একাদশ জাতীয় সংসদে প্রথম বিল পাস

37

কাজিরবাজার ডেস্ক :
একাদশ জাতীয় সংসদে পাস হওয়া প্রথম বিলটি হচ্ছে ‘ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) বিল-২০১৯’। পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন সংসদ অধিবেশনে বিলটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। পাস হওয়া বিলে অনুমোদিত ইটভাটা ছাড়া ইট প্রস্তুত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আর পরিবেশ সুরক্ষার স্বার্থে অটোব্রিকস উৎসাহিত করার বিধান রাখা হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে বিলটি পাসের আগে জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব দেন বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যরা। তবে তাদের সেই প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। ওই প্রস্তাব উত্থাপনকালে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ফসলি জমি নষ্ট করে যত্রতত্র ইটভাটা স্থাপন করা হচ্ছে। যে কারণে পরিবেশ মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। অথচ এধরণের ইটভাটা বন্ধ করে সারাদেশে অটোব্রিকস স্থাপন করা গেলে পরিবেশের ক্ষতি অনেকটা কমানো সম্ভব হবে।
জবাবে মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, নতুন আইনে অটোব্রিকসকে উৎসাহিত করার বিধান রাখা হয়েছে। কারণ একটি অটোব্রিকস-এ একদিনে এক লক্ষ ইট উৎপাদন করা সম্ভব। আর বছরের ৩৬৫ দিনই ওই ভাটায় ইট উৎপাদন করা যায়। আর এটা করা গেলে সারাদেশে এতো ইটভাটার প্রয়োজন হবে না। নতুন আইন পরিবেশ সুরক্ষায় ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এর আগে গত ১০ ফেব্রুয়ারি কৃষির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ‘টপ সয়েল’ রক্ষাসহ ইটভাটাজনিত পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ওই বিলটি জাতীয় সংসদে বিলটি উত্থাপন করা হয়। এরপর তা অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি কমিটির বৈঠকে বিলটি যাচাই-বাছাই শেষে বিলটি পাসের সুপারিশ করে সংসদে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পাস হওয়া বিলের বিধান লংঘনজনিত অপরাধের জন্য কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। ওই সকল বিধি-বিধান লংঘনজনিত অপরাধে সর্বোচ্চ দুই বছর কারাদণ্ড ও ২০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রাখা হয়েছে।
বিলে বিদ্যমান আইনের কয়েকটি ধারায় প্রয়োজনীয় সংশোধনী এবং কয়েকটি বিধান বিলুপ্তির প্রস্তাব করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে লাইসেন্স এবং অনুমোদিত ইটভাটা ছাড়া ইট প্রস্তুত নিষিদ্ধের বিধান রাখা হয়েছে। আর ইটভাটার ক্ষেত্রে সরকার গেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে যে কোনও ইটভাটায় ছিদ্রযুক্ত ইট প্রস্তুতের নির্দেশনা জারির বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া ইটভাটা স্থাপনে বিধি-নিষেধ জারির বিধানেরও উল্লেখ করা হয়েছে।
বিলে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে বিদ্যমান আইনের কয়েকটি ধারা বিলুপ্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি সময় সময় জারি করা রপ্তানি নীতি অনুসরণ ছাড়া ইট রপ্তানি করা যাবে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া বিলে লাইসেন্স বাতিল বা স্থগিতের প্রস্তাব করা হয়।