ক্রীড়াঙ্গন রিপোর্ট :
সময়ের সেরা ফুটবলার হওয়া সত্ত্বেও মেসির বিরুদ্ধে অভিযোগ, এখনও জাতীয় দলের হয়ে কোনো শিরোপা জিততে পারেননি। কিন্তু জাতীয় দলের জার্সিতে একটা শিরোপা কিছুদিন আগেই (৮ জুন) জিতেছেন আর্জেন্টাইন ফুটবল জাদুকর। যদিও এই শিরোপা ঠিক হিসাবের মধ্যে পড়ে না।
গত শনিবার নিকারাগুয়াকে হারিয়ে ‘কোপা সান হুয়ান কাপ’র শিরোপা জিতেছে আর্জেন্টিনা। মেসির জোড়া গোলে ফিফা র্যাংকিংয়ের ১২৯তম স্থানে থাকা দলটিকে ওই ম্যাচে ৫-১ গোলে বিধ্বস্ত করেছে আলবিসেলেস্তেরা। আর এতেই প্রথম আন্তর্জাতিক শিরোপা জেতা হয়ে গেছে মেসির। ম্যাচটি আনঅফিসিয়াল হওয়ায় শিরোপা জেতার প্রকৃত স্বাদ মেসির জন্য এখনও অধরাই রয়ে গেল।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই ‘সান হুয়ান কাপ’র নাম কি কখনো শুনেছেন? আসলে পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী মেসি এই শিরোপায় হাত দেওয়ার আগে এই শিরোপার নাম আদতে প্রায় সবারই অজানা ছিল। এটা আসলে কোপা আমেরিকার প্রাক-প্রস্তুতিমূলক টুর্নামেন্ট হিসেবে খেলা হয়েছে। যে মাঠে এই ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে (এস্তাদিয়ো সান হুয়ান দেল বিচেন্তেনারো) সেই মাঠের নামেই এই টুর্নামেন্টের নামকরণ।
এই ‘সান হুয়ান কাপ’ আদতে ‘টমাস কুক ট্রফি’র সমতুল্য, যা প্রতি বছর ম্যানচেস্টার সিটির প্রীতি ম্যাচের জন্য বরাদ্দ। এটা এমনকি এমিরেটস কাপেরও সমতুল্য নয়। তবে শিরোপা তো। মেসিভক্তরা এতে কিছুটা আনন্দ পেতেই পারেন।
অন্যদিকে গত ৯ জুন মেসির কথিত প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো দ্বিতীয়বারের মতো সত্যিকারের আন্তর্জাতিক শিরোপা জেতার স্বাদ পেয়েছেন। গঞ্জালো গুয়েদেসের ৬০তম মিনিটের গোলে নেদারল্যান্ডসকে ১-০ গোলে হারিয়ে উয়েফা ন্যাশনস লিগের শিরোপা জিতেছে পর্তুগাল। এর আগে ২০১৬ ইউরোর শিরোপা জেতার আনন্দে মেতেছিলেন পর্তুগিজ ফুটবল যুবরাজ।
সবমিলিয়ে ক্যারিয়ারে ২৯টি শিরোপা জেতা হয়ে গেল জুভেন্টাস উইঙ্গারের। এর মধ্যে ৬টি লিগ শিরোপা, পাঁচটি ইউরোপিয়ান কাপ আর ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপ। তার সাফল্যের পালে নতুন হাওয়া লাগিয়ে এবার আবার যুক্ত হয়েছে ন্যাশনস লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার।
এবারের ন্যাশনস লিগের আসরে রোনালদোর সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার জন্য সেমিফাইনালে সুজারল্যান্ডের বিপক্ষে করা হ্যাটট্রিকই যথেষ্ট ছিল। এছাড়া টুর্নামেন্টের সেরা একাদশেও জায়গা হয়েছে তার।
আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে মেসির সবচেয়ে বড় সাফল্য এখন পর্যন্ত অলিম্পিকের স্বর্ণপদক এবং অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের শিরোপা। এগুলোর কোনোটাই সিনিয়র পর্যায়ের শিরোপা নয়, যা তার নামের সঙ্গে একেবারেই মানানসই নয়। অথচ ২০১৪ থেকে ২০১৬ এই তিন বছরে টানা তিনবার ফাইনাল থেকে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে তাকে। এর মধ্যে ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে অতিরিক্ত সময়ের গোলে হার, আর দুবার চিলির কাছে টাইব্রেকারে।
মেসিকে ছাড়া আজও আর্জেন্টিনা দল চিন্তা করা যায় না। এমনকি তাকে ছাড়া গত বছর রাশিয়া বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা কোয়ালিফাই করতে পারত কিনা সন্দেহ। এবারও কোপা আমেরিকায় আর্জেন্টিনার বড় ভরসা তিনিই। আরও একবার তার সামনে শিরোপার জন্য লড়াই। এবার কি তার আন্তর্জাতিক শিরোপার খরা কাটবে?