জগন্নাথপুরে জিনের বাদশা সহ গ্রেফতার ৩, ১৫শ কোটি টাকা দেয়ার কথা বলে সাড়ে ৩ কোটি আত্মসাৎ

33
জগন্নাথপুরে পুলিশের হাতে জিনের বাদশা সহ গ্রেফতারকৃতরা।

মো. শাহজাহান মিয়া জগন্নাথপুর থেকে :
জগন্নাথপুরে চাঞ্চল্যকর জিনের বাদশা সহ ৩ আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জিনের মাধ্যমে ১৫শ কোটি টাকা দিবে বলে সাড়ে ৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ মামলায় তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে জিনের বাদশা দাবিদার হাফিজ কামরুল ইসলাম (২৬), তার পিতা আবদুল কাদির (৬০) ও তার মা রানু বেগম (৫০)। তাদের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া থানার পুট বটতল গ্রামে। তারা দীর্ঘদিন ধরে জগন্নাথপুর উপজেলার সৈয়দপুর-শাহারপাড়া ইউনিয়নের সৈয়দপুর ইশানকোনা গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী রহমত আলীর বাড়িতে ভাড়াটে বাসায় বসবাস করে মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছিল।
জানা গেছে, জগন্নাথপুর উপজেলার পাটলি ইউনিয়নের মকরমপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত মাস্টার আবদুল খালিকের ছেলে জগন্নাথপুর বাজারের ব্যবসায়ী মাওলানা ইমরান আহমদ জিনের মাধ্যমে ১৫শ কোটি টাকা পাওয়ার লোভে সাড়ে ৩ কোটি টাকা খুইয়ে এখন দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বিগত ২০১৮ সালে জগন্নাথপুর উপজেলার সৈয়দপুর গোয়ালগাঁও গ্রামের হাফিজ এনামুল হাসানের মাধ্যমে জিনের বাদশা হাফিজ কামরুল ইসলাম চক্রের সাথে পরিচয় হয় ক্ষতিগ্রস্ত মাওলানা ইমরান আহমদের। এক পর্যায়ে জিনের বাদশা দাবিদার হাফিজ কামরুল ইসলাম চক্রের প্রলোভনে পড়ে যান মাওলানা ইমরান আহমদ। তাঁকে বলা হয়, শিরণীর জন্য নগদ সাড়ে ৩ কোটি টাকা দেয়া হলে জিন তাকে ১৫শ কোটি টাকা দিবে। এতে ১৫শ কোটি টাকা পাওয়ার লোভে মাওলানা ইমরান আহমদ জিনের বাদশাকে কয়েক দফায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা প্রদান করেন। তখন শর্ত সাপেক্ষে মাওলানা ইমরান আহমদকে টাকা ভর্তি বলে ৫টি তালাবদ্ধ বড় ড্রাম ও ২ টি বড় টাংক দেয়া হয়। পরে এসব ড্রাম ও টাংকের তালা ভেঙে দেখা যায় এতে টাকার পরিবর্তে কাগজ, ময়লা কাপড়-চোপর ও খালি বস্তা রয়েছে। এদিকে-এ ঘটনার পর জিনের বাদশা চক্র জগন্নাথপুর থেকে পালিয়ে যায়।
অবশেষে চলতি ২০১৯ সালের ২৩ এপ্রিল প্রতারণার শিকার মাওলানা ইমরান আহমদ বাদী হয়ে জিনের বাদশা হাফিজ কামরুল ইসলাম সহ তার পরিবারের ৫ জনকে আসামী করে জগন্নাথপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর থানার এসআই হাবিবুর রহমান পিপিএম এর নেতৃত্বে পুলিশ দল নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া থানার পুট বটতল গ্রাম এলাকায় অভিযান চালিয়ে জিনের বাদশা হাফিজ কামরুল ইসলাম ও তার মা-বাবাকে গ্রেফতার করেন। সেই সাথে মামলার বাদী মাওলানা ইমরান আহমদের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে তালাবদ্ধ বড় ৫ টি তেলের ড্রাম ও ২টি বড় টাংক। এতে টাকা থাকার কথা থাকলেও আছে বিভিন্ন কাগজ, ময়লা কাপড়-চোপড় ও খালি প্লাস্টিকের বস্তা। এছাড়া আসামীদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এসব তেলের ড্রাম ও টাংকের তালার চাবি। গ্রেফতারকৃতদের ২৬ এপ্রিল শুক্রবার সুনামগঞ্জ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। জগন্নাথপুর থানার ওসি মোহাম্মদ হারুনুর রশীদ চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।