স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেটে বজ্রপাতে ৯ জনের মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার সুনামগঞ্জের শাল্লায় ২ জন, হবিগঞ্জে ৬ জন এবং গোয়াইনঘাটে ১ জন বজ্রপাতে মারা যান।
প্রতিনিধিরা জানান, সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার কালীকুটা হাওরে নিহত হয়েছেন কৃষক আলমগীর হোসেন (২৩)। তিনি উপজেলার আটগাঁও ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের ইদ্রিস আলী (যুক্তি মিয়া) পুত্র। গতকাল বুধবার দুপুর ১২টায় মাসতুলি হাওর থেকে বাড়িতে আসার সময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন। এদিকে ধর্মপাশায় বজ্রপাতে জুয়েল মিয়া (১৮) নামের আরো এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত জুয়েল মিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের দুর্বাকান্দা গ্রামের আব্দুর রহিমের পুত্র। বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় উপজেলার কাইল্যানি হাওরে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানান, জুয়েল মিয়া কাইল্যানি হাওরে ধান কাটছিলেন। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাত হলে জুয়েল মিয়া গুরুতর আহত হন। এ সময় তার সাথে থাকা শ্রমিকেরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করে।
সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাবিবুল্লাহ জুয়েল বলেন, পৃথক বজ্রপাতের ঘটনায় ২ জন নিহত ও একজন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
অপরদিকে, হবিগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতে ধান কাটা শ্রমিকসহ ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে জেলার বানিয়াচং, নবীগঞ্জ, লাখাই ও মাধবপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এসব হতাহতের ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন-সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার দত্তকান্তি গ্রামের জয়নাল মিয়া (৬০), সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার দাইরপুর গ্রামের স্বপন দাস (৩৫), নবীগঞ্জ উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের বৈলাকীপুর গ্রামের হরি পালের ছেলে নারায়ণ পাল (৩৫), লাখাই উপজেলার তেঘরিয়া গ্রামের মৃত আব্দুস শহিদের পুত্র ছুফি মিয়া (৩৫), নবীগঞ্জ উপজেলার বড় বাকৈর ইউনিয়নের আমড়াখাই গ্রামের হাবিবুর রহমানের পুত্র আবু তালিব (২০) ও মাধবপুর উপজেলার পিয়াইম গ্রামের রামকুমার সরকারের পুত্র জহরলাল সরকার (২৩)। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুরে জেলার বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতসহ প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। বৃষ্টির মধ্যে বানিয়াচং উপজেলার সৈদরটুলা এলাকায় ধান কাটার সময় বজ্রপাত হলে ঘটাস্থলেই জয়নাল মিয়ার মৃত্যু হয়। তিনি সিরাজগঞ্জ থেকে সৈদরটুলা গ্রামের তাহেদ মিয়ার বাড়িতে ধান কাটা শ্রমিক হিসেবে এসেছিলেন। জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অফিসের বজ্রপাতের তথ্য সংগ্রহের দায়িত্বরত কর্মী আব্দুল নূর বজ্রপাতে ৬ জনের মৃত্যুর ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ বিষয়ে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ফজলুল জাহিদ পাভেল বলেন, নিহতদের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।
এদিকে, সিলেটের গোয়াইনঘাটের তোয়াকুল ইউনিয়নের লাকি কামারগাওয়ে বজ্রপাতে ১ জন নিহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার দুপুর ২টায় ইউনিয়নের লাকি কামারগাও গ্রামে হঠাৎ বজ্রপাতে এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম নুরুল হক (৩০)। তিনি পার্শ্ববর্তী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মোড়ারগাও গ্রামের চন্ডু মিয়ার পুত্র। জানা যায়, ঘটনার সময় নুরুল গোয়াইনঘাটের তোয়াকুলের লাকি কামারগাওয়ে তার মামার বাড়ি যাচ্ছিলেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে নিহতের নিকটাত্মীয়দের কাছে হস্তান্তর করেছে। গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত কুমার পাল জানান, তোয়াকুলের লাকি কামারগাওয়ে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ঝড়ে কাচা ঘরবাড়ি, গাছপালা উপড়ে ফেলার খবর পাওয়া গেছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির সঠিক কোন পরিসংখ্যান এখনও পাওয়া যায়নি।