স্টাফ রিপোর্টার :
দক্ষিণ সুরমার নাজিরবাজারে দীর্ঘদিন ধরে নির্ভয়ে চলছিলো অবৈধ শিলং তীর, ঝাণ্ডমাণ্ডসহ বিভিন্ন নামীয় একাধিক জুয়ার আসর। এমন একটি জুয়ার আসরে অবশেষে অভিযান চালিয়েছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-৯। এসময় ২৫ জুয়াড়িকে আটক করতে সক্ষম হয় র্যাব। অভিযানকালে জুয়ার আসর থেকে নগদ ৯১ হাজার ৫ শ’ ৮০ টাকা ও জুয়ার সরঞ্জামাদিসহ তাদেরকে আটক করা হয়েছে বলে র্যাব জানায়। এছাড়া মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ নগরীর তালতলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে জুয়া খেলারত অবস্থায় ৬ জুয়াড়ীতে আটক করেছে।
র্যাব-৯ গণমাধ্যমকে জানায়, গত শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-৯, স্পেশাল কোম্পানী (সিলেট ক্যাম্প) এর একটি আভিযানিক দল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে দক্ষিণ সুরমার নাজির বাজারস্থ আপ্তাব আলীর ছেলে ও এ জুয়ার আসরের মূল হোতা লাল মিয়ার ছয়ভাই রেষ্টুরেন্ট এবং এর পার্শ্ববর্তী আধাপাকা ঘরে অভিযান চালায়। এসময় এ ঘরে জুয়াড়িরা খেলারত অবস্থায় ছিলো। র্যাব-৯ এর চৌকস দলের অভিযানে তারা আর পালিয়ে যেতে পারেনি। এ সময় ২৫ জুয়াড়িকে আটক করে র্যাব। তবে এসময় এ জুয়ার আসরের মূল হোতা লাল মিয়া সেখানে উপস্থিত না থাকায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
আটককৃতরা হচ্ছে- দক্ষিণ সুরমা থানার লালাবাজার ইউনিয়নের আবদিতপুর গ্রামের আপ্তাব মিয়ার পুত্র ও লাল মিয়ার ভাই মো. শাকিল আহমেদ নুনু (২৭), বিশ্বনাথ থানার হামিদপুর গ্রামের মো. সিরাজুল হকের পুত্র মো. সেলিম আহমদ (৩১), দক্ষিণ সুরমা থানার তেতলী গ্রামের মৃত কবির মিয়ার পুত্র মো. মঈন উদ্দিন (৩৬), বিশ্বনাথ থানার জানাইয়া গ্রামের মৃত আকুল মিয়ার পুত্র মো. হাবিবুল মিয়া (৩২), বালাগঞ্জ থানার হায়দারপুর গ্রামের মৃত মচন আলীর পুত্র মো. আব্দুস সালাম (৪৫), দক্ষিণ সুরমা থানার রশিদপুর গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের পুত্র মো. আশিক মিয়া (৪৫), বিশ্বনাথ থানার চালিয়া দশঘর গ্রামের মৃত মোন্তাজ আলীর পুত্র মো. বাহার আলী (৪০), দক্ষিণ সুরমা থানার তেতলী ভেটুয়ার পাড় গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের পুত্র মো. রুয়েল মিয়া (২৭), একই গ্রামের মৃত দনু মিয়ার পুত্র মো. সুফি মিয়া (২৭), দক্ষিণ সুরমা থানার লালাবাজার গ্রামের মো. দ্বীন ইসলামের পুত্র মো. নজরুল ইসলাম (২৮), দক্ষিণ সুরমা থানার নিজগাঁও গ্রামের গৌউছ আলীর পুত্র মো. আলী হোসেন (২৪), দক্ষিণ সুরমা থানার শাহ সিকন্দর গ্রামের মৃত আমিন উল্লাহের পুত্র মো. জালাল উদ্দিন (৩১), ওসামনীনগর থানার তাজপুর কাশি কাপন গ্রামের মৃত শফিক মিয়ার পুত্র মো. জয়নাল আবেদীন (২৮), বিশ্বনাথ থানার ইলামের গাঁও-এর মৃত জোনাব আলীর পুত্র মো. আব্দুস সালাম (৫৫), দক্ষিণ সুরমা থানার পশ্চিমভাগ গ্রামের মৃত আফতাব আলীর পুত্র মো. বাবুল আহমেদ (২৮), ওসমানীনগর থানার নিজ করমশি গ্রামের মৃত খাজা মিয়ার পুত্র মো. কনর মিয়া (৩২), এক থানার মমিনপুর গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিনের পুত্র মো. আব্দুল হক (২১), দক্ষিণ সুরমা থানার কুতুবপুর গ্রামের মৃত আব্দুল নূরের পুত্র মো. শাহিন মিয়া (৩০), ওসমানীনগর থানার ইছামতি গ্রামের মৃত মোন্তাজ আলীর পুত্র মো. শায়েস্তা (৫০), দক্ষিণ সুরমা থানার ফরিদপুর গ্রামের মৃত ময়না মিয়ার পুত্র সেবুল মিয়া (৪০), একই থানার বলদী গ্রামের মৃত হানিফ আলীর পুত্র মো. আতাউর রহমান (৩৭), একই থানার কুতুবপুর গ্রামের মৃত সোনাফর আলীর পুত্র মো. খালেক মিয়া (৩২), ওসমানীনগর থানার মাটিয়ানী গ্রামের মৃত ময়না মিয়ার পুত্র মো. আবদান মিয়া (৩৪), একই থানার দশহাল গ্রামের মৃত সোনাফর আলীর পুত্র মো. নুরুজ্জামান (৩১) এবং বালাগঞ্জ থানার মাকরশী গ্রামের মো. লাল মিয়ার পুত্র মো. রাসেল মিয়া (২২)। আটককৃত আসামিদেরকে দক্ষিণ সুরমা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এবিষয়ে দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খয়রুল ফজল জানান, উক্ত ২৫ জুয়াড়িকে বিশেষ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এছাড়া তালতলা থেকে আটককৃতরা হচ্ছে, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ ইসলামপুর গ্রামের সিরাজ মিয়ার পুত্র বর্তমানে কাজিরবাজার এলাকার বাসিন্দা রুহেল মিয়া (২২), গোলাপগঞ্জ থানার দক্ষিণবাগ গ্রামের শওকত আলীর পুত্র হামিদুর রহমান (২৪), নগরীর খারপাড়ার কটন মিয়ার পুত্র সবুজ মিয়া (২৮), সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা গ্রামের বালিজুরি গ্রামের আব্দুল হকের পুত্র বর্তমানে আখালিয়া এলাকার বাসিন্দা আজিজুল হক (২৫), নগরীর খুলিয়াপাড়া ইফসুফ মিয়ার পুত্র সুমন আহমদ (১৮) ও হবিগঞ্জের লাখাই থানার সাতাউক গ্রামের মৃত নুরধর মিয়ার পুত্র মোঃ রুবেল (২২)।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এসআই মোঃ রফিকুল ইসলাম সঙ্গীয় এএসআইআলী হোসেন, এমসআই ভূলন চন্দ্র দেব ও সঙ্গীয় ফোর্সদের সহায়তায় তালতলা নন্দিতা সিনেমা হলের নীচ তলায় চন্দ্রিকা মার্কেটের মা এন্টারপ্রাইজ নামীয় ৯নং দোকানে অভিযান পরিচালনা করে জুয়ারীকে আটক করে। এ সময় জুয়া খেলার বিভিন্ন সামগ্রী ও নগদ ১ হজার ৩শ’ ১০ টাকা উদ্ধার করে। তখন তাদের সাথে থাকা আরো ৭/৮ জন জুয়াড়ী দৌড়ে পালিয়ে যায়। অতঃপর এসআই/ মোঃ রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে জুয়ারীদের আসামী করে কোতয়ালী থানায় এজাহার দায়ের করলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজুর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।