বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের বয়স সীমা নির্ধারণ ॥ ৩৫ বছরের পর কেউ আর শিক্ষক হতে পারবেন না

164

কাজিরবাজার ডেস্ক :
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের বয়সসীমা ৩৫ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে। যোগদানের জন্য সর্বোচ্চ ৩৫ বছর বয়সের পর কেউ আর শিক্ষক হতে পারবেন না। গত বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ নির্দেশনা বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) অফিসে পাঠানো হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আদালতের নির্দেশে এনটিআরসিএ থেকে বেসরকরি শিক্ষকদের চাকরিতে যোগদানের বয়সসীমা নির্ধারণ করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়। এর প্রেক্ষিতে গত ৩ জুন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতের সচিব মো. সোহরাব হোসাইনের সভাপত্বিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে একটি সভা হয়। সভায় এনটিআরসিএর দেয়া প্রস্তাবনা অনুযায়ী বেসকারি শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ৩৫ বছর করার পক্ষে মত দেয়া হয়। সেই মতামতের প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আদালতের নির্দেশনা ও এমপিও নীতিমালার আলোকে বেসরকারি শিক্ষকদের যোগদানের বয়স ৩৫ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আলোকে শূন্য আসনে নিবন্ধিত প্রার্থীদের তালিকা প্রণয়ন করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ১৫তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তিতে বয়সসীমার বিষয়টি উল্লেখ করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক) মো. জাবেদ আহমেদ বলেন, নিবন্ধিত প্রার্থীদের যোগদানের বয়সসীমা ৩৫ বছর চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত নির্দেশনা এনটিআরসিতে পাঠানো হয়েছে। তার আলোকে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালিকা প্রণয়ন করা হবে।
সূত্র জানায়, আদালতে মামলাজনিত কারণে গত দুই বছর ধরে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। ফলে যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগে সুপারিশ করলেও তাদের নিয়োগ দেয়া যাচ্ছে না। সারাদেশে বেসরকারি স্কুল-কলেজে প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এতে দেশের প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই শিক্ষক সংকট দেখা দিয়েছে।
বর্তমানে এনটিআরসিএর নিবন্ধিত প্রায় ছয় লাখ প্রার্থী চাকরির অপেক্ষায় রয়েছেন। বিভিন্ন সময়ে শিক্ষক নিবন্ধিত প্রার্থীরা নানাভাবে বঞ্চিত হয়ে এ পর্যন্ত ২৫০টি মামলা করেন। গত ১৪ ডিসেম্বর ১৬৬টি মামলার রায় দেন আদালত।
রায়ে সাতটি নির্দেশনা দেয়া হয়। এর মধ্যে প্রধান কয়েকটি হলো- বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নির্ধারণ করা, প্রতি বছর নিবন্ধন পরীক্ষার আয়োজন, তিন মাসের মধ্যে জাতীয়ভাবে নিবন্ধিত সব শিক্ষকের একটি মেধাতালিকা প্রণয়ন। এনটিআরসিএ কর্তৃক সুপারিশকৃত শিক্ষকদের যোগদান করতে দেয়া না হলে ৬০ দিনের মধ্যে সেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি বাতিল করে সংশ্লিষ্ট বোর্ডের তত্ত্বাবধানে পুনরায় কমিটি গঠন করা।
এনটিআরসিএর সদস্য মো. হুমায়ন কবির বলেন, শিক্ষক নিয়োগের বয়সসীমা নির্ধারণ সংক্রান্ত নির্দেশনা রবিবার আমরা পেয়েছি। ইতোমধ্যে শূন্য আসনে তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। ঈদের আগে ১৫তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হতে পারে।