আট মাসে সড়ক দুর্ঘটনা নিহত ৩ হাজার ২০২ জন

23

কাজিরবাজার ডেস্ক :
গত আট মাসে ৩ হাজার ১৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪১১ নারী ও ৪৫৩ শিশুসহ ৩ হাজার ২০২ জন নিহত ও ৭ হাজার ৮৮৩ জন আহত হয়েছে। জাতীয় মহাসড়ক, আন্ত:জেলা সড়ক ও আঞ্চলিক সড়কসমূহে এসব প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটে। তবে জুলাই মাসের তুলনায় আগস্টে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি- দুটিই কমেছে। বেসরকারি সংগঠন নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির (এনসিপিএসআরআর) নিয়মিত মাসিক জরিপ ও পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে।
বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সংগঠনটি এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করে। ২২টি বাংলা ও ইংরেজি জাতীয় দৈনিক, ১০টি আঞ্চলিক সংবাদপত্র এবং আটটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও সংবাদ সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২৯ জুলাই থেকে সপ্তাহব্যাপি রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনাবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে সড়ক পরিবহন খাতে বিশৃঙ্খলা কমতে শুরু করেছে। জুলাইয়ের তুলনায় আগস্টে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি কমেছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, জুলাইয়ে ৩৪৬টি দুর্ঘটনায় ৪৪ নারী ও ৬৭ শিশুসহ ৩৭৪ জন নিহত হয়।
চলতি বছরের আগস্টে ৩১৪টি দুর্ঘটনায় ৫০ নারী ও ৬০ শিশুসহ নিহত হয় ৩৫৭ জন। তবে জুলাইয়ে আহতের সংখ্যা ৯০২ হলেও আগস্টে তা বেড়ে ১ হাজার ৬ জন হয়েছে। এছাড়া দুর্ঘটনা রোধসহ সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ও পুলিশ প্রশাসনের তৎপরতা অনেক বাড়লেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।
জাতীয় কমিটির পর্যবেক্ষণে বলা হয়, খোদ রাজধানীতে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করে বেপরোয়া গাড়ি চলাচল, ভাঙা অবকাঠামোযুক্ত রঙচটা বাসে যাত্রী পরিবহন, অপ্রাপ্তবয়স্কদের দিয়ে লেগুনা ও ইজিবাইক চালানো, ফুটপাতের ওপর দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচল এবং সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা লঙ্ঘন করে মহাসড়কে তিন-চাকার যানবাহন চলাচলের ঘটনা অহরহ ঘটছে। তবে বিআরটিএ ও পুলিশের বর্তমান তৎপরতা বছরজুড়ে অব্যাহত থাকলেও নিকট ভবিষ্যতে দুর্ঘটনা ও সড়কের বিশৃঙ্খলা অনেক কমে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয় প্রতিবেদনে।
জাতীয় কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, জানুয়ারিতে ৪০৩টি দুর্ঘটনায় ৫৪ নারী ও ৩০ শিশুসহ ৪২৫ জন নিহত ও ৯৩৩ জন আহত হয়েছেন। ফেব্রুয়ারিতে ৩৭৩ দুর্ঘটনায় ৫৩ নারী ও ৪৮ শিশুসহ ৪১৩ জন নিহত ও ৯৯৫ জন আহত হয়েছেন। মার্চে ৩৭৯টি দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত হয়েছেন যথাক্রমে ৩৮৫ ও ৯৭১ জন; নিহতের তালিকায় ৫৩ নারী ও ৭৯ শিশু রয়েছে। এপ্রিলে ৪০৮টি দুর্ঘটনায় ৫০ নারী ও ৫০ শিশুসহ ৩৮৯ জন নিহত ও ১ হাজার ৩২ জন নিহত হয়েছে। মে মাসে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩৬৩টি। এতে ৪০ নারী ও ৫১ শিশুসহ নিহত হয়েছেন ৩৮১ জন এবং আহত হয়েছেন ৮৪৬ জন। জুনে ৪২৭টি দুর্ঘটনায় ৬৭ নারী ও ৬৮ শিশুসহ ৪৭৮ জন নিহত ১,১৯৮ জন আহত হয়েছেন।
দুই ঈদে দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়, ১২ জুন থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত ১৩ দিনে ঈদ-যাতায়াতে (ঈদুল ফিতর) ২১১টি দুর্ঘটনায় ৩৭ নারী ও ৩২ শিশুসহ মোট ২৪৮ জন নিহত ও ৭১৭ জন আহত হয়েছেন। ১৫ আগস্ট থেকে ২৫ আগষ্ট পর্যন্ত ১১ দিনে ঈদ-যাতায়াতে (ঈদুল আযহা) দুর্ঘটনা ঘটেছে ৯৬টি। এসব দুর্ঘটনায় ২২ নারী ও ২১ শিশুসহ মোট ১৪২ জন নিহত ও ৩১৮ জন আহত হয়েছেন।