টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধিতে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের শ্রদ্ধা

182

কাজিরবাজার ডেস্ক :
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসে তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার সকাল দশটা ৫ মিনিটে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধিবেদিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে তিনি এ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে তিনি শোকার্তচিত্তে বেদিমূলে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় বেজে ওঠে বিউগলে করুণ সুর। বঙ্গবন্ধুর মাজার প্রাঙ্গণে সৃষ্টি হয় শোকাবহ পরিবেশ। সশস্ত্র বাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদর্শণ করে। রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদর্শন করা হয় জাতির পিতাকে।
এরপর অশ্র“সজল প্রধানমন্ত্রী ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ফাতেহা পাঠ করেন এবং পিতা বঙ্গবন্ধু ও মাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবসহ ১৫ আগষ্টে নিহতদের আত্মার শান্তি কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করেন। এরপর দলীয় নেতৃবৃন্দ সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা দলের পক্ষে জাতির পিতার সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন।
এ সময় জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শিল্পমন্ত্রী আমীর হোসেন আমু ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোর্শ্রাফ হোসেন, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহম্মেদ, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহম্মদ নাছিম, নৌপরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সাবেক চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর চাচা শেখ কবির হোসেন, সাবেক চীফ হুইপ আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ, সাবেক মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান, এমপি, শেখ হেলাল উদ্দিন, এমপি, পাট ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী মীর্জা আজম, তথ্য প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট তারানা হালিম, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম এমপি, আব্দুর রহমান এমপি ও নওফেল আহম্মেদ, দফতর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক শেখ মোহম্মদ আব্দুল্লাহ, শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এমপি, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা এস এম কামাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. খোন্দকার মোঃ নাছিরউদ্দিন, এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দসহ বহু রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও তিন বাহিনীর প্রধানসহ পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রীয় এসব কর্মসূচী শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর মাজারের বেদিমূল থেকে বঙ্গবন্ধু ভবনে যান।
এরপর জাতীয় সংসদের স্পীকার, মন্ত্রিপরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, পেশাজীবী ও সামাজিক সংগঠন, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে পর্যায়ক্রমে বঙ্গবন্ধুর সমাধিবেদিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
এসব কর্মসূচীতে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্রশাসক চৌধুরী এমদাদুল হক, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম (কাকন), দফতর সম্পাদক ইলিয়াস হক, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ লুৎফর রহমান বাচ্চু, সদর উপজেলার আওয়ামী লীগ সভাপতি ও গোপালগঞ্জ মেয়র কাজী লিয়াকত আলী লেকু, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মিটু, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ আব্দুল হালিম, সাধারণ-সম্পাদক আবুল বশার খায়ের, উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী গোলাম মোস্তফা, সাবেক চেয়ারম্যান সোলায়মান বিশ্বাস, পৌর মেয়র শেখ আহম্মদ হোসেন মীর্জা, কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এ্যাডভোকেট সুভাষ চন্দ্র জয়ধর, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান নাছিমা আক্তার রুবেল, মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী এ্যাডভোকেট শামসুন্নাহার, জেলা যুবলীগ সভাপতি জি এম সাহাবুদ্দিন আজম, সাধারণ সম্পাদক এম বি সাইফ বি, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা তাসবিরুল হুদা বাবু ও নিতিশ রায়, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুল হামিদ ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিক, প্রমুখ।
এরপর বেলা ১১টায় বঙ্গবন্ধু মাজার কমপ্লেক্স মসজিদে জেলা প্রশাসন আয়োজিত মিলাদ ও দোয়া মাহ্ফিলে অংশ নেন মন্ত্রিপরিষদের সদস্য এবং পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা বঙ্গবন্ধু ভবনে বসে মিলাদ মাহফিলের মোনাজাতে অংশ নেন। পরে দুপুর সোয়া ১২টায় প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়া থেকে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন।
প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে বঙ্গবন্ধুর মাজার কমপ্লেক্সসহ আশপাশ এলাকায় ছিল নিñিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কালো তোরণ, কালো ব্যানার আর সু-সজ্জিত কালো পতাকা বেষ্টিত চারিদিকে ছিল শোকাবহ পরিবেশ। প্রধানমন্ত্রী চলে যাওয়ার পর বঙ্গবন্ধুর মাজার কমপ্লেক্সে নামে সাধারণ মানুষের ঢল। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসা মুজিব-প্রেমী মানুষগুলো ভিড় করে বঙ্গবন্ধু মাজার প্রাঙ্গণে। তারা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তাদের প্রিয় নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
এ দিকে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ৪৩তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে টুিঙ্গপাড়ার শেখ মুজিবুর রহমান সরকারী ডিগ্রী কলেজ ও বালাডাঙ্গা স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত হয় চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবান অনুষ্ঠান। এতে ৪০ হাজার শোকার্ত মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। প্রয়াত চট্টলবীর এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর পক্ষে তার কনিষ্ঠ পুত্র বোরহানুল হাসান চৌধুরী সালেহীন এবারের মেজবান আয়োজন করেন।
বিকেল সোয়া ৫টায় গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আয়োজন করা হয় জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল। জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি চৌধুরী এমদাদুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নওফেল আহম্মেদ, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক শেখ মোহম্মদ আব্দুল্লাহ, কেন্দ্রীয় নেতা এস এম কামাল, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, দফতর সম্পাদক ইলিয়াস হক, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ লুৎফর রহমান বাচ্চু, গোপালগঞ্জ মেয়র কাজী লিয়াকত আলী লেকু, আওয়ামী লীগ নেতা এস এম আক্কাস ও সালাউদ্দিন পান্না।
এ ছাড়াও জাতীয় শোক দিবস পালন উপলক্ষে জেলার বিভিন্ন দফতরসহ ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ইউনিয়ন পরিষদে আলোচনা সভা, প্রার্থনা, মিলাদ, দোয়া মাহফিল ও কাঙালীভোজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।