কাজিরবাজার ডেস্ক :
মালয়েশিয়ায় চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে শুরু করে ২১ মার্চ পর্যন্ত দেশটির বিভিন্ন জায়গায় ৪ হাজার ৪৫৪টি অভিযানে আটক করা হয় ৬৩ হাজার ২৮৬ প্রবাসীকে।
এদের মধ্যে ৩ হাজার ১৬৪ বাংলাদেশি রয়েছেন বলে দেশটির অভিবাসন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। ২২ মার্চ দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ এ বিষয়ে নোটিশ প্রকাশ করেছে।
কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে আটকদের মধ্য থেকে গ্রেফতার করা হয় বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের ১৩ হাজার ৬৭৭ জন অবৈধ অভিবাসীকে।
এ ছাড়া অবৈধ অভিবাসী রাখার অপরাধে গ্রেফতার করা হয় ৩১১ জন স্থানীয় মালিককে। আটকদের মধ্যে ইন্দোনেশিয়ান ৪ হাজার ৭২৯, ফিলিপাইন ১ হাজার ৩৬২, মিয়ানমার ১ হাজার ৩৫৭ জন। এ ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ও ভিয়েতনামের নাগরিকরাও আটক হন।
ইমিগ্রেশন রেগুলেশন ৬ (১) সি ১৯৫৯, ১৫ (১) ৩৯ (বি) ধারায় জিজ্ঞাসাবাদ করে কাগজপত্র থাকলে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। অন্যথায় জেল-জরিমানা করা হচ্ছে বলে জানান ইমিগ্রেশন মহাপরিচালক দাতুক ইন্দিরা খায়রুল দাজাইমি। দেশটির অভিবাসন বিভাগের ঘোষণা অনুযায়ী-মালয়েশিয়ায় অবৈধ বিদেশিকে কোনোভাবেই অবস্থান করতে দেয়া হবে না।
এ বিষয়ে মালয়েশিয়ার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘দেশটির সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রাখতে এবং আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার দোহাই দিয়ে তারা চলমান অভিযান অব্যাহত রেখেছেন।’ অভিবাসন বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, ‘অবৈধ অনুপ্রবেশ ও দেশটিতে অবৈধদের বসবাস ঠেকাতে বিভাগটি কাজ করছে এবং দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার তাগিদে কোনো পক্ষের সঙ্গে আপস করা হবে না।’
এ ছাড়া গত বছর ৭২ হাজার ৩’শ ৬১ জনকে পাসপোর্ট ও ভিসা জটিলতার কারণে অভিবাসন আইন ১৯৫৯/৬৩ এর ৮ (৩) ধারায় পাঁচ বছরের জন্য মালয়েশিয়া প্রবেশে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
প্রতিদিনই অবৈধ অবস্থানের অভিযোগ এনে শ্রমিক ধরপাকড় চলছে। কুয়ালালামপুরের বাইরেও যেসব এলাকায় বাংলাদেশিদের অবস্থান বেশি ওইসব এলাকায় প্রতিদিনই চলছে অভিযান।
দেশটির ১৩টি প্রদেশজুড়ে অভিযান অব্যাহত থাকায় সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছেন অবৈধ শ্রমিকরাই। মালয়েশিয়ায় প্রায় ৬ লাখের বেশি শ্রমিক বৈধভাবে কাজ করছেন। কাগজপত্রের মেয়াদ শেষ, এক কোম্পানির ভিসা নিয়ে আরেক কোম্পানিতে কাজসহ নানাভাবে আরও অন্তত সাড়ে ৩ লাখ বাংলাদেশি বসবাস করছেন মালয়েশিয়ার বিভিন্ন এলাকায়।
মালয়েশিয়া প্রবাসী কমিউনিটি নেতারা বলছেন, ‘ভয়ে ভয়ে দিন-কাটানো এই অবৈধ বাংলাদেশিরা অনেকেই অভিযোগ করছেন, কথিত এজেন্টদের হাতে প্রতারিত হওয়াতেই তারা আজ অবধি দেশটির বৈধ শ্রমিকের স্বীকৃতি পাননি। বহুদিন মালয়েশিয়ায় থাকার পরও যাদের বৈধ কাগজপত্র নেই, এই ধরপাকড় অভিযান নিয়ে তাদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক বিরাজ করছে।’