কাজিরবাজার ডেস্ক :
অবৈধ সম্পদ অর্জন ও দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত-সমালোচিত পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আগামী ৩ মে তাকে দুদকে হাজির হতে হবে।
ডিআইজি মিজানকে তলবের চিঠি বুধবার দুদক থেকে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বরাবর পাঠানো হয়েছে। ৩ মে সকাল সাড়ে নয়টায় দুদকের সেগুনবাগিচার প্রধান কার্যালয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তাকে হাজির হতে বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইজিপি বরাবর অনুরোধ জানিয়েছে দুদক।
ডিআইজি মিজানুর ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। নানা অভিযোগে গত জানুয়ারির শুরুর দিকে তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদরদপ্তরে সংযুক্ত করা হয়।
ডিআইজি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে এক নারীকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে বিয়ে করার অভিযোগ উঠে। ওই নারীর অভিযোগ, পান্থপথের স্কয়ার হাসপাতালের কাছে তার বাসা থেকে তাকে কৌশলে গত বছরের জুলাই মাসে তুলে নিয়ে যান ডিআইজি মিজান। পরে বেইলি রোডের তার বাসায় নিয়ে তিন দিন আটকে রাখেন। এরপর বগুড়া থেকে তার মাকে ১৭ জুলাই ডেকে আনা হয় এবং ৫০ লাখ টাকা কাবিননামায় মিজানকে বিয়ে করতে বাধ্য করা হয়। পরে লালমাটিয়ার একটি ভাড়া বাড়িতে তাকে স্ত্রী হিসেবে রাখেন মিজান। অথচ মিজান পূর্ব-বিবাহিত।
ওই নারী আরও জানান, কয়েক মাস কোনো সমস্যা না হলেও ফেসবুকে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে একটি ছবি তোলার পর ক্ষেপে যান মিজান। বাড়ি ভাঙচুরের একটি মামলায় তাকে গত ১২ ডিসেম্বর কারাগারে পাঠানো হয়। সেই মামলায় জামিন পাওয়ার পর মিথ্যা কাবিননামা তৈরির অভিযোগে আরেকটি মামলায় তাকে আটক দেখানো হয়।
দুটি মামলায় জামিনে বেরিয়ে আসার পর পুলিশ কর্মকর্তা মিজানের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তোলেন ওই নারী।
গত ৮ জানুয়ারি পুলিশ সপ্তাহ শুরুর আগেই বিষয়টি নিয়ে তুমুল আলোচনা হয়। এই ঘটনা তদন্তে পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মঈনুর রহমান চৌধুরীকে প্রধান করে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার শাহাবুদ্দিন কোরেশী এবং পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি (সংস্থাপন) হাবিবুর রহমানকে নিয়ে কমিটি করার কথাও জানানো হয়।
এই কমিটি বেশ গোপনীয়তার সঙ্গে ২৬ ফেব্রুয়ারি পুলিশের মহাপরিদর্শক জাবেদ পাটোয়ারীর কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়। আর দুই দিন পর এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হয় গণমাধ্যমে। তবে সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার খবর পাওয়া যায়ন্ এর মধ্যেই মিজানুরের বিরুদ্ধে এক সংবাদ পাঠিকা প্রাণনাশের হুমকি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ তুলেছেন। তবে এ ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসন এখনও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এর মধ্যেই তাকে তলব করল দুদক।