বিমান দুর্ঘটনা রোধে পদক্ষেপ

25

গত বুধবার সন্ধ্যায় দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার ভেতর মিয়ানমারের ইয়াংগুনে অবতরণের সময় বাংলাদেশ বিমানের একটি উড়োজাহাজ রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে। স্বস্তির বিষয় হলো এই দুর্ঘটনায় একজনেরও প্রাণহানি ঘটেনি। কমবেশি আহত হয়েছেন বেশ ক’জন যাত্রী। তবে কেউই গুরুতর আহত নন। বিমানের চালকও আহত হয়েছেন। রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ার ঘটনায় অনেক সময় উড়োজাহাজে আগুন লেগে যায়। সৌভাগ্যবশত এক্ষেত্রে এমনটা ঘটেনি। অগ্নিকবলিত হলে বড় বিপদ হতে পারত। তবে উড়োজাহাজের বডি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিমানটি ছিল ড্যাশ-এইট মডেলের। দুর্ঘটনা দুর্ঘটনাই। তার পেছনে নিশ্চয়ই কিছু কারণ থাকে। প্রাথমিকভাবে এটা স্পষ্ট যে, বৈরী প্রাকৃতিক পরিবেশেই বিমানটিকে অবতরণ করানো হয়। বেশ ক’জন বিদেশী নাগরিকও ছিলেন ওই বিমানের যাত্রী। তারা যে সুস্থ আছেন সেটিও আমাদের জন্য ভাললাগার। বিমানটিতে মোট ৩৩ জন আরোহী ছিলেন বলে বিমান এয়ারলাইন্স জানিয়েছে। তাদের মধ্যে ছিলেন চারজন ক্রু এবং বাকি ২৯ জন যাত্রী।
গত বছর নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশের একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে কমপক্ষে ৪৯ জন নিহত হয়েছিলেন, যাদের মধ্যে ছিলেন ২৫ জন বাংলাদেশী। বাংলাদেশের এত বড় বিমান দুর্ঘটনা সাম্প্রতিককালে ঘটেনি। সাধারণত বাণিজ্যিকভাবে যেসব বিমান চলে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সেগুলো রানওয়েতে নামানো হয় উড্ডয়নের জন্য। অনেক কারণেই ঘটতে পারে বিমান দুর্ঘটনা বা ক্রাশের ঘটনা। বিমান চালকের ভুল সিদ্ধান্ত, বৈরী আবহাওয়া, কন্ট্রোল সার্ভিস রুমের ভুল সিদ্ধান্ত, যান্ত্রিক ত্রুটি- এসব কারণে বেশিরভাগ সময় বিমান ক্র্যাশ বা দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।
ইয়াংগুনে বাংলাদেশ বিমানের দুর্ঘটনা তদন্তে ৬ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দুর্ঘটনা ঘটার পর বিমান কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে স্বল্পতম সময়ের ভেতরেই। একটি উড়োজাহাজও পাঠানো হয়েছিল বিমানের ক্রুদের সঙ্গে স্বেচ্ছায় দেশে প্রত্যাবর্তনকারী যাত্রীদের ফিরিয়ে আনার জন্য। তবে হাসপাতালের ছাড়পত্র না পাওয়ায় চিকিৎসারত যাত্রীদের দেশে ফেরানো সম্ভব হয়নি। পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে বিমান দুর্ঘটনার পরপরই এ নিয়ে মানুষ কৌতূহল প্রকাশ করে। নানা কথার ফুলঝুরিও ছুটতে থাকে। মন্দ লোকেরা এই সুযোগটিই গ্রহণ করে থাকেন ফলে গুজব ডালাপালা মেলে। এটি অনাকাক্সিক্ষত। আমরা আশা করতে পারি বিমান কর্তৃপক্ষ করণীয় সব কিছুই করবেন। পরম করুণাময়ের দরবারে হাজার শোকর যে, এরকম একটি বড় র্দুঘটনার পরও সবার প্রাণ রক্ষা পেয়েছে। এটা অনস্বীকার্য যে, দেশের বিমান চালকেরা দক্ষতার পরিচয় দিয়ে আসছেন। তাদের ওপর আস্থা রয়েছে যাত্রীদের। উড্ডয়ন বহরে থাকা বিমান সম্পর্কে যাতে আগামীতে কোন প্রশ্ন না উঠতে পারে সে ব্যাপারে বিমান কর্তৃপক্ষ আরও সতর্ক হবেন- এটাই প্রত্যাশা।