নতুন ভোটার টানতে আ’লীগের উদ্যোগ

36

কাজিরবাজার ডেস্ক :
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নতুন ভোটারদের টানতে তৎপরতা শুরু করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এ লক্ষ্যে বেশ কিছু কর্মপরিকল্পনা নিয়ে দলের নিজস্ব গবেষণা সেল সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) কার্যক্রমও শুরু করেছে। তাদের এ কাজের তদারকি করছেন শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকী ববি। আর এ কাজে সহায়তা দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। সিআরআই তরুণদের পছন্দ-অপছন্দ জেনে নিতে বিভিন্ন গবেষণাও শুরু করেছে। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়াবান্ধব নতুন ভোটারদের টার্গেট করা হয়েছে। তাই নতুন ভোটারদের দৃষ্টিআকর্ষণ করে পারে—এমন কিছু বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়ে কাজ করবে সরকার। তাদের কাছে টানতে নির্বাচনি ইশতেহারেও আকর্ষণীয় কিছু ঘোষণা করবে ক্ষমতাসীন দলটি। এ লক্ষ্যে মিডিয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে দলীয় ইশতেহার তুলে ধরে সব কেন্দ্রীয় নেতাকে ফেসবুক লাইভে আসতেও বলা হয়েছে।
জানা গেছে, সম্প্রতি সিআরআই ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এইচ টি ইমাম, দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে বৈঠক করেছেন রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকী ববি। বৈঠকে তরুণ-নতুন ভোটারদের আকৃষ্ট করাসহ বেশকিছু পদক্ষেপ নিতে সরকারকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এরআগে নতুন ভোটারদের পছন্দ-অপছন্দ কী, তা জেনে নেওয়ার ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এই বিষয়ে সিআরআইকে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, সিআরআইকে নতুন ভোটারদের মানসিকতা ও কোন কোন বিষয়ে আগ্রহ বেশি, প্রাথমিকভাবে তার ওপর সার্ভে করতে বলেছেন ববি। ওই বৈঠকে তরুণ-নতুন ভোটারদের আকৃষ্ট করতে কী পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে, তরুণদের নিয়ে কীভাবে কাজ করতে হবে, তার ওপর নির্মিত কিছু ডকুমেন্টারিও দেখানো হয়।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এসব সার্ভে তরুণ ও নতুন ভোটারদের আগ্রহ কোন বিষয়ে, তাদের মানসিকতা বোঝা, সোশ্যাল মিডিয়ায় কী ধরনের বিষয়ের ওপর তারা সময় কাটায়, ভবিষ্যতে কী ধরনের প্রযুক্তি তারা আশা করে, এগুলো তুলে আানার কাজ করছে সিআরআই।
এদিকে, গত মে মাসে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ঘোষণা দিয়েছেন, আওয়ামী লীগের এবার টার্গেট নতুন ভোটার যারা হবেন, তারা। তাদের ভোট টানতে কাজও করা হচ্ছে বলে জানান এই নেতা।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ানির্ভর কার্যক্রম বাড়াবেন আওয়ামী লীগের সব স্তরের নেতাকর্মীরা।’ তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে নতুন ভোটাররা আওয়ামী লীগের প্রধান টার্গেট। এর বড় অংশ সোশ্যাল মিডিয়ানির্ভর। সোশ্যাল মিডিয়ায় কার্যক্রম বাড়িয়ে ওই অংশটি ধরতে চাই আমরা।’
জানা গেছে, আগামী নির্বাচনের আগে সোশ্যাল মিডিয়া ভিত্তিক কর্মকাণ্ড বাড়াতে দলের সব স্তরের নেতাকর্মীকে জানানো হয়েছে। নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র জানিয়েছে, দলের বিভিন্ন ফোরামে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্তব্য করেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের সাধারণ নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নরেন্দ্র মোদীর দল বিপুল ভোটে জয়লাভ করার অন্যতম নিয়ামক হিসাবে কাজ করেছে সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাক্টিভিটি। তাই এই মিডিয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে আওয়ামী লীগের সব কেন্দ্রীয় নেতাকে ফেসবুক লাইভে আসতে বলা হয়েছে। এর ফলে তরুণ ও নতুন ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা সহজ হবে। তাদের আগ্রহের কথা, মানসিকতা উঠে আসবে।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘স্যোশাল মিডিয়া বর্তমানে একটি শক্তিশালী মাধ্যম। এখানে ভালো খবর যেভাবে দ্রুত ছড়ায়, অপপ্রচারও তত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।’ তিনি বলেন, ‘এখানে আওয়ামী লীগের সব স্তরের নেতাকর্মীর কার্যক্রম বাড়াতে বলা হয়েছে।’
দলের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়াকে এখন অস্বীকার করার উপায় নেই। এটি শক্তিশালী মাধ্যমে পরিণত হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এ মাধ্যমে তরুণদের একটি বড় অংশ ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। এই মাধ্যম ব্যবহার করে তরুণদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায় আওয়ামী লীগ।’