কাজিরবাজার ডেস্ক :
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো সংঘাত, রক্তপাত বা প্রাণহানী চান না প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা। আচরণবিধি প্রয়োগ করতে গিয়ে যেন নিয়ন্ত্রণহীন পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সে দিকে নজর রাখতেও নির্বাহী হাকিমদের (ম্যাজিস্ট্রেট) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবন মিলনায়তনে আগামী জাতীয় নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের ব্রিফিংয়ের উদ্বোধনকালে সিইসি এসব কথা বলেন। এ সময় চার নির্বাচন কমিশনারসহ নির্বাচন কমিশন সচিব উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের তিনদিন ব্যাপী প্রশিক্ষণের তিন ব্যাচে ৬৯১ জনকে ব্রিফ করে কমিশন।
সিইসি বলেন, ‘আচরণবিধি ভালোভাবে রপ্ত করবেন। তবে এর প্রয়োগ করতে গিয়ে যেনো এমন কোনো কাজ করবেন না যাতে একটা নিয়ন্ত্রণহীন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।’
‘কখনো ধৈর্যচ্যুত হলে চলবে না। কোনো বিভ্রান্তকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়লে সহনশীল থাকতে হবে এবং বুঝে, জেনে, শুনে অ্যাকশনে যেতে হবে। চরম অ্যাকশন যেটা বলা হয়, সেটাকে যতদূর পারেন আপনারা নিজেদের বিবেচনায় সেগুলো নিয়ন্ত্রণ যদি করতে পারেন তাহলে পরিবেশ পরিস্থিত শান্ত হবে। আমরা চাই একটি সুষ্ঠু নির্বাচন। আমরা চাই একটা নির্বাচন।’
‘আমরা চাই না সেই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো সংঘাত হোক এবং সেখানে কোনো রকম রক্তপাত হোক অথবা প্রাণহানী হোক। এইগুলোকে সামলানোর জন্য, দেখভাল করার জন্য আপনাদের দায়িত্ব। নির্বাচনের দিন, নির্বাচনের পূর্বে এবং পরে এই সময় আপনাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে থাকতে হবে। তাদেরকে পরিচালনার দায়িত্বে আপনাদের থাকতে হবে।’
‘বারবার বলি আপনারা বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট। সুতরাং সেই বিজ্ঞ এবং অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আপনাদের কাজ করতে হবে, যাতে কখনো নির্বাচনের পরিবেশ পরিস্থিতি ব্যাহত হয়।’
ভোটের দিনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘সেদিনটা আপনাদের অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্বপালন করতে হবে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অনেক সময় আপনাদেরকে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। আপনাদেরকে বিচলিত করে, অনেক সময় আপনাদেরকে নানা কারণে উস্কানিমূলক পরিস্থিতিতে ফেলে দেয়। আপনাদেরকে মিসগাইডিংয়ের মধ্যে ফেলে দেয়। সেই সমস্ত অবস্থাগুলো আপনাদেরকে বুদ্ধিমত্তা, দক্ষতা, ক্ষিপ্রতার মাধ্যমে এগুলো বুঝতে হবে যে, আসলে অবস্থা কী?’।
‘কোন ঘটনা সত্য বা মিথ্যা তা আপনাদের বুঝতে হবে। আধুনিক এই যুগে কেন্দ্র, প্রিজাইডিং অফিসার, আপনাদের সহকর্মী যারা থাকবে তাদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ থাকতে হবে। যাতে তাৎক্ষণিকভাবে সেই এলাকার অবস্থা জানতে পারেন।’
রাজনৈতিক নেতাদের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে না ফেলারও অনুরোধ করেন সিইসি। বলেন, ‘তারা দেশের শাসনভার গ্রহণ করবেন। যারা মহান জাতীয় সংসদের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবেন, যারা মন্ত্রী, স্পিকার, দেশ পরিচালনা করবেন, নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করবেন তারা প্রত্যেকে সম্মানী ব্যক্তি। আমি জানি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা আপনাদেরকে কখনো বিভ্রান্তকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলবেন না। তাদের উপর আস্থা রাখবেন এবং তাদের কথা শুনতে হবে।’
‘নিরপক্ষতা থাকতে হবে এবং ক্ষিপ্রতা থাকতে হবে। কখনো নিজেদের আইনকানুনের অবস্থান থেকে বিচ্যুত হবেন না এবং সব থেকে বড় কথা হলো আপনাদের ধৈর্যসহকারে সমস্যাগুলো সমাধান করতে হবে। কাউকে বিরক্ত করে বা বিরক্তভাজন হয়ে নয়।’