১৯ সাংগঠনিক জেলার সঙ্গে হাইকমান্ডের বৈঠক ॥ ২০ দলীয় জোট থেকে জামায়াত বাদ দিতে বিএনপির হাইকমান্ডকে তৃণমূল নেতাদের মত ॥ দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত

36

কাজিরবাজার ডেস্ক :
২০ দলীয় জোট থেকে জামায়াতে ইসলামীকে বাদ দিতে বিএনপির হাইকমান্ডকে মত দিয়েছেন দলটির তৃণমূল নেতারা। শুক্রবার (৩ আগষ্ট) বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে তৃণমূল বিএনপি নেতারা জামায়াতে ইসলামীকে বাদ দেওয়ার পক্ষে বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরেন। দলটির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনার মাধ্যমে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
দুদিনব্যাপী তৃণমূল বিএনপির সঙ্গে দলটির হাইকমান্ড বৈঠকে বসেছে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের বিএনপির ১৯টি সাংগঠনিক জেলার সঙ্গে বৈঠক করে দলের হাইকমান্ড। এই সেশনে ২০ দলীয় জোট থেকে জামায়াতকে বাদ দিতে তৃণমূল নেতারা পরামর্শ দেন।
বৈঠক সূত্র জানায়, বিএনপির রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে জামায়াতের প্রার্থী থাকার পরও বিএনপির মেয়র প্রার্থী জয়লাভ করেছেন। এতে প্রমাণিত হয় ভোটের রাজনীতিতে জামায়াত বিএনপির জন্য কোনও সমস্যা নয়। ফলে আগামী নির্বাচনের আগে দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ডাক দেওয়া ‘জাতীয় ঐক্য’ করতে জোট থেকে জামায়তকে বাদ দেওয়া দরকার।
জাতীয় ঐক্যের প্রসঙ্গ টেনে দুলু বলেন, ‘ড. কামাল হোসেন, একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীসহ আরও অনেকে বিএনপির সঙ্গে স্বাধীনতাবিরোধী দল জামায়াতকে বাদ দিয়ে জাতীয় ঐক্য করতে রাজি আছেন। ফলে এখন দলের নীতিনির্ধারকদের উচিত হবে জামায়াতকে বাদ দিয়ে সরকারের বাইরে থাকা ডান-বাম সব দলকে নিয়ে জাতীয় ঐক্য করা।’
রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর এ বক্তব্যকে সমর্থন করেন রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু। তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনে এখন জোট থেকে জামায়াতকে বাদ দিতে হবে।’
২০ দলীয় জোট থেকে জামায়াতকে বাদ দিতে জেলার নেতারাও এই দুই সাংগঠনিক সম্পাদকের বক্তব্যকে সমর্থন দেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বৈঠকে উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটি এক সদস্য বলেন, ‘তৃণমূল নেতারা জামায়াতকে বাদ দিতে পরামর্শ দিয়েছেন। পরে আমরা স্থায়ী কমিটির নেতারা বৈঠকে বসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো।’
বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘তৃণমূল নেতারা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। তাদের বক্তব্যে খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন প্রধান বিষয় ছিল।’
কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ।
সকালের সেশনের পর বেলা সাড়ে ৩টা থেকে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ২২টি সাংগঠনিক ইউনিটের নেতাদের সঙ্গে বিএনপি হাইকমান্ডের বৈঠক শুরু হয়।