রামের। শারমীন ওই গ্রামের লাল মিয়ার মেয়ে ও শমসেরনগর সুজা মেমোরিয়াল কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী।
মা বাবা ও পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশ্য করে চিরকুটে সে আরও লিখে, ”আমি খুব ভালো ছাত্রী ছিলাম। আমার আব্বা, আম্মা ও ভাই আমাকে খুব আদর করেন ভালোবাসেন। আমার মা-বাবা আমাকে তাদের পছন্দে বিয়ে দিতে চাইছিলেন। কিন্তু আমি বিয়ের জন্য রাজী নই। আবার আমি বিয়েতে অমত করলে মা-বাবা কষ্ট পাবেন। আমি মা-বাবাকে কষ্ট দিতে চাই না। কাঁদতে আমার খুব কষ্ট হয়। আত্মহত্যা মহাপাপ। তবে বেঁচে থাকা আমার জন্য অসম্ভব তাই মৃত্যুর পথ বেছে নিয়েছি। আমি জানি আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করবেন না। ওপারে জাহান্নামের আগুনে আমি জ্বলবো। তবুও আমাকে সবাই মাফ করে দিয়েন খুশি হবো।
পুলিশ জানায়, গত রবিবার রাতে শারমীন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। গতকাল সোমবার ভোরে শারমীনের ছোট বোন শাহরীন ঘুম থেকে ওঠে বড়বোনকে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় চিৎকার দেয়। পরে মা-বাবা এসে তাকে ঝুলন্ত দেখে পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে কুলাউড়া থানার উপ পরিদর্শক মো. আবুল বাশার শারমীনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়ে দেন। এ সময় ঘর থেকে শারমীনের হাতে লেখা দুই পৃষ্ঠার একটি চিরকুট উদ্ধার করে পুলিশ।
কুলাউড়া থানার উপ-পরিদর্শক মো. আবুল বাশার বলেন, ফ্যানের সাথে ঝুলে সে আত্মহত্যা করেছে। চিরকুটটি ছিঁড়ে ফেলা হয়েছিলো। পরে ছেড়া চিরকুটটি ঘর থেকে উদ্ধার করেছি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। কুলাউড়া থানার ওসি মো. ইয়ারদৌস হাসান লাশ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।