সরকারের ব্রিফিংয়ে যেতে পারবেন না ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনার ॥ ওয়াজ মাহফিল করা যাবে তবে দেয়া যাবে না রাজনৈতিক বক্তব্য

47

কাজিরবাজার ডেস্ক :
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও বিভাগীয় কমিশনারদের সরকারের কোনো ব্রিফিংয়ে অংশ না নিতে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বিষয়টি বাস্তবায়নে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে এ সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
মঙ্গলবার ইসির উপ-সচিব মো. আব্দুল হালিম খান স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২-এর অনুচ্ছেদ ৭-এর দফা ১ ও ২ অনুসারে নির্বাচন কমিশন ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। তাদের চাকরি বর্তমানে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। তাই নির্বাচনের ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশ পর্যন্ত তারা ইসির অনুমতি ছাড়া কর্মস্থল ত্যাগ করতে পারবেন না।’
এছাড়া তারা সকারের উন্নয়ন, প্রশাসনিক বা নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো ব্রিফিংয়ে অংশ নিতে পারবেন না বলেও উল্লেখ করা হয় ইসির চিঠিতে।
সম্প্রতি বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ইসিতে অভিযোগ করে যে, জেলা প্রশাসকদের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে ব্রিফ করা হয়েছে।
করা যাবে ধর্মীয় সভা, ওয়াজ-মাহফিল :
ভোটের আগে ধর্মীয় সভা, ওয়াজ মাহফিলের ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞা থেকে সরে এসেছে ইসি। ফলে ভোট গ্রহণের আগে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অনুমতি নিয়ে করা যাবে ওয়াজ মাহফিল।
রিটার্নিং অফিসার অথবা সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসার বা রিটার্নিং অফিসারের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে এসব ওয়াজ মাহফিল করতে হবে। তবে কোনো ধরনের রাজনৈতিক বক্তব্য বা কোনো প্রার্থীর পক্ষে-বিপক্ষে বক্তব্য দেওয়া যাবে না।
ওয়াজ মাহফিলের অনুমতি দিয়ে ইসির যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহম্মদ খান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ‘ধর্মীয় সভা, ওয়াজ মাহফিল বা উক্তরূপ জমায়েতের বিষয়ে একটি মহল বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালাচ্ছে। এ ধরনের অপপ্রচারের ফলে নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে বিরূপ ধারণা সৃষ্টি, সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ধর্মীয় সভাসংক্রান্ত একটি স্পর্শকাতর বিষয়ে অপপ্রচার রোধে এবং সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অপচেষ্টা নস্যাৎ করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্টদের ধর্মীয় কোনো অনুষ্ঠান আয়োজনে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের জন্য নির্দেশিত হয়ে অনুরোধ করা হলো।’
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘প্রকৃতপক্ষে ধর্মীয় সভা, ওয়াজ মাহফিল বা উক্তরূপ জমায়েতের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেননি। পূর্ব নির্ধারিত অথবা ইতোমধ্যে অনুমোদিত ধর্মীয় সভা, ওয়াজ মাহফিল বা উক্তরূপ জমায়েত অথবা অনুরূপ কোনো অনুষ্ঠান আয়োজনে বাধা নেই। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে এবং নির্বাচন-পূর্ব পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ রাখতে পূর্ব নির্ধারিত ধর্মীয় সভা, ওয়াজ মাহফিল বা উক্তরূপ জমায়েত ছাড়া নতুন কোনো ধর্মীয় সভা, ওয়াজ মাহফিল বা উক্তরূপ জমায়েত ৩০ ডিসেম্বরের পর আয়োজনের জন্য কমিশন অনুরোধ জানিয়েছিলেন।’
গত ২০ নভেম্বর ভোটের আগে নতুন কোনো ধর্মীয় সভা, ওয়াজ মাহফিলের অনুমতি দেওয়া হবে না বলে নির্দেশ জারি করে ইসি। ফরহাদ আহম্মদ খান স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘ভোটগ্রহণের আগে ওয়াজ মাহফিলের অনুমতি দেওয়া যাবে না। তবে ইতোমধ্যে যেসব ওয়াজ মাহফিলের তারিখ নির্ধারণ রয়েছে, সেগুলো করা যাবে। বিশেষ কারণে ধর্মীয় সভা করতে গেলে অনুমতি নিয়ে করতে হবে।’
আগামী ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ২৮ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই ২ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহার ৯ ডিসেম্বর আর প্রতীক বরাদ্দ ১০ ডিসেম্বর।