নিউইয়র্কে নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ॥ ড. কামাল ও বি চৌধুরী সরকার উৎখাতের চেষ্টা করছেন

37

কাজিরবাজার ডেস্ক :
বিএনপিসহ ‘দুর্নীতিবাজদের’ সঙ্গে নিয়ে ড. কামাল হোসেন ও এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী সরকার উৎখাতের চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের আয়োজনে রবিবার নিউইয়র্কে এক নাগরিক সংবর্ধনায় তিনি বলেন, ‘বড় বড় কথা তারা বলে। তারা কী পারবে উন্নয়ন করতে ? তারা তো লুটে খাবে’
একাদশ সংসদ নির্বাচনের তোড়জোড়ের মধ্যে বদরুদ্দোজা চৌধুরী নেতৃত্বাধীন ‘যুক্তফ্রন্ট’ এবং ড. কামালের ‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া’ শনিবার মহানগর নাট্যমঞ্চে নাগরিক সমাবেশ করে।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসা বিএনপির নেতারাও ওই সমাবেশে যোগ দেন।
নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে সংলাপে বসে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে সরকারকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয় ওই সমাবেশ।
ওই সমাবেশে বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও ড. কামাল হোসেনের পাশেই বসেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও মওদুদ আহমদ এবং সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টর মইনুল হোসেন। নিউইয়র্কের হিলটন হোটেলে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অপরাধটা কী? দোষটা কী? সরকার উৎখাত করতে হবে কেন? কী কারণে? কী কাজটা করিনি দেশের জন্য?’
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এবং তার দুই ছেলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগগুলো তুলে ধরে শেখ হাসিনা যুক্তফ্রন্ট ও ‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া’ নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘এরা সব এক জায়গায়। কেউ সুদখোর, কেউ ঘুষখোর, কেউ মানি লন্ডারিংয়ের দায়ে অভিযুক্ত, কেউ খুনী। এভাবে সব আজকে এক জায়গায়।’
‘এই সমস্ত দুর্নীতিবাজকে নিয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যারা কথা বলেন, তারা লড়াই করবেন! কামাল হোসেন লড়াই করবেন? বি চৌধুরী লড়াই করবেন? মান্না লড়াই করবে?’
বদরুদ্দোজা-কামালদের সমাবেশে মইনুল হোসেনের উপস্থিতির প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তার সঙ্গে গেছেন মইনুল হোসেন। সে আবার কাকরাইলের বাড়ির জমি দখল করে; সে জায়গা নিয়ে মামলা আছে। সাজু হোসেন ভার্সেস রাষ্ট্র। মামলায় সে সাজাপ্রাপ্ত।’
আর ‘ভুয়া’ আমমোক্তারনামা তৈরি করে এক মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদের ভাইয়ের নামে দখল নেয়ার ঘটনা মনে করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা সবগুলো এখন এক জায়গায় হয়েছে!’
গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক এমডি মুহাম্মদ ইউনূসেরও সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘নোবেল প্রাইজ পাওয়ার পরও তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদ ছাড়েন না। কারণ, এমডির পদ ছাড়লে তো গ্রামীণ ব্যাংকের টাকা মারা যাবে না।’
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘উন্নয়ন চাইলে আওয়ামী লীগকে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগামী ইলেকশনের আগে আমার তো আর আসার সুযোগ হবে না। তাই আপনাদের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে যাচ্ছি।’
শীঘ্রই ঢাকা-নিউইয়র্ক সরাসরি ফ্লাইট চালুর আশ্বাস দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এদের সঙ্গে যা কথা হচ্ছে, ডাইরেক্ট ঢাকা থেকে নিউইয়র্ক আসতে পারব।’