স্টাফ রিপোর্টার :
জকিগঞ্জে ঠিকাদার ও গাড়ী চালক ইমদাদুর রহমান হত্যা মামলায় ৫ ঘাতককে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাস করে কারাদন্ড দেয়া হয়। গতকাল বুধবার সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৫ম আদালতের বিচারক সাবেরা সুলতানা খানম এ রায় ঘোষনা করেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা হচ্ছে- জকিগঞ্জ থানার অজরগ্রামের ইব্রাহিম আলী উরফে গেদাই মিয়ার পুত্র তাজ আহমদ (৩৫), একই উপজেলার ইছাপুর গ্রামের মৃত মছদ্দর আলী উরফে ভালু মিয়ার পুত্র শুকুর (৩৫), সুলতানপুর গ্রামের মৃত সরাফত আলীর পুত্র খলু (৩৫), ইছাপুর গ্রামের আব্দুর রফিকের পুত্র হোছন (৩০) এবং একই গ্রামের আব্দুর সুনাম উরফে বলু মিয়ার পুত্র আবদুর রশিদ (২০)। এর মধ্যে সাজাপ্রাপ্ত আসামী আব্দুর রশিদ বর্তমানে পলাতক রয়েছে। অন্যান্য সাজাপ্রাপ্ত আসামীদেরকে গতকাল বুধবার বিকেলে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আদালত সূত্র।
এদিকে, মামলা চলাকালীন সময়ে আসামী জকিগঞ্জ থানার অজরগ্রামের হাছন আলীর পুত্র মাহতাব উরফে সাতাই (৪০), ও একই থানার ইছাপুর গ্রামের মৃত আবদুর রহমানের পুত্র কালা মিয়া (৪৫) মৃত্যুবরণ করায় তাদেরকে এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ সকালে ভারত-বাংলাদেশেরে সীমান্তবর্তী ইছাপুর এলাকার কুশিয়ারা নদী থেকে তাজ আহমদ, শুকুর, খলু, হোছন, আবদুর রশিদ,মাহতাব উরফে সাতাই ও কালা মিয়া বালু উত্তোলন করছিল। ওইদিন সকাল সোয়া ৮ টার দিকে জকিগঞ্জ থানার লালগ্রামের আব্দুল হক মাস্টারের পুত্র ঠিকাদার ও গাড়ী চালক ইমদাদুর রহমান (৩৬) তাদের বালু ও পাথর উত্তোলনে বাধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শুকুর কুদাল দিয়ে ও তার সাথের লোকরা মিলে ইমদাদুরকে প্রাণে হত্যার চেষ্টা চালায়। এতে ইমদাদুর রহমান প্রাণ রক্ষার্থে কুশিয়ারা নদীতে ঝাপ দেন। তখন আসামীরা মিলে পাথর ছুঁড়ে মারলে সেখানে তার মৃত্যু ঘটে। এ খবর পেয়ে ইমদাদুর রহমানের ছোট ভাই বিডিআর নিয়ে গিয়ে কুশিয়ারা নদীতে জাল ফেলে তার ভাইয়ের লাশ উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই মো. লুৎফুর রহমান বাদী হয়ে ৭ জনকে আসামী করে জকিগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার নং- ১৪ (১৪-০৩-২০০৭)।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে জকিগঞ্জ থানার এসআই কাজী কামাল হোসেন ২০০৭ সালের ১৮ অক্টোবর ৭ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন এবং ২০০৮ সালের ১৪ অক্টোবর আদালতে ৭ আসামীদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার কার্য্য শুরু করেন।
দীর্ঘ শুনানী ও ১৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আসামী তাজ আহমদ, শুকুর, খলু, হোছন, আবদুর রশিদকে ৩০২/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত তাদের প্রত্যেককে উল্লেখিত দন্ডাদেশ প্রদান করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে এপিপি এডভোকেট জসিম উদ্দিন আহমদ ও আসামীপক্ষে এডভোকেট আহমদ ওবায়দুর ও এডভোকেট মো: আমিনুর রহমান মামলাটি পরিচালনা করেন।