বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ

218

কাজিরবাজার ডেস্ক :
স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে দীর্ঘ ১০ মাস পাকিস্তানে কারাবাস শেষে ১৯৭২ সালের এই দিনে তার স্বপ্নের স্বাধীন দেশের মাটিতে পা রাখেন স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা। ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) লাখো মানুষ এদিন প্রিয় নেতাকে বরণ করে নেয় উৎসবের আনন্দে। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী বাঙালি জাতির স্বাধীনতা আন্দোলন নস্যাৎ করতে গভীর রাতে হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠে। ‘অপারেশন সার্চলাইট’-এর নামে ওই রাতেই তারা নিরীহ-নিরস্ত্র বাঙালির ওপর বর্বর হামলা চালায়। ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের বাসভবন থেকে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে পাকিস্তানি হানাদাররা।
গ্রেফতারের পর তাকে স্বাধীনতার দাবি থেকে সরে আসতে বলা হয়। তা না হলে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেয়া হয়। কিন্তু স্বাধীনতা ছাড়া তিনি কোনো কিছু মানবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। গ্রেফতারের পর পাকিস্তানি বাহিনী বঙ্গবন্ধুকে পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে পাঠিয়ে দেয়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানের নির্জন-অন্ধকার কারাগারে শুরু হয় বঙ্গবন্ধুর বিচার। কারাগারের যে সেলে বঙ্গবন্ধুকে রাখা হয়েছিল, সেই সেলের পাশে কবরও খোঁড়া হয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবি ও প্রহসনের বিচার বন্ধ করতে প্রবল বিশ্ব জনমতের চাপের মুখে স্বৈরাচার পাকিস্তানি সরকার পিছু হটে। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ, বহু ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিজয় অর্জন করে। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক চাপে পাকিস্তান সরকার সদ্যভূমিষ্ঠ স্বাধীন বাংলাদেশের প্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান লন্ডন ও দিল্লি হয়ে ১০ই জানুয়ারি বিজয়ীর বেশে বিশেষ বিমানে বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখেন। এ সময় অস্থায়ী সরকার, আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধাসহ লাখো মানুষ বিমানবন্দরে পুষ্পবৃষ্টিতে বরণ করে নেন প্রিয় এই নেতাকে। বঙ্গবন্ধু তার প্রিয় মাতৃভূমিতে ফিরে মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসা আর শ্রদ্ধায় আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি নিজেই তার এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে আখ্যায়িত করেছিলেন ‘অন্ধকার হতে আলোর পথে যাত্রা’ হিসেবে। দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।