কে. এম. লিমন গোয়াইনঘাট থেকে :
জাফলং পাথর কোয়ারি থেকে বালু অপসারণে পেলোডার ও পানি নিষ্কাশনে সেচ মেশিন ব্যবহারে প্রশাসনের বাধার কারণে পাথর উত্তোলন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকায় জাফলং পাথর কোয়ারি সংশ্লিষ্ট প্রায় অর্ধ লাখ শ্রমিক। পরিবার পরিজন নিয়ে এখন তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
এ দিকে কোয়ারিতে পাথর উত্তোলন কার্যক্রম বন্ধ থাকার ফলে কোয়ারি থেকে পাথর পরিবহনের কাজে নিয়োজিত পরিবহন শ্রমিকেরাও বেকার হয়ে পড়েছেন। যার প্রভাব পড়েছে গোয়াইনঘাটের পুরো উপজেলা জুড়েই। প্রায় সর্বত্রই বিরাজ করছে হাহাকার। আর কিছু দিন ধরে যদি এমন অবস্থা চলতে থাকে তাহলে, বেকারত্ব বৃদ্ধি পাবে বহুগুণ। এতে করে দেখা দেবে শ্রমিক অসন্তোষ, বাড়বে চুরি ও ছিনতাই। এতে করে আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন অনেকেই। তাছাড়াও কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন করতে না পারলে সরকার কয়েক কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকেও বঞ্চিত হবে।
পাথর কোয়ারিতে বালু অপসারণের কাজে পেলোডার ও পানি নিষ্কাশনের ক্ষেত্রে সেচ মেশিন ব্যবহার করতে না দেওয়া হয় তাহলে কঠোর আন্দোলনে যাবেন বলে জানিয়েছেন পাথর শ্রমিক ও পরিবহন শ্রমিক নেতারা।
জাফলং বল্লাঘাট পাথর উত্তোলন শ্রমিক সংগঠনের সহ সভাপতি মতিন মিয়া জানান, কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন করতে গেলে সবার আগে প্রয়োজন বালু অপসারণ ও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা। তাই বালু অপসারণ ও পানি নিষ্কাশন করতে গেলে পেলোডার ও সেচ মেশিনের ব্যবহার করা ছাড়া অন্য কোন উপায়ান্তর নেই। কিন্তু প্রশাসনের বাধার কারণে পেলোডার ও সেচ মেশিন ব্যবহার করা যাচ্ছেনা। ফলে কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকায় কোয়ারি সংশ্লিষ্ট প্রায় অর্ধলাখ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। তাই প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুতই যদি কোয়ারিতে পেলোডার ও সেচ মেশিন ব্যবহারের অনুমতি না দেওয়া হয় তাহলে আমরা সকল শ্রমিকরা মিলে কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো।
এ ব্যাপারে জাফলং ট্রাক চালক সমিতি সভাপতি ফয়জুল ইসলাম জানান, জাফলং কোয়ারিতে বালু অপসারণে পেলোডার মেশিন ও পানি নিষ্কাশনের ক্ষেত্রে সেচ মেশিন ব্যবহারে প্রশাসন বাধা দিচ্ছে। ফলে কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন করা যাচ্ছে না। আর পাথর উত্তোলন করতে না পারায় পাথর শ্রমিকদের পাশাপাশি পরিবহনের কাজে নিয়োজিত ট্রাক শ্রমিকেরাও বেকার হয়ে পড়েছেন। তিনি বলেন, শীত মৌসুম হচ্ছে পাথর উত্তোলনের উপযুক্ত সময়। কাজেই এই সময়ে যদি পাথর উত্তোলন করা না যায় তাহলে কোয়ারি সংশ্লিষ্ট শ্রমিকরা প্রায় না খেয়ে মরার উপক্রম হয়ে পড়বে। তাই পাথর কোয়ারি সংশ্লিষ্ট অর্ধলাখ শ্রমিকের মানবেতর জীবনের কথা বিবেচনা করে প্রশসানের কর্তা ব্যক্তিদের কাছে জাফলং কোয়ারিতে বালু অপসারণে পেলোডার ও পানি নিষ্কাশনের কাজে সেচ মেশিন ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে নমনীয় হওয়ার আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিশ^জিত কুমার পাল জানান, সনাতন পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনে কোন বাঁধা নেই। তবে কেউ যদি সনাতন পদ্ধতির বাইরে গিয়ে পেলোডার মেশিন ব্যবহার করে বালু অপসারণ ও সেচ মেশিন দিয়ে পানি নিষ্কাশন করে তাহলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাধা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।