হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নে সাতাইয়াল গ্রামের নিকট সিএনজি (অটোরিক্সা) ও মোটর সাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে গুরুতর আহত ইরেশ সরকার (৩০) ও সোহেল মিয়া (৩২) নিহত ও ৬ জন আহত হয়েছেন। বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত ইরেশ সরকার ও সোহেল মিয়া মৃত্যুবরণ করেন। নিহত ইরেশ সরকার নবীগঞ্জ উপজেলার স্বস্তিপুর গ্রামের বারিন্দ্র সরকারের পুত্র এবং নিহত সোহেল মিয়া করগাও গ্রামের সুরুজ মিয়ার পুত্র।
আহতদের সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। স্থানীয় লোকজনের দাবী, হাইওয়ে পুলিশের মহাসড়কে চলাচলকারী সিএনজিটিকে ধাওয়া করে। এ সময় সিএনজি চালক পুলিশের কবল থেকে বাচার চেষ্টাকালে মোটর সাইকেলের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। গতকাল বুধবার (৫সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে গজনাইপুর ইউনিয়নের সাতাইহাল গ্রামে মহাসড়কের নিকটবর্তী মসজিদের সামনে এঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উল্লেখিত সময় আউশকান্দি থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী সিএনজি (অটোরিকশা) মহাসড়ক দিয়ে অবৈধভাবে যাচ্ছিল। শেরপুর হাইওয়ে পুলিশের টহলরত একদল পুলিশ অবৈধভাবে মহাসড়কে চলাচরকারী সিএনটিকে আটকাতে পিছু নেয়। সিএনজিটি গজনাইপুর ইউনিয়নের সাতাইহাল মসজিদের সামনে পৌঁছুলে পিছন দিক থেকে হাইওয়ে পুলিশের গাড়িটি সামনে গিয়ে সিএনজিটিকে আটকানোর চেষ্টা করেন। এসময় সিএনজির সাথে সাতাইহাল ফুলতলী বাজার থেকে আসা একটি মোটর সাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে সিএনজি ও মোটর সাইকেল ধুমড়ে মুচড়ে যায়। দুর্ঘটনায় মোটর সাইকেল আরোহীরা হলেন-উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের শতক গ্রামের জব্বার মিয়ার পুত্র ধান ব্যবসায়ী আজাদ মিয়া (৩০), করগাও গ্রামের সুরুজ মিয়ার পুত্র সুহেল মিয়া (৩২), সিএনজি যাত্রীরা হলেন, নবীগঞ্জ উপজেলার স্বস্তিপুর গ্রামের বারিন্দ্র সরকারের পুত্র ইরেশ সরকার (৩০), একই গ্রামের দুর্গা সরকারের পুত্র কালিপদ সরকার (৪০), একই গ্রামের মৃত আলাউদ্দিন মিয়ার পুত্র সাইফুল ইসলাম (৩০), শিরিস চন্দ্র বিশ্বাসের পুত্র শান্ত বিশ্বাস (১০), সুনামগঞ্জ জেলার জগনাথপুর উপজেলার শশী চন্দ্র বিশ্বাসের পুত্র সেবক চন্দ্র বিশ্বাস (৩২), মৌলভীবাজার জেলার শেরপুর এলাকার সরধন সরকারের পুত্র রগু সরকার (৪০) আহত হন। স্থানীয় লোকজনের সহযোগীতায় হাইওয়ে পুলিশের গাড়িতে করে আহতদের সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধিন অবস্থায় সিএনজি যাত্রী ইরেশ সরকার ও পরে মোটর সাইকেল যাত্রী সোহেল মিয়া মারা যান। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উপস্থিত গজনাইপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার সৈয়দ মাহবুব আলী নূরুর সাথে রাত ১টার দিকে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সোহেল মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এদিকে ঘটনার পর স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা হাইওয়ে পুলিশের দুই সদস্যকে আটক করে লাঞ্ছিত করে।
খবর পেয়ে (নবীগঞ্জ-বাহুবল) সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার পারভেজ আলম চৌধুরী, নবীগঞ্জ থানার ওসি এস.এম আতাউর রহমান, গোপলার বাজার তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ কাওছার আলম ঘটনাস্থলে পৌঁছে গজনাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমদাদুর রহমান মুকুলের সহযোগীতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।
এ ব্যাপারে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার পারভেজ আলম চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পুলিশের ধাওয়ায় দুর্ঘটনা ঘটেনি। সিএনজি ও মোটরসাইকেলের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। তখন হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আহতদের উদ্ধার করে পুলিশের নিজ গাড়িতে করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। তিনি আরও বলেন, স্থানীয় জনতার মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে। পুলিশ সদস্যরা একটি দোকানে ছিলেন। তাদের কেউ আটক করেনি।