স্টাফ রিপোর্টার :
ফেঞ্চুগঞ্জ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, ফেঞ্চুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের সাবেক ভিপি এ বি এম কিবরিয়া ময়নুল অভিযোগ করেছেন, ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে বিশাল বিজয়ের পর আওয়ামী পরিবারের লোকজন যখন আনন্দ ও বিজয় উৎসবে যোগ দেওয়ার কথা ছিল তখন ফেঞ্চুগঞ্জে বিরাজ করছে আতংক। নিজ দলের প্রতিপক্ষের লোকজন একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে তাদের ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে।
তিনি মঙ্গলবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, ফেঞ্চুগঞ্জ আওয়ামী লীগ পরিবার আজ নিরাপত্তাহীন। ক্ষমতাসীন দলের হয়েও একজন সংসদ সদস্যের (মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী) কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে নালিশ পৌঁছে দেওয়া এবং প্রশাসনসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
ময়নুল বলেন, সিলেট-৩ আসনে আওয়ালীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য, ফেঞ্চুগঞ্জ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাছিত টুটুল। পরে দল তাকে মনোনয়ন না দিলেও তিনি নৌকার পক্ষে দিনরাত কাজ করেন। মনোনয়ন চাওয়াকে কেন্দ্র করে মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী তাঁর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। যার ধারবাহিকতায় একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যে প্রধানমন্ত্রী সফরকালে মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাবেক সভাপতি আশফাকুল ইসলাম সাব্বিরকে প্রাণনাশের হুমকির নালিশ করা হয়। একই ঘটনায় পরবর্তিতে সাব্বিরে মা মনোয়ারা বেগম সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। গত ১ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে এবং নৌকার বিজয়ে কাজ করার লক্ষ্যে সাব্বির দেশে আসলে বিভিন্নভাবে আবারো হত্যা ও হামলার হুমকি দেয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এতকিছুর পরও সাব্বিরসহ ফেঞ্চুগঞ্জ আওয়ামী পরিবার প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন। এরপরও নির্বাচন পর্যন্ত হুমকি-ধমকি অব্যাহত ছিল। কিন্তু নির্বাচন শেষ হতেই পরদিনই হত্যার উদ্দেশ্যে তাদের উপর হামলা শুরু হয়েছে।
এ বি এম কিবরিয়া ময়নুল অভিযোগ করেন, সোমবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় প্রথমে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, বর্তমান যুক্তরাজ্য প্রবাসী আশফাকুল ইসলাম সাব্বির ও ফেঞ্চুগঞ্জ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাছিত টুটুলের বাড়ি- কে এম টিলায় আক্রমণ করা হয়।
পরে কায়স্থগ্রামে আমার নিজ বাড়িতে হামলা হয়। এ সময় ভাংচুর ও লুটপাট করে তারা। এতে তার স্ত্রী আয়েশা সুলতানা ও ছোট ভাই এনামুল করিম আহত হন। পরে ইউএনও বিজিবি-পুলিশ হামলা হওয়া সব বাড়ি পরিদর্শন করেন।
ধারাবাহিকভাবে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফাহিম আহমদ শাহ ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজান আহমদ শাহ’র শরিফগঞ্জের বাড়িতে প্রায় শতাধিক সন্ত্রাসী সশস্ত্র হামলা চালায়।
নির্বাচনের দিন রাতে উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক, সাবেক ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাবেলের উপর মাইজগাও বাজারে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে হামলা চালানো হয়। বর্তমানে তিনি এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
মঙ্গলবার সকাল ১১টায় কঠালপুর বাজারে আওয়ামী লীগের সদস্য মফিজুর রহমানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিসমিল্লাহ ট্রেডার্সে হামলা চালানো হয়। এসময়ও ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়।
তিনি বলেন, এসব ঘটনায় ফেঞ্চুগঞ্জে আওয়ামী পরিবারের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। সকলেই পরিবার নিয়ে অনিশ্চিয়তায় দিন কাটাচ্ছেন।
এসব ঘটনার পেছনে বর্তমান ও নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর নির্দেশ রয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, তাঁর হুকুমে মাইজগাও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আকরাম আলীর নেতৃত্বে শতাধিক অস্ত্রধারী এসব হামলা চালাচ্ছে।