কমলগঞ্জের শমসেরনগরে রেলওয়ের সম্পত্তিতে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

105
কমলগঞ্জে সিলেট-আখাউড়া সেকশনের শমসেরনগর রেল ষ্টেশনের প্লাটফর্ম ঘেঁষে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা সমূহ উচ্ছেদ করা হয়।

পিন্টু দেবনাথ কমলগঞ্জ থেকে :
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমসেরনগরে বাংলাদেশ রেলওয়ের সম্পত্তিতে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। সিলেট-আখাউড়া রেল সেকশনের জনগুরুত্বপূর্ণ শমসেরনগর রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভাগীয় ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট মো. নজরুল ইসলাম এর নেতৃত্বে বুধবার সকাল ১০টায় বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত এ অভিযান চলে। শমশেরনগর রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন রেলওয়ের নিজস্ব সম্পত্তিতে কিছু অসাধু ব্যক্তি কোনো প্রকার অনুমতি ছাড়াই দোকানসহ বিভিন্ন স্থাপনা ও কৃষি জমি লিজ নিয়ে পাকা বাসাবাড়ি তৈরি করেছে। বিষয়টি নজরে আসলে বুধবার উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হয়। উচ্ছেদ অভিযান শুরু হলেও বুলডোজার ও পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় এক একর পরিমান জমিতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। বুলডোজার ও জনবল নিয়ে আগামী একমাসের মধ্যে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান আবার শুরু হবে। তবে যতক্ষণ না উচ্ছেদ শেষ হবে, ততক্ষণ অভিযান অব্যাহত থাকবে। কৃষি লিজ নিয়ে পাকা গৃহ নির্মাণ, স্টেশনের প্লাটফর্ম ঘেঁষে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের অভিযোগে আংশিক উচ্ছেদ করা হয়। তবে উচ্ছেদ কার্যক্রমে গরিব নিরীহ লোকেরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় শমশেরনগর রেলস্টেশন এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, বাংলাদেশ রেলওয়ের ভূসম্পত্তি বিভাগ, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য (আরএমপি), শমসেরনগর ফাঁড়ির পুলিশ, শ্রীমঙ্গল ও কুলাউড়া জিআরপি থানা পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়। শমসেরনগর রেল স্টেশনের পশ্চিম পার্শ্বের কৃষিজমি লিজ নিয়ে ইটের তৈরি পাকা দেয়ালের গৃহ নির্মাণ করে ভাড়া নিয়ে বসবাস করছেন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোক। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে মঙ্গলবার রাতে মাইক যোগে প্রচারণা করা হয়। তবে বুধবার সকালে উচ্ছেদ অভিযানের সময়ে বসবাসরত লোকদের মধ্যে আতঙ্ক ও উৎকন্ঠা দেখা দেয়। কেউ কেউ তড়িঘড়ি মালামাল নিয়ে রাস্তার আশপাশে অবস্থান নেন। অভিযানকালে নবনির্মিত পাকা দেয়ালের তিনটি বসত ঘর, স্টেশনের রেলক্রসিং এলাকায় ছোট ছোট কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং সিএনজি-অটোরিক্সা চালক সমিতির অফিস উচ্ছেদ করা হয়।
স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল রেলওয়ের ভূমি লিজ দেখিয়ে যুগযুগ ধরে দখল ও বাণিজ্য চালিয়ে আসছে। রেল স্টেশনের দু’পাশে পাকা দেয়ালের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। একটি সিন্ডিকেট চক্র রেলওয়ের ভূমিতে প্রতিষ্ঠান গড়ে জমজমাট বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।
অভিযানকে সাধুবাদ জানিয়ে শমশেরনগর ইউপি চেয়ারম্যান জুয়েল আহমদ বলেন, বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তিরা কৃষি লিজের নামে রেলওয়ের জমি অধিগ্রহণ করে প্রলোভন দিয়ে নিরিহ গরিব মানুষের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। শমশেরনগর রেলওয়ের জমিতে প্রায় শতাধিক গরিব পরিবার রয়েছে। এসব গরীব লোকেরা সহায় সম্বল হারিয়ে এখানে আশ্রয় নিয়েছে। তবে উচ্ছেদ অভিযানের পূর্বে নিরিহ গরিব লোকদের পুনর্বাসন এবং তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া টাকা উদ্ধারের প্রতি সংশ্লিষ্টদের কাছে তিনি দাবি জানান।
বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভাগীয় ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট মো. নজরুল ইসলাম এর নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযানে রেলওয়ের ঢাকাস্থ সহকারী ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা অহিদুন নবী, কানুনগো আমিন উদ্দীন, রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনী সিলেট এর মো. মাহতাব উদ্দীন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।