ডিভাইসের মাধ্যমে পরীক্ষা দিতে গিয়ে ॥ শাবিতে ভর্তিচ্ছু আটককৃত ২ শিক্ষার্থী জেলে, রিমান্ডের আবেদন

41

স্টাফ রিপোর্টার :
কানে লাগিয়ে ছোট মাইক্রোফোন আকৃতির একটি ডিভাইসের মাধ্যমে পরীক্ষা দিতে গিয়ে শাবির ভর্তিচ্ছু আটককৃত ২ শিক্ষার্থীকে কারাগারে প্রেরণ করেছে পুলিশ। গতকাল পুলিশ আটককৃতদের সংশ্লিষ্ট আদালতে হাজির করে। পরে আদালত তাদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
জেলে প্রেরণকৃতরা হচ্ছে- গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানার বাধাইপাড়া গ্রামের বেলায়েত হোসেনের পুত্র মেহেদী হাসান (১৮) এবং টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর থানার চাপাইদ গ্রামের আবুল কাশেমের পুত্র ছানোয়ার হোসেন (১৮)।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গৌসুল হোসেন জানান, আটক ২ শিক্ষার্থীকে গতকাল রবিবার সিলেট মুখ্য মহানগর হাকিম মো. সাইফুজ্জামান হিরোর আদালতে হাজির করে ৭ রিমান্ডের আবেদন করা হলে শুনানির দিন ধার্য করে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, ছোট মাইক্রোফোন আকৃতির একটি ডিভাইস। যা ব্লুটুথের মাধ্যমে সংযোগ করা হয়েছে ক্রেডিট কার্ড আকৃতির ফোনের সাথে। আর এই ডিভাইসের মাধ্যমে হলরুমের বাহির থেকে প্রশ্নের উত্তর শুনে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান (রোল নম্বর- ১১২৯৮০১)। তবে ভাগ্য তার হাতে ছিল না। ফলে কানের ক্ষুদ্র ডিভাইসটি পড়ে যায় নিচে। আর তাৎক্ষণিক ধরা পড়ে যান হল পরিদর্শকের হাতে তিনি। এভাবেই জালিয়াতির মাধ্যমে গত শনিবার ১৮ নভেম্বর সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষা দিতে গিয়ে কর্তৃপক্ষের হাতে ধরা পড়েন মেহেদী হাসান নামের ওই শিক্ষার্থী। বিকেল ৩টা ১০ মিনিটের দিকে নগরীর বন্দর বাজারস্থ রাজা জি.সি হাই স্কুল কেন্দ্রের ৪নং কক্ষ থেকে ডিভাইসহ তাকে আটক করা হয়। এ সময় পরিদর্শক হিসেবে ছিলেন শাবির আইপি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আব্দুল মুকিত মোহাম্মদ মোকাদ্দেস এবং ওই স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আব্দুল মুমিত। একই অভিযোগে ওইদিন বেলা ২টায় ৪০মিনিটের দিকে ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে লিডিং ইউনিভার্সিটির ৬০৪ নন্বর কক্ষ হতে ছানোয়ার হোসেন নামের (রোল নং- ১১২৪৯৪২) আরেক শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। এ কক্ষে পরিদর্শক হিসেবে ছিলেন শাবির পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আজিজুল বাতেন এবং লিডিং ইউনিভার্সিটির ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. রাশেদুল আজিম। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুটি ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস উদ্ধার করা হয়। অসদুপায় অবলম্বন করার কথা তারা প্রাথমিকভাবে শিকারও করেছে। এ ঘটনায় তাদের দুজনের বিরুদ্ধে শাবিপ্রবি’র রেজিস্ট্রার ইশফাকুল হোসেন বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান (রোল নম্বর- ১১২৯৮০১) বলেন, কানের মধ্যে ছোট ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস বসিয়ে সে বাইরে থেকে আসা কণ্ঠে প্রশ্ন ও উত্তর শুনে পরীক্ষা দিচ্ছিল। হঠাৎ করে তার কান থেকে ডিভাইসটি নিচে পড়ে যায়। এ সময় কক্ষে কর্মরত শিক্ষক টের পেয়ে যান। এভাবে পরীক্ষায় উত্তর সরবরাহকারীকে ৫ লক্ষ টাকা দিতে হবে এমন চুক্তি করেন। তবে উত্তর সরবরাহকারী ব্যক্তি কোচিংয়ের পরিচিত একজন বলে জানান তিনি।