কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও ইবতেদায়ি পরীক্ষায় নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন বাতিল হচ্ছে। প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় নীতিগতভাবে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই সঙ্গে পিইসি পরীক্ষায় নজরদারি বাড়াতে পরীক্ষা পদ্ধতিতেও একাধিক পরিবর্তন আনা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, সম্প্রতি এসএসসি পরীক্ষায় প্রায় প্রতিটি প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ রয়েছে। এতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ড নিয়ে দেশজুড়ে বির্তক শুরু হয়। এ কারণে পিইসিতে প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে এমসিকিউ (নৈর্ব্যক্তিক) তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, পঞ্চম শ্রেণির পাবলিক পরীক্ষায় এমসিকিউ প্রশ্ন তুলে দেয়ার চিন্তা-ভাবনা চলছে। নকলমুক্ত সুষ্ঠু পরিবেশে পরীক্ষা আয়োজন করতে সব চেষ্টায় করা হচ্ছে। যাতে পরীক্ষায় নিয়ে বির্তক না হয়।
জানা গেছে, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির মাসিক সমন্বয় সভায় পরীক্ষা পদ্ধতি সংস্কারের কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এছাড়া শিক্ষানীতি অনুযায়ী শতভাগ সৃজনশীল প্রশ্নে পরীক্ষা আয়োজন, প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে সফটওয়্যারের মাধ্যমে আট দিনের মধ্যে প্রশ্ন বিতরণ (আগে ২৫ দিন সময় প্রয়োজন ছিল), ছয় সেট প্রশ্নপত্রের বদলে আট সেট তৈরি সিদ্ধান্ত হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজারের সভাপতিত্বে আয়োজিত ওই সভায় মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরসহ প্রাথমিক শিক্ষা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, পিইসি থেকে নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন তুলে দিতে সকলে একমত হয়েছেন। নৈর্ব্যক্তিকের পরিবর্তে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন দেয়া হতে পারে। পাশাপাশি আগামী নভেম্বরে আয়োজিত এ পরীক্ষা পদ্ধতিতে আরও কয়েকটি পরিবর্তন আনা হবে। এ লক্ষ্যে ৭ ফেব্রুয়ারি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সভা ডাকা হয়েছে। সেখানে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. গিয়াস উদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, আগে সব পাবলিক পরীক্ষা লিখিতভাবে অনুষ্ঠিত হতো। পরীক্ষা পদ্ধতি সহজীকরণ করতে নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
বর্তমানে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা মূল্যায়ণ করলে দেখা যাবে যে, নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নগুলো পরীক্ষার নির্ধারিত সময়ের আগে ফাঁস হচ্ছে। এ কারণে প্রাথমিকের সমাপনি- ইবতেদায়িতে নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন তুলে দিয়ে লিখিত প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, নৈর্ব্যক্তিক বাদ দিয়ে কী ধরনের রচনামূলক প্রশ্ন যুক্ত হবে তা নির্ণয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সে অনুয়ায়ী প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর নেপকে (জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি) সঙ্গে নিয়ে কাজ শুরু করেছে।
উল্লেখ্য, প্রাথমিকের ছয়টি বিষয়ের মধ্যে বাংলায় ১০, ইংরেজিতে ২০, গণিতে ২৪, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়ে ৫০, প্রাথমিক বিজ্ঞানে ৫০ ও ধর্ম বিষয়ে ৫০ নম্বরের এমসিকিউ প্রশ্নপত্র রাখা হতো। কিন্তু নতুন নির্দেশনার আলোকে এমসিকিউ বাদ দিয়ে ওসব জায়গায় রচনামূলক প্রশ্ন সংযুক্ত করা হবে।