কাজিরবাজার ডেস্ক :
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট কারচুপির অভিযোগে এবং নির্বাচিত প্রার্থীদের বিজয় চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছেন বিএনপির পরাজিত ৭০ জন প্রার্থী। এছাড়া জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের তিনজন এবং প্রোগ্রেসিভডেমোক্রেটিক পার্টির (পিডিপি) একজন প্রার্থীও মামলা করেছেন আদালতে।
গত মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি), বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) এবং বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এসব মামলা দায়ের করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন মামলাকারীদের অন্যতম আইনজীবী নিতাই রায় চৌধুরী, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী ও ব্যারিস্টার এ কে এম এহসানুর রহমান।
তারা বলেন, প্রত্যেক আবেদনকারী নিজ নির্বাচনি আসনের অন্য প্রার্থীদের বিবাদী করেছেন। আবেদনে বিবাদী বিজয়ী প্রার্থীদের সংসদ সদস্য পদ বাতিল চাওয়া হয়েছে। এছাড়া বাতিল চাওয়া হয়েছে প্রত্যেক সংসদীয় আসনের নির্বাচনও।
ফরিদপুর-২ আসন থেকে বিএনপির পরাজিত প্রার্থী দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ। তিনি বলেন, ‘আমিসহ সারাদেশ থেকেই বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা মামলা দায়ের করেছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের রাতেই যে ভোট কারচুপি হয়েছে, অবিশ্বাস্যভাবে মানুষের ভোটাধিকার ধ্বংস করা হয়েছে, তার তথ্য-প্রমাণসহই আমরা আদালতে গেছি।’
হাইকোর্টে মামলা দায়েরকারীদের মধ্যে রয়েছেন, সুব্রত চৌধুরী (ঢাকা-৬), মফিজুল ইসলাম খান কামাল (মানিকগঞ্জ-৩), মেজর জেনারেল আ আ ম স আমিন (কুড়িগ্রাম-২), আব্দুল মোমেন চৌধুরী (চট্টগ্রাম-১৫), সাইফুল ইসলাম ফিরোজ (ঝিনাইদাহ-৪), আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী (টাঙ্গাইল-৭), জয়নুল আবেদীন (বরিশাল-৩), রুমানা মাহমুদ (সিরাজগঞ্জ-২), জহির উদ্দিন স্বপন (বরিশাল-১), শাহ রিয়াজুল হান্নান (গাজিপুর-৪), নাসের রহমান (মৌলভিবাজার-৩), আব্দুল হাই (মুন্সিগঞ্জ-৩), হাফিজ ইব্রাহিম (ভোলা-২), রুহুল আমিন দুলাল (পিরোজপুর-৩), ডা. দেওয়ান মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন (ঢাকা-১৯), হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (ভোলা-৩), তাজভীর উল আলম (কুড়িগ্রাম-৩), মো. সাইফুল ইসলাম (রংপুর-৬), মো. সাদেক রিয়াজ (দিনাজপুর-২), মোস্তফামহসীন মন্টু (ঢাকা-৭), নজরুল ইসলাম আজাদ (নারায়ণগঞ্জ-২), মইনুল ইসলাম খান শান্ত (মানিকগঞ্জ-২), ইরফান ইবনে আমান অমি (ঢাকা-২), নবিউল্লাহ নবী (ঢাকা-৫), আশরাফ উদ্দিন (নরসিংদী-৫), মো. আমিরুল ইসলাম খান (সিরাজগঞ্জ-৫), শহিদুল ইসলাম (টাঙ্গাইল-১), ফরহাদ হোসেন আজাদ (পঞ্চগড়-২), মো. হাসান রাজিব প্রধান (লালমনিরহাট-১), মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী (চট্টগ্রাম-১৬), মো. আখতারুজ্জামান মিয়া (দিনাজপুর-৪), মো. শাহজাহান মিয়া (চাঁপাইনবাবগঞ্চ-১), মিজানুর রহমান (সুনামগঞ্জ-৫), মো. জি কে গউছ (হবিগঞ্জ-৩), মজিবুর রহমান চৌধুরী (মৌলভিবাজার-৪), ফারুখ আলম সরকার (গাইবান্ধা-৫), শফি আহমেদ চৌধুরী (সিলেট-৩), মো. আনোয়ারুল হক (নেত্রকোনা-২), শাহ মো. ওয়ারেস আলী (জামালপুর-৫), নিতাই রায় চৌধুরী (মাগুরা-২), অনিন্দ্য ইসলাম অমিত (যশোর-৩), মো. আবু সুফিয়ান (চট্টগ্রাম-৮), মাসুদ অরুণ (মেহেরপুর-১), আমিন উররশিদ (কুমিল্লা-৬), ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দনি খোকন (নোয়াখালী-১), শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া (খাগড়াছড়ি), সাব্বির আহমদে (রংপুর-৩), মুন্সী রফিকুল আলম (ফেনী-১), জয়নাল আবদীন ফারুক (নোয়াখালী-২), সা চিং প্রো (বান্দরবান), শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক (চাঁদপুর-৩), আবুল খায়ের ভূঁইয়া (লক্ষ্মীপুর-২), জাকির হোসেন সরকার (কুষ্টিয়া-৩), রকিবুল ইসলাম (খুলনা-৩), শামাওবায়েদ ইসলাম (ফরিদপুর-২), আনিসুর রহমান (মাদারীপুর-৩), আজিজুল বারি হেলাল (খুলনা-৪), শাহ মো. আবু জাফর (ফরিদপুর-১), মো. শরিফুজ্জামান (চুয়াডাঙ্গা-১), হাবিবুল ইসলাম হাবিব (সাতক্ষীরা-১) ও আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়াম (রাজবাড়ী-১)।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ৯ ফেব্রুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে সারাদেশের ৬৪ জেলা থেকে হাইকোর্টের নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি। দলের স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্য মামলা না করার বিষয়ে অবস্থান নিলেও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তা আমলে নেননি। ওই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয়, চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সবগুলো জেলার প্রতিনিধিদের হাইকোর্টে মামলা করার।