মিয়ানমার সরকারের বৈরী মনোভাব এবং বিদ্রোহী দমনের নামে সেনাবাহিনীর জাতি নির্মূল অভিযানের কারণে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে পরবর্তী কয়েক মাসে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। মানবিক কারণে বাংলাদেশ তাদের আশ্রয় দিয়েছে।
সামগ্রিক বিবেচনায় রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন খুবই জরুরি। এ জন্য মিয়ানমার সরকারের ওপর আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক চাপ রয়েছে। বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় কূটনৈতিক তৎপরতাও অব্যাহত রেখেছে। নানামুখী তৎপরতার ফলে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে রাজি হয়, তবে তাদের আন্তরিকতা নিয়ে সব মহলের সন্দেহ রয়েছে। এরই মধ্যে প্রথম পর্যায়ের প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার কথা ছিল; কিন্তু তা হয়নি। মিয়ানমার সরকার রাখাইন রাজ্যে নিরাপদ পরিস্থিতি নিশ্চিত করতে পারেনি। অনিরাপত্তার বোধ রোহিঙ্গাদের মধ্যে এতই প্রবল যে তারা স্বদেশে ফেরার ভরসা পাচ্ছে না।
এমন পরিস্থিতির মধ্যে গত মঙ্গলবার হলিউড অভিনেত্রী ও জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) বিশেষ দূত অ্যাঞ্জেলিনা জোলি উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন। সফরে তিনি কক্সবাজার টেকনাফের চাকমারকুল রোহিঙ্গা শিবির ঘুরে দেখেন। তাঁর অভিমত বিশ্বের নির্যাতিত মানুষের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমরা। রাষ্ট্রহীন এক অবস্থায় বাস করছে তারা। মিয়ানমার সেনাবাহিনী স্বদেশি সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যা চালিয়েছে। নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের সহায়তার জন্য বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসতে হবে। জোলি বলেন, বাংলাদেশে এত মানুষকে আশ্রয় দেওয়া কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তাই তাদের ভরণ-পোষণ ও অন্যান্য বিষয়ে সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক মহলকে এগিয়ে আসতে হবে। মিয়ানমারকে অবশ্যই তাদের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দিতে এবং দেশে ফিরিয়ে নিতে হবে। প্রত্যাবাসন শুরুর আগে রোহিঙ্গা এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।