ক্রীড়াঙ্গন রিপোর্ট :
ব্রাজিলের ফুটবল ইতিহাসে পেলে যে সবার শীর্ষে আছে তা আর বলার কিছু নেই। তবে এরপরের অবস্থানে কে? ভাবছেন রোনালদো নাজারিও, রিভালদো বা রোনালদিনহো, না। দেশটির ফুটবল বিষয়ক একটি ম্যাগাজিন দিয়েছে বর্তমান সময়ের অন্যতম তারকা নেইমারের নাম! আর তাতেই শুরু হয়েছে সমালোচনা।
ব্যাপারটি সহজভাবে নিতে পারেননি ক্লাব ফুটবলের অন্যতম সেরা কোচ হোসে মরিনহো। তিনি সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন, পেলের সঙ্গে নেইমারের তুলনা করতে হলে আগে তাকে ব্রাজিলের হয়ে জিততে হবে।
তারকা এ ফরোয়ার্ড ঘর ছেড়ে ইউরোপে এসে অবশ্য সমর্থকদের মন অনেক আগেই জয় করেছেন। বার্সেলোনার হয়ে চূড়ান্ত সফলতার পর বর্তমানে প্যারিস সেন্ট জার্মেইর হয়ে লিগ ওয়ানেও দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও ব্রাজিলের ক্লাব সান্তোসে খেলাকালীন পেলের বেশকয়েকটি রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছিলেন নেইমার।
তবে ঘরোয়া ফুটবলের নেইমার যতটা না সফল, দেশের জার্সিতে তাকে ব্যর্থই বলা চলে। যদিও অলিম্পিকে ‘গোল্ড মেডেল’ ও কনফেডারেশন কাপ জয় তাকে উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোপা আমেরিকা ও বিশ্বকাপ মঞ্চে নিজের সাফল্য প্রমাণ করতে পারেননি।
অন্যদিকে শ্রোতের বিপরীতে ২০১৪ বিশ্বকাপে আয়োজক দেশ হয়েও সেমিফাইনালে জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিল সেলেকাওরা। ম্যাচটিতে অবশ্য ইনজুরির কারণে ছিলেন না নেইমার। তবে তারকা এ ফুটবলার থাকার পরও ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে বেলজিয়ামের কাছে ২-১ গোলে হেরে বিদায় নেয় পাঁচবারের বিশ্বজয়ীরা।
রাশিয়ায় অবশ্য নেইমারকে নিয়ে বিস্তর সমালোচনা হয়। সেবার মাঠের খেলা থেকে তিনি নাকি নাটুকেপনাতেই বেশি ব্যস্ত ছিলেন। তিনি ফাউলের শিকার হয়ে মাঠে পড়ে যেতেন, এমন অনেক অভিযোগ ওঠে।
যাই হোক ‘প্লাসার’ নামের ব্রাজিলের ফুটবল ম্যাগাজিন সম্প্রতি নেইমারকে দেশটির কিংবদন্তি পেলের পরেই অবস্থান দিয়েছে। ফলে রোনালদো, রিভালদো, জিকো বা রোনালদিনহোকে উপেক্ষা করা হয়েছে বলে ব্যাপক সমালোচনা হয়।
এই বিতর্কে মুখ খুললেন আরেক বিতর্কিত মরিনহো। তার মতে ক্লাব রেকর্ড চিন্তা করলে নেইমার বিশ্বের প্রতিভাবানদের মধ্যে সেরা। তবে আন্তর্জাতিক ফুটবল বিবেচনা করলে সে পেলের থেকে অনেক পিছিয়ে রয়েছে।
এক সাকাক্ষাৎকারে পর্তুগিজ এই তারকা বলেন, ‘নেইমারের অসাধারণ দক্ষতা নিঃসন্দেহে সবাই মেনে নেবে। সে ইউরোপে এসেছে এবং খুব দ্রুতই সফলতা পায়।’
‘তবে আমি মনে করি বিশ্ব ফুটবলের সেরা হতে হলে কিছু ব্যাপার মাথায় রাখতে হয়, রোনালদো ও রিভালদো দুর্দান্ত দুই ফুটবলার, আমি আরও অনেকের নাম স্মরণ করতে পারি। তারাও ইউরোপে এসে অনেক কিছু অর্জন করেছে, তবে পাশাপাশি তারা জাতীয় দলের হয়েও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অবদান রেখেছে।’
ইন্টার মিলান, রিয়াল মাদ্রিদ ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাবেক এই কোচ আরও বলেন, ‘নেইমার ইউরোপের শীর্ষ দলগুলোর হয়ে লড়াই করে যাবে। তবে দেশের হয়ে তার অর্জনটা হবে স্বপ্নের মতো।’
এদিকে এই গ্রীষ্মেই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ফের নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করার সুযোগ পাচ্ছেন নেইমার। যেখানে আগামী জুনে ব্রাজিল আয়োজন করছেন ২০১৯ কোপা আমেরিকার আসর। যদিও সম্প্রতি সময়ে ইনজুরি ভোগাচ্ছে তাকে। তবে টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই ফিট হয়ে মাঠে ফিরতে আশাবাদি তিনি।