কাজিরবাজার ডেস্ক :
বাজারে বিক্রি হওয়া ১০টি কোম্পানির পাস্তুরিত দুধের ১১টি নমুনা পরীক্ষায় ভারী ধাতব পদার্থের উপস্থিতি পেয়েছে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ বিসিএসআইআর, আইসিডিডিআরবি এবং জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট।
হাইকোর্টের নির্দেশে ১৪টি নমুনা পরীক্ষা করে ১১টিতেই ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া পেয়েছে তারা। আর এই অভিযোগে ১০টি কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করেছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।
বুধবার, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পরিদর্শক কামরুল হাসান মামলাটি করেন। যাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, সেগুলো হলো, সরকারি প্রতিষ্ঠান মিল্ক ভিটা, প্রাণ মিল্ক, আড়ং ডেইরি, ইগলু, ফার্ম ফ্রেশ, ডেইরি ফ্রেশ, আফতাব মিল্ক, আল্ট্রা মিল্ক, আইরান, পিউরা, সেইফ মিল্ক।
এর আগে দুধ নিয়ে গবেষণা করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক আ ব ম ফারুক। তার প্রতিবেদনে বিভিন্ন কোম্পানির পাস্তুরিত দুধে, অ্যান্টিবায়োটিকসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর জীবাণুর কথা বলা হয়েছিল। তখন প্রাণিসম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে এই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। অধ্যাপক ফারুককে প্রমাণ দিতে হবে বলেও মন্তব্য এসেছিল অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিনের পক্ষ থেকে।
তবে এবার রাষ্ট্রায়াত্ব প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রতিবেদন পাওয়ার পর মামলার সিদ্ধান্ত নেয় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। আর এদের নির্দেশেই মামলাটি করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের খাদ্য পরিদর্শক কামরুল হাসান।
কামরুল হাসান বলেন, ‘১১টি নমুনার মধ্যে ১০টির কোম্পানির দুধে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ভারী-ধাতুর মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি প্রমাণ হওয়ায় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে।’
মঙ্গলবার ১১টি কোম্পানির পাস্তুরিত দুধে সিসার উপস্থিতি পাওয়ার কথা জানিয়ে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি বাজারে বিক্রি হওয়া খোলা দুধের নমুনায় ক্যাডিমিয়ামের উপস্থিতি পাওয়া গেছে বলেও তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট, বিসিএসআইআর, প্লাজমা প্লাস, ওয়াফেন রিসার্চ, পারমাণু শক্তি কমিশন ও আইসিডিডিআরবির ল্যাবে পাস্তুরিত দুধ, খোলা দুধ ও গোখাদ্য পরীক্ষা করেছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। সেই পরীক্ষায় বিএসটিআইয়ের অনুমোদিত ১৪টি কোম্পানির মধ্যে ১১টির পাস্তুরিত দুধে সিসা পাওয়া গেছে।
বিএসটিআইয়ের অনুমোদিত পাস্তুরিত দুধের নমুনা পরীক্ষার তিনটি প্রতিবেদনের ওপর ২৮ জুলাই শুনানির দিন নির্ধারণ করেছে হাইকোর্ট। বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ শুনানির দিন নির্ধারণ করেন।
হাইকোর্ট চারটি প্রতিষ্ঠানকে নমুনা পরীক্ষা করে রিপোর্ট দিতে বললেও এখনও জমা দেয়নি বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট।