গোলাপগঞ্জে দিপু হত্যাকান্ড ॥ প্রধান আসামীর স্ত্রী জেল গেইটে আটক, খুনের দায় স্বীকার

105

সেলিম হাসান কাওছার গোলাপগঞ্জ থেকে :
গোলাপগঞ্জে তরুণ টেলিকম ব্যবসায়ী তোফায়েল আহমদ দিপু হত্যাকান্ডের প্রধান আসামীর স্ত্রী সাজনা বেগম (৪০) কে সিলেট জেল গেইট থেকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃত সাজনা বেগম দিপু হত্যা মামলার ১ম আসামী আলফাছ জাহিদ উরফে অফুল মিয়ার স্ত্রী। পুলিশ এ পর্যন্ত আলোচিত এই মামলার একই পরিবারের ৩জনকে আটক করেছে। তারা হলেন নিহতের আপন চাচা অপুল,চাচী সাজনা ও চাচাতো ভাই অনিক। বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজ স্বামী ও ছেলেকে দেখতে গিয়ে আসামী দেখার রুমেই পুলিশের হাতে আটক হন আত্মগোপনে চলে যাওয়া সাজনা। এ ঘটনার পর সাজনা বেগমের স্বামী মামলার প্রধান আসামী অফুল মিয়া ও ছেলে অনিক আহমদকে আটকের পর আত্ম গোপনে চলে যান প্রধান আসামীর স্ত্রী সাজনা বেগম। পুলিশও তাকে কুথাও খুঁজে পাচ্ছিল না। গতকাল শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে সাজনা বেগমকে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে পুলিশ। এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মীর আবুন নাছেরের সাথে বার বার আলাপ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি রহস্যজনক কারণে মুখ খুলতে চাননি। উল্লেখ্য ২০১৭ সালের ২৪ শে ডিসেম্ভর বরিবার নিহত দিপু প্রতিদিনের মত দোকানের উদ্দেশ্য বাড়ী থেকে বের হয়। আর বাড়ী ফিরেনি। ২৫শে ডিসেম্ভর সোমবার সকালে বাড়ীর প্রায় ৫শ গজ দূরের দীঘির পারে তার রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় এক গরু রাখাল। পরে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ তার ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে। লাশ উদ্ধারের সময় পুলিশ দিপুর আপন চাচাতো ভাই অনিক আহমদ (২৩) ও একই গ্রামের দিপুর বন্ধু লায়েক আহমদ (২৪) কে সন্দেহজনক ভাবে আটক করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অনিকের বাবা অপুল মিয়ার ঘর থেকে পুলিশ অপুল মিয়ার রক্তমাখা শার্ট ও লুঙ্গি উদ্ধার করে এবং অপুল মিয়ার ছেলে অনিকের রক্তমাখা সুসহ অপুল মিয়াকে আটক করে। অনেক জিজ্ঞাসাবাদের পর সন্দেহজনক ভাবে আটক হওয়া লায়েক আহমদসহ দুই’জনকে ছেড়ে দেয়া হয়। ২৭শে ডিসেম্ভর বুধবার রাতে নিহত দিপুর মা সালমা বেগম বাদী হয়ে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-১০। মামলায় দিপুর আপন চাচা অপুল মিয়া (৪৫) কে প্রধান আসামী এবং চাচাতো ভাই অনিক আহমদ (২০) কে ২ নং আসামী ও অজ্ঞাত ২/৩ জনকে আসামী করা হয়। এদিকে খুনিদের ফাঁসির দাবিতে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে লিফলেট ও পোষ্টার সাটানো হয়েছে। দিপু হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে সোস্যাল মিডিয়ায়ও তোলপাড় চলছে। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন নিহতের মা সালমা বেগম। চোখের পানি এখনও থামছে না। এ ব্যাপারে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ওসি একেএম ফজলুল হক শিবলীর সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান আটককৃত সাজনা বেগম খুনের দায় স্বীকার করেছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার মুখ না খুলার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন তিনি সম্ভবত কাজে ব্যস্ত আছেন।