কমলগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের কোনাগাঁও গ্রামে তিনদিনব্যাপী মণিপুরি লাই-হারাওবা উৎসব-২০১৮ শুরু হয়েছে। উজাও- লাইরেম্বী লাইশং মন্দির প্রাঙ্গণে গত বৃহস্পতিবার (১৭ মে) সন্ধ্যা ৭টা থেকে মৈতৈ মুণিপুরি জনগোষ্ঠীর অতি প্রাচীনতম এ ধর্মীয় উৎসব শুরু হয়। এ উৎসবে ভারত থেকে ১৯ সদস্যের একটি টিম অংশ নিয়েছে।
উদয়ন সংঘের আয়োজনে তিনদিনব্যাপী এ উৎসবে ধর্মীয় প্রথা অনুযায়ী প্রতিদিন মাইবীর ঐশ্বরীক বাণীসহ লোকগান, লোকনৃত্য ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পরিবেশিত হবে। কমিটির আহবায়ক হামোম তনুবাবু ও সম্পাদক এ হেমন্ত জানান মুণিপুরি লাই-হারাওবা উৎসব এটি মূলত একটি নৃত্য-উৎসব। এই নৃত্যকে মণিপুরি নৃত্যশৈলীর একটি সুপ্রাচীন নৃত্যধারা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মুণিপুরি সমাজে প্রচলিত অন্যতম প্রাচীন লোকনৃত্যানুষ্টান লাই হারাওবা জাগোই থেকেই এসেছে এই “লাই-হারাওবা উৎসব”।
এই নৃত্যে প্রকৃতি পূজার পরিচয় মেলে। লাই শব্দের অর্থ দেবতা, হারাওবা অর্থ আনন্দ এবং জাগোই অর্থ নৃত্য। এর ইতিহাস এরকম সৃষ্টিকর্তা যখন জড় ও জীব পৃথিবী সৃষ্টি করলেন এবং পরবর্তীকালে ¯্রষ্টার মূর্তির অনুকরণে মনুষ্য সৃষ্টিতে সফলতা পেলেন তখন দেবদেবীগণ আনন্দে যে নৃত্য প্রকাশ করেছিলেন তারই নাম দেয়া হয়েছে হারাওবা নৃত্য। লাই হারাওবা নৃত্যে পৃথিবীর সৃষ্টিতত্ত্ব থেকে শুরু করে গৃহায়ন, শস্যবপন, জন্মমৃত্যু সবকিছুই নৃত্য ও সঙ্গীতের সুর লহরীতে ঝংকৃত হয়। এ নৃত্যের আঙ্গিক অংশগুলো যেমন লৈশেস জাগোই (সৃষ্টিনৃত্য), লৈতা জাগোই (গৃহায়ন নৃত্য) লৈসা জাগোই (কুমারী নৃত্য) প্রভৃতি মুণিপুরি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে লোক সংস্কৃতি হিসেবে প্রদর্শিত হয়। যাহা এ উৎসবে পরিবেশিত হচ্ছে।