অবৈধ হাটের লাখ লাখ টাকা সুবিধাভোগীদের পকেটে, রাজস্ব বঞ্চিত সরকার

72

স্টাফ রিপোর্টার :
নগরী, শহরতলী ও দক্ষিণ সুরমায় সড়কে সড়কে যত্রতত্রভাবে গড়ে উঠা বিভিন্ন অবৈধ কোরবানীর পশুর হাটের জন্য গরুবাহী ট্রাক ছিনিয়ে নিয়ে চলছে পশু বেচাকেনা। এতে করে বৈধ হাটের মালিকরা পড়েছেন বিপাকে। আর এসব অবৈধ হাটের মূল কাজই হচ্ছে জোর করে পশুবাহী গাড়ী ও পশু ছিনিয়ে নেয়া। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা পাইকার ও ব্যাপারীরা এ অবস্থায় আতংকে রয়েছেন। শুধু পশু নয় তাদের টাকা-পয়সাও লুট করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে বিভিন্ন জায়গায়। অবৈধ হাটের আয়োজকরা হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। আর রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
ফলে কোরবানীর গরু-ছাগলের দাম বাড়ছে। এতে ক্রেতারা যেমন গরু কিনতে পারছেন না অন্যদিকে পাইকার ও ব্যাপারীরা পশু বিক্রি করতে পারছেন না। গতকাল সোমবার বিভিন্ন হাট ঘুরে পাইকার ও ব্যাপারীদের সাথে আলাপকালে তাদের অনেকেই জানিয়েছেন অবৈধ হাটের আয়োজকরা জোরপূর্বক তাদের পশু তাদের হাটে আনতে বাধ্য করেছেন। যে কারণে তারা অনিচ্ছা সত্ত্বেও এসব হাটে অবস্থান করতে বাধ্য হচ্ছেন। যার ফলে কোরবানির পশুর সংকট দেখা দিয়েছে এবং দামও চড়া রয়েছে। এসব অবৈধভাবে হাট বসানোয় স্থানীয় এলাকাবাসীসহ জনপ্রতিনিধিদের অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা অবিলম্বে এসব অবৈধ হাট উচ্ছেদের দাবী জানিয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে- গতকাল যশোর থেকে এক ব্যাপারী ট্রাক নিয়ে কাজিরবাজার পশুর হাটে আসছিলেন। পশুবাহী ট্রাকটি টুকেরবাজার তেমুখী বাইপাসে আসার পর মোটরসাইকেলযোগে আসা একদল লোক তাদের পশুবাহী গাড়ী ও পশু ছিনিয়ে অবৈধ হাটে নেয়া হয়েছে। ফলে তারা আতংকে রয়েছেন। তারা জানিয়েছেন গরু বিক্রি করার টাকা নিয়ে তারা নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারবেন কি না?
এদিকে নগরীর রিকাবীবাজারে ভিআইপি রোডের উপর অবৈধ কোরবানীর পশুর হাট উচ্ছেদের দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসী। তারা অভিযোগ করেছেন-একটি মহল সরকারী দলের নাম ভাঙ্গিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে হাট বসানোর কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসীসহ এ সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী হাজার হাজার মানুষ। তারা বলছেন- হাটের কারণে এ্যাম্বুলেন্সে জরুরী রোগী নিয়ে ওসমানী হাসপাতাল সহ বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনিষ্টস সেন্টারে যাওয়া যাচ্ছে না। ভোক্তভোগিদের অভিযোগ-এর আগেও একই জায়গায় অবৈধ হাট বসানোকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। এমনকি একজন রাজনীতিক নেতাও নাজেহাল হয়েছিলেন। যে কারণে সকলের দাবী আজকের মধ্যেই এ বাজার উচ্ছেদ করে স্থানীয় প্রশাসন নাগরিক জীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে দেবে।
এ বছর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুরো জেলায় ২২টি পশুর হাটের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তারপরও নগরীর বিভিন্ন স্থানে অবৈধ পশুর হাট বসেছে। নগরীর অনেক জায়গায় রাস্তা দখল করেই বসেছে অবৈধ পশুর হাট। এতে অনেক জায়গায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মুহম্মদ আব্দুল ওয়াহাব জানান, নগরীর কাজিরবাজারসহ ১১টি হাট বসানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে কোথাও হাট বসেনি। তিনি আরও বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে যদি কোন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয় আর এতে আমাদের সহযোগিতা চাওয়া হয় আমরা অবশ্যই অবৈধ পশুর হাট বন্ধে উদ্যোগ নেব।