আজ সৌভাগ্য রজনী

24

আজ পবিত্র শবে বরাত। শবে বরাত কথার অর্থ সৌভাগ্য রজনী। পবিত্র কোরআন শরীফে এই রাতকে বলা হয়েছে ‘লায়লাতুল মুবারাকাতুন’, অর্থাৎ শুভরজনী বা মঙ্গলময় রাত। প্রতিবছর শাবান মাসের ১৪ তারিখ রাতই হচ্ছে এই সৌভাগ্য রজনী। রাসূলে করিম (সা) বলেন, এই পবিত্র রাতে সমগ্র দুনিয়াবাসীর জন্য আল্লাহ্ পাকের করুণা বর্ষিত হয়। শবে বরাতের পবিত্র রাতেই মানবজাতির জন্য লেখা হয় আমলনামা। যারা পরবর্তী বছর জন্মগ্রহণ ও মৃত্যুবরণ করবেন তাঁদের তালিকাভুক্ত করা হয় এ রাতে। আর এ কারণেই এ রাতকে বলা হয় ভাগ্য নির্ধারণের রজনী। পবিত্র এ রাতে কৃত অপরাধের জন্য অনুতপ্ত হয়ে অনুশোচনার সঙ্গে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলে তিনি ক্ষমা করে থাকেন। যারা এই পবিত্র রাতে বিনিদ্র থেকে একাগ্রচিত্তে পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালার এবাদত-বন্দেগি করবেন তাঁদের সকল গুনাহর খাতা আল্লাহ মাফ করবেন। কবুল করবেন তাঁদের আন্তরিক প্রার্থনা এবং আশা-আকাক্সক্ষা। এ রাতের বরকত ও ফজিলতের ওপর গুরুত্বারোপ করে সিদ্দিকে আকবর, মুসলিম জাহানের প্রথম খলিফা হযরত আবুবকর সিদ্দিক (রা.) এবং পরবর্তীকালের সাধক, আলেম ও অলি-আল্লাহগণ বিশদ বিশ্লেষণমূলক অমূল্য বক্তব্য রেখেছেন। এই পবিত্র রাতে রাসূলে করিম (সা.) স্বয়ং গভীর এবাদতে মশগুল থাকতেন। তিনি এই রজনীর মহিমা বর্ণনা করে বলেছেন, লায়লাতুল বরাতের রাতের প্রথম ভাগে স্বয়ং আল্লাহ পাক প্রথম আসমানে অবতীর্ণ হয়ে বলেন, ‘কে আছ আমার প্রিয় বান্দা, যারা কৃতকর্মের জন্য ক্ষমাপ্রার্থী, সুখ-শান্তির প্রত্যাশী এবং আখেরাতের মঙ্গল কামনাকারী? তোমরা এই ফজিলতের রাতে আমার কাছে ফরিয়াদ কর। আমি নিঃসন্দেহে তোমাদের ফরিয়াদ কবুল করে নেব।’
হাদিস শরীফে পবিত্র শবে বরাতের ফজিলত ও মর্তবা সম্পর্কে অসংখ্য বর্ণনা আছে। পবিত্র এ রাতে নফল নামাজ আদায় ও কোরআন তেলাওয়াত ছাড়াও জিকির-আসকার, মোনাজাত ও গরিব-মিসকিনদের মাঝে দান-খয়রাত ইত্যাদির মধ্যে রয়েছে অশেষ সওয়াব ও বরকত।
আমাদের দেশে এখনও রয়েছে নানা ধরনের সমস্যা। তবে এ কথাও সত্যি যে, দেশের অব্যাহত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিতে বর্তমান সরকারের আমলে মানুষের দারিদ্র্য কমেছে। ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে সর্বস্তরের মানুষের। চাল-ডাল-তেল-নুন-আটা-ময়দা-সুজি-শাকসবজি-মাছ-মাংস-ডিম-দুধসহ নিত্যপণ্যের দাম রয়েছে সহনীয় পর্যায়ে। মূল্যস্ফীতিও রয়েছে নিয়ন্ত্রণে। সুতরাং সার্বিকভাবে মানুষ সুখে আছে বলা যায়। আজ এই পবিত্র রাতে আমাদের সবাইকে পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালার কাছে সব সঙ্কট থেকে মুক্তি এবং শান্তি, কল্যাণ ও সমৃদ্ধির জন্য মোনাজাত করতে হবে। এ রাতের ভাবগাম্ভীর্য নষ্ট বা ক্ষুণ্ণ করার, ইবাদত-বন্দেগিতে ব্যাঘাত ঘটানোর মতো কোন কাজ আমাদের করা উচিত নয়। এই পবিত্র রহমতের রাত সকলের জীবনে অর্থবহ হয়ে উঠুক, মানবিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং ন্যায়নীতিতে উদ্ভাসিত হয়ে উঠুক সবার জীবন। সবার জীবন সুখী, সমৃদ্ধ, সুন্দর ও মঙ্গলময় হোক!