ছাতকস্থ লাফার্জের ২৩ শ্রমিকের চাকুরি পুনর্বহালের নির্দেশ

38

ছাতক থেকে সংবাদদাতা :
ছাতকস্থ লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট লিমিটেডে পরিবহন শ্রমিকদের চাকুরি পুনর্বহাল ও বকেয়া বেতন ভাতা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ২০১৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম শ্রম আদালত এ রায় প্রদান করেন।
জানা যায়, লাফার্জের পরিবহন শ্রমিকদের চাকুরি স্থায়ী করার দাবিতে ২০১৩ সালের ৯ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম ২য় শ্রম আদালতে আইআর মামলা নং ৩০থেকে ৫২/২০১৩ইং মোট ২৩টি মামলা দায়ের করেন। এতে লাফার্জ কর্তৃপক্ষ মামলার জবাব না দিয়েই সিভিল প্রসেডিওর কোর্টের অর্ডার নং ৭, রোল- ১১তে মামলা খারিজের আবেদন করেন। পরে মামলার শুনানী শেষে আদালত ২০১৪সালের ১০মার্চ তাদের আবেদন নামঞ্জুর করেন। এ আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকা শ্রম আপীল ট্রাইব্যুনালে লাফার্জ কর্তৃপক্ষ আপীল মামলা নং- ৭২ থেকে ৯৪/২০১৪ পর্যন্ত দায়ের করেন। এতে শ্রমিকদের চাকুরি স্থায়ীকরণের বিষয়ে হয়রানিমূলক জটিলতা সৃষ্টি হয়। আপীল চলাকালে মাননিয় আপীল ট্রাইব্যুনালে ২০১৪ সালের ১০ এপ্রিল শ্রমিকদের বেতন ভাতাসহ যাবতীয় সুবিধা আপীল নিষ্পত্তি পর্যন্ত বহাল রাখার নির্দেশ দিলেও কোম্পানী কর্তৃপক্ষ তা- না দিয়ে আবারো ঢাকায় হাইকোর্ট আদালতে একটি রিট মামলা নং ৩৫৩৯/২০১৪ দায়ের করেন। এদিকে আপীল ট্রাইব্যুনালে আপীল শুনানী শেষে ২০১৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর নি¤œ আদালতের রায় বহাল রাখেন। এ আদেশের বিরুদ্ধে কোম্পানী কর্তৃপক্ষ হাইকোর্ট বিভাগে আরেকটি রিট মামলা নং ৮৬৭২ থেকে ৮৬৯৪/২০১৪ পর্যন্ত দায়ের করেন। দীর্ঘদিন থেকে শ্রমিকদের হয়রানীতে আইনী মোকাবেলা করে ২০১৭ সালের ৩০মার্চ হাইকোর্ট লাফার্জের দায়েরি রুল ডিসচার্জ করে দেন। এতে চাকুরি স্থায়ীর মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য চট্টগ্রাম শ্রম আদালতকে নির্দেশ দেন হাইকের্ট। এদিকে শ্রমিকদের বেতন ভাতার বিরুদ্ধে কোম্পানীর করা রিট মামলা নং ৩৫৩৯/২০১৪ লাফার্জ কর্তৃপক্ষ স্বেচ্ছায় সারেন্ডার করে মামলাটি প্রত্যাহার করে নেন। এতে শ্রম আপীল ট্রাইব্যুনালের দেয়া বেতন ভাতার আদেশ বহাল থেকে যায়। কিন্তু শ্রমিকরা বেতন-ভাতা পায়নি। ফলে ২০১৭ সালের ২৮ আগষ্ট লাফার্জের পরিবহন শ্রমিক সংগ্রাম কমিটির সভাপতি খালেদ মিয়া বাদি হয়ে ঢাকা শ্রম আপীল ট্রাইব্যুনালে লাফার্জে বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার কন্ডেম্প মামলা নং ০৪/২০১৭ দায়ের করেন। যা এখন বিচারাধিন রয়েছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী শ্রম আদালতে বেতন ভাতাসহ চাকুরিতে পূনর্বহালের জন্য আবেদন জানায় শ্রমিকরা। এতে শুনানী শেষে শ্রম আদালতের চেয়ারম্যন ও সিনিয়র জেলাও দায়রা জজ মুক্তার হোসেন ২০১৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর শ্রমিকদের যাবতীয় বকেয়া পরিশোধসহ চাকুরিতে যোগদানের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। শ্রমিক নেতা খালেদ মিয়া জানান, কোম্পানী কর্তৃপক্ষ শ্রমিক হয়রানীর সব ধরনের কৌশল অবলম্বন করে যাচ্ছেন। তারা আদালত অবমানাসহ শ্রমিকদের ঘামের অর্জিত বিনিময় দিতেও তারা টালবাহানা করছে। আদালতের নির্দেশ মোতাবেক পরিবহন শ্রমিকদের চাকুরিতে যোগদান ও বেতন ভাতাসহ আনুষাঙ্গিক সুবিধা প্রদান প্রসঙ্গে ৭ জানুয়ারি লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট লি: এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবরে একটি দরখাস্ত করেছেন তিনি। শ্রম আদালত কর্তৃক এ নির্দেশ দেয়ায় কর্তৃপক্ষ আদালতের নির্দেশ পালনের জন্য অনুরুধ জানিয়েছেন খালেদ মিয়া, শাহজাহান আলী, শামছু মিয়া, নজরুল ইসলাম, কারি হোসেন, মুজিবুর রহমান, আখতার মিয়া, রাজু আহমদ, ইকবাল হোসেন, আদম আলী, ইসলাম উদ্দিন, নজরুল মিয়া, বেলাল হোসেন, হেলাল আহমদ, সুমন মিয়া, বাশার আহমদ, শুকুর আলী, আবদুল কুদ্দুছ, আরিফ আহমদ, আবদুল মোতালেব, অপু ঘোষ, শাহাব উদ্দিন ও কামাল মিয়া পরিবহন শ্রমিক নেতৃবৃন্দ। অন্যথায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সহযোগিতায় তারা কঠোর আন্দোলন-সংগ্রামের হুঁশিয়ারি দেন।