স্টাফ রিপোর্টার :
অবশেষে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি) কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী মো. ওয়াসিম আফনান (২১) হত্যার অভিযোগে ৩ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। গতকাল সোমবার সিকৃবির প্রক্টর অধ্যাপক ড. মৃত্যুঞ্জয় কুণ্ডু বাদী হয়ে মৌলভীবাজার সদর থানায় এই মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-২২)। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়নি।
মামলায় আসামী গাড়ির চালক মো. জুয়েল (২৬), তার সহকারী (হেলপার) মাসুক মিয়া (৩৮) ও সুপারভাইজার শেফুল মিয়াকে (৩৫) আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে সুপারভাইজার এখনও পালতক রয়েছে। এজাহারে ভাড়া নিয়ে বাকবিতণ্ডার জেরে ওয়াসিমকে বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে হত্যার অভিযোগ আনা হয়। এজাহার দায়েরকালে ঘটনার সময় ওয়াসিমের সাথে ওই বাসে থাকা সিকৃবির ১০ শিক্ষার্থীও থানায় উপস্থিত ছিলেন।
মৌলভীবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুহেল আহাম্মদ মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ইতোমধ্যে ২ আসামিকে আটক করা হয়েছে। তাদের এই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। বাসটিও জব্দ করা হয়েছে। সুপারভাইজারকেও গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
সকালে সিকৃবির প্রক্টর অধ্যাপক ড. মৃত্যুঞ্জয় কুণ্ডু বলেন, আমাদের ছাত্র ওয়াসিমকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এটি কোন দুর্ঘটনা নয়, ইচ্ছাকৃত হত্যাকাণ্ড। ওয়াসিমের পরিবার শোকে মুহ্যমান, তাই তারা হয়তো কোন মামলা করতে পারেনি। কিন্তু ওয়াসিম হত্যার বিচারের দাবিতে আমরা হত্যা মামলা করেছি।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ১০ ছাত্র মৌলভীবাজার সদর থানায় মামলা দায়েরের সময় উপস্থিত ছিলো।
এদিকে ওয়াসিমকে বাসচাপা দিয়ে হত্যার প্রতিবাদে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করেছেন শিক্ষার্থীরা। রবিবার সিকৃবির শিক্ষার্থীরা ওয়াসিম হত্যার দাবিতে নগরীর চৌহাট্টা পয়েন্টে ও দক্ষিণ সুরমা চন্ডিপুলে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। পরে ৫ দফা দাবি জানিয়ে ৩দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে অবরোধ তুলে নেন তারা। তাছাড়া শিক্ষার্থীরা ২৭ মার্চ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস বর্জন ও পরীক্ষা স্থগিতেরও দাবি জানিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, সিকৃবি কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের আন্দোলন মেনে নিয়ে সকল ক্লাস বর্জন এবং পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা দিয়েছে।
এ বিষয়ে সিকৃবি বায়োটেকনোলজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের সহকারী অধ্যাপক শরীফুল ইসলাম জানান, আমাদের ছাত্র ওয়াসিম হত্যার প্রতিবাদে আমাদের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে আমরা ২৭ মার্চ পর্যন্ত সকল ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত করেছি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করিছি। আমরা চাই আমাদের ছাত্র ওয়াসিম হত্যার বিচার হোক।
