স্টাফ রিপোর্টার :
দক্ষিণ সুরমা বরইকান্দিতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে ২ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন মামলা বা গ্রেফতার হয়নি। নিহত বরইকান্দি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি বরইকান্দির মাঝপাড়া গ্রামের মাসুক মিয়া (৫০) ও একই এলাকার ব্যবসায়ী বাবুল মিয়ার (৩৫) দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
বুধবার বাদ জোহর বরইকান্দি ৩নং রোডের জামে মসজিদে বাবুল মিয়ার নামাজের জানাযা শেষে এবং গতকাল একই সময়ে রাজারগাঁও রায়েরগ্রাম স্কুল মাঠে মাসুক মিয়ার নামাজের জানাযা শেষে নিহত দু’জনের লাশ যার যার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়। এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর পুলিশ ময়না তদন্ত শেষে নিহত দু’জনের লাশ তাদের নিজ নিজ আত্মীয় স্বজনের কাছে হস্তান্তর করে। তবে এ ঘটনায় রাতে মামলা দায়েরের সম্ভবনা রয়েছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে, ঘটনার পর থেকে বরইকান্দি ১০ রোডের পুরুষশূন্য রয়েছে। তারা গ্রেফতার আতংকে ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। অরদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বরইকান্দি ৩, ৪ ও ১০নং রোডে যেকোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশের এপিসি গাড়ীসহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ফজল জানান, এ ঘটনায় এখনো কেউ মামলা করেনি। এলাকায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ওসি জানান, সংঘর্ষকালীন সময়ে ব্যবহৃত অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা করছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত সোমবার রাতে বরইকান্দি ১০ নম্বর রোডের দুখিরপাড়ার বাসিন্দা কোম্পানীগঞ্জের তেলিখাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ আলফু মিয়ার ছেলের সঙ্গে বরইকান্দি এলাকার ৩ নম্বর রোডের মাঝপাড়া এলাকার বাসিন্দা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গৌছ মিয়ার ছেলের কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে রাতেই আওয়ামী লীগ নেতা গৌছ মিয়া বিপুল সংখ্যক লোকজন নিয়ে দুখিরপাড়ায় আলফু মিয়ার বাড়িতে হামলা করেন। তখন দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। এ সময় অন্যান্য এলাকার লোকজন মিলে উভয় পক্ষকে নিবৃত্ত করেন। তুচ্ছ এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত মঙ্গলবার সকালে সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের কথা ছিল। কিন্তু সকাল হওয়ার সাথে সাথেই পাল্টে যায় দৃশ্যপট। কোম্পানীগঞ্জ থেকে চেয়ারম্যান আলফুর পক্ষে বিপুল সংখ্যক লোক চলে আসেন বরইকান্দিতে। সকালে তাদেরকে সাথে নিয়ে আলফু চেয়ারম্যান সকাল ৯ টার দিকে আওয়ামী লীগ নেতা গৌছের বাড়িতে এসে হামলা চালান। এ সময় দুই পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষ চলাকালিন সময়ে গুলি বিনিময় ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ হয়। এ সময় বরইকান্দি এলাকার রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষ চলাকালিন সময়ে আওয়ামী লীগ নেতা গৌছ মিয়ার পক্ষের মাসুক মিয়া ও বাবুল মিয়া নিহত হন। টানা আড়াই ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। আহতদের মধ্যে সুজেল আহমদ, রুহেল মিয়া, সলিমুদ্দিন, তৈয়ব আলী, আবুল কাহের, নাজিম উদ্দিন, আহমদ হোসেন, তাজুল ইসলাম, ইলিয়াস ও দুলাল আহমদকে ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি আহতদের বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়।