কমলগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের ধলাই নদীতে বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বাঁধের পুরনো ভাঙ্গন দিয়ে পানি বেরিয়ে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। বন্যার পানিতে পানিবন্দি হয়েছেন প্রায় ৫০ পরিবার। আদমপুর ইউনিয়নের পশ্চিম ঘোড়ামারা গ্রামে কয়েক বছর ধরে বাঁধ ভাঙ্গা থাকায় এই অবস্থা দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ধলাই নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ঘোড়ামারা গ্রাম এলাকায় বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের পুরাতন একটি ভাঙ্গন দিয়ে পানি বের হয়ে প্লাবিত হওয়ায় ঘোড়ামারা ও নাজাতকোনা গ্রামের ৫০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ফলে গ্রামের আব্দুল ওয়াহিদ, নুরুজ্জামান মিয়া, তমিজ উদ্দীন, রমিজ উদ্দীন, মন্নাফ মিয়া, জমশেদ মিয়া, মর্জিনা বিবি, আবেদা বেগম, আব্দুল গফুর, সমেদ মিয়া, ওয়েছ মিয়া, হেলাল উদ্দীন, সাজেদা বেগম, মাজিদা বেগমের ঘরগুলো নদী ভাঙ্গনের কবলে যাচ্ছে।
উপজেলার পশ্চিম ঘোড়ামারা গ্রামের হোসেন আলীর মেয়ে কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী রওশন আরা বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ধলাই নদীর ভাঙ্গনে আমরা গ্রামের পনেরো পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছি। নদীর বাঁধ মেরামত না হওয়ায় গ্রোতের পানি থাকার একমাত্র ঘরটি নদী গিলে নিয়েছে। এখন আমাদের থাকার মতো স্থায়ী জায়গা নেই। আমাদের অসহায়ত্ব দেখার মতোও কেউ নেই। কোথায় যাবো, কোথায় থাকবো, কি খাবো কেউ খবর নেয় না।” নদীর গ্রোতে হোসেন আলীরসহ গ্রামের পনেরটি ঘর নদীভাঙ্গনে রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ। হোসেন আলীর পাকা ঘরের অর্ধেক অংশ নদীতে চলে গেছে। ঘরের অবশিষ্ট অংশে বাঁশের বেড়া দিয়ে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
কমলগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক জানান, আমি এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখবো এবং এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলেছি।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, বাঁধ মেরামতের জন্য জন্য যে প্রকল্প নেয়া হয় সেখানে স্থানীয়দের আপত্তির কারণে ঠিকাদার কাজ করতে পারেনি। পরে বাধ্য হয়ে ঠিকাদার চলে আসেন। বর্তমানেও যদি জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয়দের সহযোগিতা পাওয়া যায় এবং ঘরগুলো সরানো হয় তাহলে কাজ করা সম্ভব হবে।