তারুণ্য বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি – ড. জাফর ইকবাল

40

একাত্তরে তারুণ্যের শক্তিতে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন জনপ্রিয় লেখক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। তিনি বলেছেন, তারুণ্য বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি। একাত্তরে পৃথিবীর শক্তিশালী অনেক দেশ আমাদের বিপক্ষে ছিল। তারপরও এদেশের তরুণেরা অসীম সাহসিকতার সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন বলেই আমরা বাংলাদেশ পেয়েছি। গতকাল রবিবার বিকেলে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুবীক্ষণ তারুণ্যের জয়োৎসবের সূচনা পর্বে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ড. জাফর ইকবাল একথা বলেন।
সিলেটের অন্যতম সামাজিক সংগঠন অনুবীক্ষণের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে সিলেটের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনকে সম্মাণনা প্রদান করা হয়। এই আয়োজনের দ্বিতীয় পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বিভিন্ন সংগঠনের হাতে অণুবীক্ষণ সম্মাননা তুলে দেন। জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে এই অনুষ্ঠান শুরু হয়। দুই পর্বের মাঝে অনুবীক্ষণ পরিচালিত মুন্ডা স্কুলের শিক্ষার্থীদের নৃত্য এবং সিলেটের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের কর্মকান্ডের উপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শণ করা হয়।
অনুবীক্ষণের সভাপতি শফিকুর রহমান হিমুর সভাপতিত্বে সূচনা পর্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) ফয়সল মাহমুদ, সিলেট সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ নাছিমা খান ও গ্রীণ ডিজেবল ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মো. বায়েজিদ খান। সারিয়া মুসকান ও সাইবান বিনতে সাহাজের যৌথ সঞ্চালনায় এই পর্বে স্বাগত বক্তৃতা করেন অনুবীক্ষণ তারুণ্যের জয়োৎসবের আহবায়ক জহুরুল ইসলাম শাহরিয়া। এ সময় উৎসব উপলক্ষে প্রকাশিত স্মরণিকার মোড়ক উম্মোচন করেন ড. জাফর ইকবালসহ অতিথিরা।
রাতের পর্বের শুরুতে অণুবীক্ষণের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মেয়র আরিফ বলেন, তরুণেরা চাইলে সমাজ বদলে দিতে পারে। তিনি বলেন, সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করলে দেশ ও সমাজ এগিয়ে যাবে। তিনি নগরীর উন্নয়নে সবাইকে সহযোগিতার আহবান জানান। অনুবীক্ষণের সাধারণ সম্পাদক মো. বদরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এই পর্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন দৈনিক সিলেটের ডাকের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ওয়াহিদুর রহমান ওয়াহিদ ও সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম। যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন করবী নুসরাত ও আতিফ রায়হান।
সূচনা পর্বে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ড. জাফর ইকবাল বলেন, বাংলাদেশে ছেলে ও মেয়েরা সমানভাবে কাজ করছে। জেএসসি, এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষায় দেখা যায় ছেলে ও মেয়েদের সংখ্যা সমান। কখনও কখনও ছেলেদের চেয়েও ভালো করে মেয়েরা। তবে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এসে সংখ্যায় মেয়েরা পিছিয়ে পড়ে। এজন্য মেয়েদের বাবা-মায়েরা দায়ী। তারা মনে করেন, মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দিতে পারলেই রক্ষা। আমি মেয়েদের সবসময় বলি, পড়াশোনা শেষ করে প্রতিষ্ঠিত হয়ে বিয়ে করবে।
ড. জাফর ইকবাল পাকিস্তানের উদাহরণ দিয়ে বলেন, সেখানে মেয়েদের পড়াশোনা করতে দেওয়া হয় না। মালালা নামের একটি মেয়ে পড়তে চেয়েছিল বলে তার মাথায় গুলি করা হয়। ক্ষুদ্র জাতি গোষ্ঠী মুন্ডাদের শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করায় অণুবীক্ষণের প্রশংসা করে তিনি বলেন, এখানে নানা জাতিগোষ্ঠির মানুষ রয়েছে বলে এই দেশ অনেক আকর্ষণীয়। এই জাতিগোষ্ঠিকে সহায়তায় এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, টাকা দিয়ে সব কাজ হয় না। বড় কাজ করতে হলে স্বেচ্ছাসেবক প্রয়োজন। বড় বড় প্রতিষ্ঠানের পেছনে অনেক স্বেচ্ছাসেবকের শ্রম থাকে। বিজ্ঞপ্তি