দেশে রেকর্ড পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন

49

কাজিরবাজার ডেস্ক :
দেশে রেকর্ড পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ পরিমাণ ১০ হাজার ১৩৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মঙ্গলবার রাত ১১টায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ১০ হাজার ১৩৭ মেগাওয়াট, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন। এর আগে গত ১৯ মার্চ উৎপাদন ছিল ১০ হাজার ৮৪ মেগাওয়াট।
বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এবারের গ্রীষ্মে দেশে দৈনিক বিদ্যুতের চাহিদা নিরূপণ করা হয়েছে ১২ হাজার মেগাওয়াট। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী বুধবার দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ১০ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট।
সরকারের বিদ্যুৎ উপাদনের লক্ষ্য আরও উপরে জানিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব আহমেদ কায়কাউস বলেন, গত অক্টোবরে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় সর্বোচ্চ ৯ হাজার ৫০৭ মেগাওয়াট, অর্থাৎ আমরা ইতোমধ্যে আরও ৫০০ মেগাওয়াট অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সক্ষমতার যে নির্ণায়ক বা পরিচায়ক সেটা এখনও ঘটেনি। আমরা ন্যূনতম ১১ হাজার মেগাওয়াট বা এর বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারব।
‘আমরা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড এবং অন্যান্য কোম্পানির মাধ্যমে প্রতি মাসে তিন থেকে সাড়ে ৩ লাখ গ্রাহককে বিদ্যুৎ সংযোগ দিচ্ছি। ফলে চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ মাসে ঝড়-বৃষ্টির কারণে চাহিদা কমেছিল, আরেক দিকে (বিদ্যুৎ লাইনের উপর গাছ পড়ে) উৎপাদন ব্যাহত হয়েছিল।’
বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সরকার পর্যায়ক্রমে সরবরাহ ক্ষমতা বৃদ্ধি করছে জানিয়ে বিদ্যুৎ সচিব বলেন, এখন অনেকে বলেন গ্রামে সেভাবে সরবরাহ আসছে না। কেন আসছে না, এরও একটা ব্যাখ্যা আমি দেই।
সেটি হচ্ছে- আপনাকে যদি নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হয় তাহলে আমাদের স্ট্যান্ডার্ড লাইন তৈরি করতে হবে। আমরা লাইনগুলোকে স্ট্যান্ডার্ড করে যাচ্ছি, একই সঙ্গে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়ে যাচ্ছি।
‘অপশন কিন্ত দুটি- একটি হচ্ছে আপনার বাসায় কুপি বাতি জ্বলবে আমি লাইনটি স্ট্যান্ডার্ড করব, তারপর আপনাদের দেব। আর আরেকটি হচ্ছে- এখন আপনি কুপি বাতির সঙ্গে ৫-১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎও চালাতে পারবেন। আমি মনে করি দ্বিতীয় অপশনটাই ভালো, পর্যায়ক্রমে ডিস্ট্রিবিউশন কাজগুলো করে যাচ্ছি।
কায়কাউস আরও বলেন, সরকার নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে শুধুমাত্র পল্লী বিদ্যুতের সেবার মান বৃদ্ধির জন্য ডিস্ট্রিবিউশন লাইন উন্নয়ন করা হচ্ছে।
আগামী মাসে আরও এক হাজার মেগাওয়াট বাড়তি বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে জানিয়ে সচিব বলেন, জুনে ভারত থেকে আরও ৫০০ মেগাওয়াট আমদানি করা হবে। সব মিলিয়ে জুনে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা আরও দুই হাজার মেগাওয়াট বেড়ে যাবে।
তিনি বলেন, আরও একটি সুখবর হল এলএনজি জাহাজ উপকূলে পৌছেছে। এখন গ্যাসের অভাবে যে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ ছিল সেগুলো সচল হবে। অর্থাৎ প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটানোর জন্য উৎপাদন সক্ষমতা তৈরি করতে পারব।
বিদ্যুৎ সচিব বলেন, গত ১৫-২০ দিন কোনো লোডশেডিং দেইনি। ফোর্স লোডশেডিং হয়নি, যেটা হয়েছে সেটা ইন্টারাপশন।’
আসছে রমজানে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকবে বলেও নিশ্চয়তা দেন সচিব।
পাওয়ার সেলের তথ্য অনুযায়ী, বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১৬ হাজার ৪৬ মেগাওয়াট। গ্রাহক সংখ্যা দুই কোটি ৮৭ লাখ। বিদ্যুৎ সুবিধা পাওয়া জনগোষ্ঠী ৯০ শতাংশ। দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনার আওতায় সরকার ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট ও ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উপাদন করবে।