২৪ ডিসেম্বর সেনাবাহিনী নামবে

176
ফাইল ছবি

কাজিরবাজার ডেস্ক :
দিন যতই এগিয়ে আসছে, ভোট নিয়ে ভোটারদের আগ্রহ ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। পথে ঘাটে এখন সরগরম ভোটের আলোচনায়। চায়ের কাপে ঝড় চলছে তুমুল। ভোটে কে জিতবে, তার কত জনপ্রিয়তা বেশি, ভোট সামনে রেখে জনগণের আলোচনার বিষয় মূলত এটাই। দেশবাসীর এই অপেক্ষার প্রহর শেষ হবে ৩০ ডিসেম্বর ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে। সেই মাহেন্দ্রক্ষণে বাকি আছে আর ৮ দিন। এরপরেই হবে একাদশ জাতীয় নির্বাচন। যার মাধ্যমে দেশের ক্ষমতার পালাবদল হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা বলেছেন, দেশব্যাপী ভোটের সুবাতাস বইছে। নির্বাচনে অনুকূল পরিবেশের আবহ সৃষ্টি হয়েছে। সুষ্ঠু ভোট হওয়ার বিষয়ে তিনি আশাবাদও ব্যক্ত করে বলেন দৃঢ়তার সঙ্গে বলছি নির্বাচন সুষ্ঠু হবে।
এদিকে নির্বাচনে প্রার্থীরা ভোটের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন ভোট প্রার্থনায়। মিছিলে, মিটিংয়ে পাড়া মহল্লা গ্রামগঞ্জ উৎসবমুখর। পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে ঢাকা রাজপথ থেকেই নিভৃত পল্লী এলাকায়। শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত প্রার্থীদের সরব উপস্থিতি। একটা ভোট চাই। এদিকে ভোট সুষ্ঠু করতে কমিশনের চেষ্টার অন্ত নেই। সুষ্ঠু ভোটের প্রায় সব প্রস্তুতি এখন শেষ পর্যায়ে। ভোটের মাঠ শান্ত রাখতে আগেই মাঠে নামিয়েছে বিজিবি। আগামী ২৪ ডিসেম্বর থেকে নামবে সেনাবাহিনী। নির্বাচনে যে যেখানে দায়িত্ব পালন করবেন প্রত্যেককে আলাদা ব্রিফ করছে ইসি। দিচ্ছেন কাজের নানা নির্দেশনা। সতর্ক করছেন দায়িত্ব পালনের অবহেলা আর ব্যর্থতার পরিণতি সম্পর্কে।
বৃহস্পতিবারও কমিশনে অনুষ্ঠিত হয়েছে ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ইএমএস), ক্যান্ডিডেট ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিআইএমএস) এবং রেজাল্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (আরএমএস) সফটওয়্যারের ওপর প্রশিক্ষণ কর্মশালা। যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য রেখেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা। সারাদেশ থেকে মাঠকর্মীরা কয়েকটি ব্যাচে ভাগ হয়ে গত কয়েকদিন ধরে কমিশনে এসে এসব সফটওয়্যারের ওপর প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। এ সময় তিনি বলেন, সারাদেশে ভোটের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে একটা নতুন সরকার গঠন হবে। দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে পারি যে, একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
সারাদেশে নির্বাচনের সুবাতাস, আবহ, একটি অনুকূল আবহ সৃষ্টি হয়েছে। মানুষের মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ত নির্বাচনমুখী আচরণ লক্ষ্য করা গেছে। প্রার্থীদের মধ্যে উৎসাহ দেখা যাচ্ছে তা তাদের কর্মকা-ের মধ্যে তা প্রতিফলিত হচ্ছে। অনবরত সভা-মিছিল করে যাচ্ছেন। ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট দেয়ার অনুরোধ জানাচ্ছেন।
তিনি বলেন, নির্বাচনী কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়ার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের আস্থা বেড়েছে। যে সব নির্বাচনী কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে সক্ষমতার সঙ্গে নির্বাচন পরিচালনা সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। প্রশিক্ষণের এমন কোন স্তর বাদ রাখিনি যে কারণে মাঠপর্যায়ে গিয়ে নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে তাদের কোন ঘাটতি থাকে।
তিনি বলেন নির্বাচনে কোন অনিয়ম হলে নির্বাচনী আচরণবিধি তদন্ত কমিটি অনুসন্ধান করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন। নির্বাচনে মাঠে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটরা থাকবেন চারদিন। তারা প্রার্থী ও সমর্থকদের সাহায্য করবেন। আচরণবিধি ভঙ্গে ও কোন ঘটনা ঘটলে তা শুধরে দেবেন। তাদের কথা কেউ না শুনলে বিচার করার সুযোগ থাকবে। অপরাধ আমলে নেয়ার ক্ষমতা তাদের রয়েছে। এছাড়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আচরণবিধি প্রতিপালনের বিষয়ে দেখভাল করবেন। তিনি বলেন, নির্বাচন সংক্রান্ত কোন অভিযোগের দ্রুত প্রতিকার পেতে হলে ইলেকশন ইনকোয়ারি কমিটির কাছে অভিযোগ দিতে হবে। এজন্য কমিশনে আসার কোন প্রয়োজন নেই। কমিশনে অভিযোগ দেয়া হলে সেটা এই তদন্ত কমিটির কাছে পাঠানো হয়। ফলে প্রতিকার পেতে সময় লাগে। কমিটির কাছে পাঠালে তাৎক্ষণিক সমাধান পাওয়া যাবে। সারাদেশে ১২২ নির্বাচনী আচরণবিধি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারাই বিষয়টি দেখভাল করছেন উল্লেখ করেন।
গাইবান্ধা-৩ আসনের ভোট স্থগিতের সিদ্ধান্ত : এদিকে গাইবান্ধা-৩ আসনের ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. টি আই এম ফজলে রাব্বী চৌধুরীর মৃত্যুতে ওই আসনের ভোট স্থগিত করা হবে। ফলে ৩০ ডিসেম্বর ওই আসনে ভোট হচ্ছে না।
এখন থেকে প্রতিদিন ব্রিফ করবে ইসি : নির্বাচনী খবরাখবর জানাতে প্রতিদিন সাংবাদিকদের সামনে ব্রিফ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বিকেল ৫টায় ইসির মিডিয়া সেন্টারে এই ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হবে।