জামালগঞ্জে ধান কাটার শ্রমিক সংকট, দুশ্চিন্তায় কৃষকরা

55

নিজাম নুর জামালগঞ্জ থেকে :
জামালগঞ্জ উপজেলার সব হাওরে এবার বোরো ধানের ফলন ভালো হয়েছে। আর কিছুদিন পরেই শুরু হবে ধান কাটার মহা-উৎসব।
উপজেলার কিছু সংখ্যক হাওরে আগুল্যা জাতের কিছু ধান কাটার খবর পাওয়া গেছে। তবে তা একেবারে মোটের উপরে নগণ্য।
গেল বছরে ফসল হানির পর কৃষকদের সারা বছর অনেক দু:খ কষ্টে দিনাতিপাত করতে হয়েছে। অনেক কৃষক দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ঋণ করে জমিতে ধান ফলিয়েছেন। গত বছরের তুলনায় চলতি বছর প্রাকৃতিক অবস্থা ভালো থাকায় ও হাওর রক্ষা বাঁধ হওয়ায় কৃষকরা কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছেন।
উপজেলা জুড়ে ধান কাটার শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। বালু পাথর কয়লা কাজ চলমান থাকায় শ্রমিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, জামালগঞ্জে দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিক কাজ করে। এদের মধ্যে পাবনা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, সিলেট সহ তাহিরপুর উপজেলার লাউরগড় এলাকার শ্রমিক ধান কাটার কাজ করত। স্থানীয় ভাবেও গ্র“পে গ্র“পে বিভক্ত হয়ে ধান কাটে শ্রমিকরা। এসব শ্রমিকদের সাথে যোগাযোগ করেও শ্রমিক জোগাড় করতে পারছেন না বেশীর ভাগ কৃষক।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বেহেলীর ইউপি সদস্য মশিউর রহমান বলেন, সর্দারগণ ধান কাটার শ্রমিক সংকট দেখিয়ে কৃষকদের কাছে বাড়তি মজুরি ও সুবিধা দাবি করছেন।
পাগনার হাওরের লক্ষ্মীপুর গ্রামের কৃষক সুরমান উদ্দিন বলেন বলেন, এ বছর শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। তাহিরপুর এলাকায় কয়লা ও বালুর কাজ চলমান থাকায় শ্রমিক ধান কাটতে আসছে না। শ্রমিক না পেলে ধান নিয়ে দুর্ভোগে পড়তে হবে। তিনি বৈশাখ মাসের জন্য কয়লা বালুর কাজ বন্ধ রাখার দাবি জানান।
হালির হাওর পারের মদনাকান্দি গ্রামের কৃষক দেবাশীষ বলেন, আমি ৬ হাল বোরো জমি করেছি এখন পর্যন্ত ধান কাটার বেপারি বা শ্রমিক পাইনি। নেত্রকোণার এক পার্টির সাথে আলোচনা করেছি তারা ৮ শত থেকে ১ হাজার টাকা রোজ চায়। সব সময় ৭ ভাগা ধানে ধান কাটলেও এখন বেপারি না পাওয়ায় বেশী টাকা দাবি করছে। শ্রমিক না পাওয়ায় দুশ্চিন্তায় আছি।
ভীমখালী ইউনিয়নের কৃষক তহুর মিয়া বলেন, বেপারি পাইনি। বেপারি না পেলে অধিক মূল্যে ধান কাটতে হবে এতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হব।
একদিকে শ্রমিক জোগাড়ের চেষ্টায় কৃষকরা বিভিন্ন জায়গায় ধরণা দিচ্ছেন অন্যদিকে তাদের কষ্টার্জিত ফসল ঘোলায় তোলার জন্য প্রস্তুতি সম্পন্ন করছেন। তারা ধান শুকানোর জন্য খলা তৈরী, মাড়াই মেশিন মেরামত করা, ধান বহন করার জন্য বস্তা, উড়া, দুছুন, ধান প্রক্রিয়াজাতের জন্য কুলা, গো-খাদ্য ধানের খড় শুকানোর জন্য হোকল, ধান কাটার জন্য কাচি সহ গৃহস্থালির সকল উপকরণ ঠিকটাক করে রাখছেন কৃষকগণ।