সেপ্টেম্বরের আগে যাচ্ছে না আ’লীগের বিদ্রোহীদের বহিষ্কার ও শোকজ, আরো খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে

11

কাজিরবাজার ডেস্ক :
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও দলীয় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া নেতাদের কারণদর্শানো (শোকজ) নোটিশ পাঠানোর সময় বাড়ছে। সেপ্টেম্বরের আগে বিদ্রোহীদের এ নোটিশ পাঠানোর সম্ভাবনা ক্ষীণ।
রবিবার (২৮ জুলাই) থেকে বিদ্রোহীদের এ নোটিশ পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু এদিন কোনো নোটিশ পাঠানো হয়নি। অভিযুক্তদের ব্যাপারে আরও খোঁজ-খবর নেওয়া ও চলমান বন্যা পরিস্থিতির কারণে নোটিশ পাঠাতে কিছুদিন দেরি হতে পারে এবং সেটা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গড়াতে পারে বলে জানিয়েছে আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র।
আওয়ামী লীগের ওই সূত্রগুলো জানায়, গত উপজেলা নির্বাচনে দুই শতাধিক নেতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ও বিদ্রোহে সমর্থন দেওয়ার অভিযোগ এসেছে। এখনও অভিযোগ আসছে। অভিযোগগুলো ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। কারণ কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্যক্তি আক্রোশ থেকেও অভিযোগ করা হচ্ছে। এগুলো সঠিকভাবে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য আরও কিছুদিন সময় প্রয়োজন।
বর্তমানে সারা দেশে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় দলীয়ভাবে কাজ চলছে। যাদের বিরুদ্ধে কারণদর্শানো নোটিশ দেওয়া হবে তাদের অনেকেই দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছেন। এখন নোটিশ দেওয়া হলে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে। এছাড়া সামনে শোকের মাস আগস্ট। মাসব্যাপী বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকীর কর্মসূচি পালিত হবে। শোকের মাস আগস্টে দলের কারও বিরুদ্ধে কারণদর্শানো নোটিশ দেওয়ার সম্ভাবনা নেই। সার্বিক পরিস্থিতিতে আগামী সেপ্টেম্বরের আগে বিদ্রোহীদের নোটিশ পাঠানোর সম্ভাবনা ক্ষীণ।
এর আগে ২০ জুলাই এক সাংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন ও যারা বিদ্রোহের মদদ দিয়েছিলেন তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ২০০টির মতো অভিযোগ এসেছে। অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হবে ২৭ জুলাই পর্যন্ত। এরপর ২৮ জুলাই থেকে কারণদর্শানো নোটিশ যাবে।
রবিবার (২৮ জুলাই) সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বিদ্রোহীদের কারণদর্শানোর নোটিশ পাঠানোর যে সিদ্ধান্ত আছে বন্যার কারণে তা কিছুদিন দেরি হতে পারে। তবে সোমবার (২৯ জুলাই) সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
চলতি বছর অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে অনেক জায়গায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনীত দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়। দলের প্রতীক নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন বিভিন্ন জায়াগায় তাদের আওয়ামী লীগের স্থানীয় সংসদ সদস্য ও দলীয় নেতারাও সমর্থন দেন। দুই শতাধিক নেতার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায়। এর মধ্যে প্রায় ৬০ জন দলীয় এমপি। যাদের মধ্যে বর্তমান ও সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীও রয়েছেন। এরা বিদ্রোহী প্রার্থীদের সমর্থন দিয়েছেন। দলীয় পদে থেকে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন তাদের মধ্যে ৭৫ জন উপজেলার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান, দলের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে দলীয় প্রার্থীর বিপরীতে প্রার্থী হওয়া ও বিদ্রোহী প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ার বিষয়টি দলের শৃঙ্খলাভঙ্গের সর্বোচ্চ অপরাধ হিসেবে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। এটা করে তারা দলের বিরুদ্ধে ও দলের শীর্ষ পর্যায়ের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল।
সূত্র জানায়, গত ১২ জুলাই দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী ও নৌকার প্রার্থীর যারা বিরোধিতা করেছিলেন তাদের কারণদর্শানোর নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।