সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন ॥ এসএসসি পরীক্ষা শুরু কাল- প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোন আশংকা নেই- শিক্ষামন্ত্রী

83
প্রতিকী ছবি।

কাজিরবাজার ডেস্ক :
সারাদেশে এসএসসি ও সমপর্যায়ের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আগামীকাল। পরীক্ষার্থী এবার ২১ লাখ ৩৫ হাজার ৩৩৩ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের এসএসসিতে ১৭ লাখ ১০২ জন, মাদ্রাসার দাখিলে তিন লাখ ১০ হাজার ১৭২ জন ও কারিগরির এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে এক লাখ ২৫ হাজার ৫৯ জন। শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেছেন, কার্যকর পদক্ষেপের ফলে গতবার প্রশ্নফাঁসের কোন ঘটনা ঘটেনি। একই পদক্ষেপ এবারও নিচ্ছি, তাই প্রশ্নফাঁসের কোন আশঙ্কা নেই।
শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ে পরীক্ষার বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন। এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সোহরাব হোসাইন ও বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সারাদেশের ২৮ হাজার ৬৮২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী তিন হাজার ৪৯৭টি কেন্দ্রে এসএসসি ও সমপর্যায়ের পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র দশ লাখ ৭০ হাজার ৪৪১ জন ও ছাত্রী দশ লাখ ৬৪ হাজার ৮৯২ জন। ২০১৮ সালের তুলনায় এবার এই পরীক্ষায় পরীক্ষার্থী বৃদ্ধি পেয়েছে এক লাখ তিন হাজার ৪৩৪ জন। গতবছর এই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ২০ লাখ ৩১ হাজার ৮৯৯ জন। শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে সরকারী শিক্ষকদের সাময়িক বরখাস্ত করা হবে। আর বেসরকারী শিক্ষকদের এমপিও স্থগিত করে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হবে। যদি প্রতিষ্ঠানের গভর্ণিং বডি ব্যবস্থা না নেয়, সেক্ষেত্রে গভর্ণিং বডি ভেঙ্গে দেয়া হবে।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, এসএসসি ও সমপর্যায়ের পরীক্ষায় এবার মোট প্রতিষ্ঠান বৃদ্ধি পেয়েছে ১৩১টি এবং মোট কেন্দ্র বৃদ্ধি পেয়েছে ৮৫টি। এছাড়াও এবার নিয়মিত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৭ লাখ ৪০ হাজার ৯৩৭ জন এবং অনিয়মিত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা তিন লাখ ৯১ হাজার ৫৪ জন। এবার এসএসসি’র বাংলা দ্বিতীয় পত্র এবং ইংরেজী প্রথম ও দ্বিতীয়পত্র ছাড়া সকল বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্নে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
পরীক্ষা সূচারুভাবে সম্পন্নের লক্ষ্যে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে ডাঃ দীপু মনি জানান, পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট পূর্বে পরীক্ষার্থী অবশ্যই পরীক্ষা কক্ষে তার জন্য নির্ধারিত আসন গ্রহণ করবে, ট্রেজারি থেকে নির্দিষ্ট তারিখের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সকল সেট কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে, ট্রেজারি থেকে প্রশ্নপত্র কেন্দ্রে পৌঁছে দেয়ার জন্য নির্ধারিত কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট পূর্বে এসএমএস’র মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের নিকট প্রশ্নপত্রের সেট কোড জানিয়ে দেয়া হবে, কেন্দ্র সচিব ব্যতীত অন্য কেহ মোবাইল ফোন/ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না, শুধু কেন্দ্র সচিব মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন (ছবি তোলা যায় না এমন ফোন)।
সম্পূর্ণ নকলমুক্ত ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের যাবতীয় ব্যবস্থা সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যতীত অন্য কেউই কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পালসিজনিত প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী শ্রুতি লেখক সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। এ ধরনের পরীক্ষার্থীদের এবং শ্রবণ প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে।
প্রতিবন্ধী (অটিস্টিক, ডাউন সিনড্রোম, সেরিব্রাল পালসি) পরীক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময় বৃদ্ধিসহ শিক্ষক/অভিভাবক/ সাহায্যকারীর বিশেষ সহায়তায় পরীক্ষা প্রদানের সুযোগ দেয়া হয়েছে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।
আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের তত্ত্বীয় পরীক্ষা ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ২৬ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ মার্চ শেষ হবে। মাদ্রাসা বোর্ডের তত্ত্বীয় পরীক্ষা ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ২৭ ফেব্রুয়ারি শেষ এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ৬ মার্চ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের তত্ত্বীয় পরীক্ষা ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ২৩ ফেব্রুয়ারি শেষ এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।