দলীয় মনোনয়ন না পেলে আমি নির্বাচন করবো না – প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান

41

জগন্নাথপুর থেকে সংবাদদাতা :
অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান দলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেলে আমি নির্বাচন করবো না। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী যাকে মনোনীত করবেন, আমি তার পক্ষে কাজ করবো।
গত শনিবার রাত ১২ টার দিকে প্রতিমন্ত্রীর দক্ষিণ সুনামগঞ্জের শান্তিনগরস্থ নিজ বাসায় জগন্নাথপুরের সাংবাদিকদের সাথে একান্ত আলাপ চারিতায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় প্রতিমন্ত্রী সাবলীল ভাবে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। যেহেতু জগন্নাথপুর ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত আপনার নির্বাচনী আসন সুনামগঞ্জ-৩। সেহেতু আপনার বাড়ি দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় হওয়ায়, আপনি আঞ্চলিকতা থেকে বেড়িয়ে আসতে পারেননি। আপনি উন্নয়নে স্বজনপ্রীতি করছেন। জগন্নাথপুরের কিছু জনগণের অভিযোগ আপনি জগন্নাথপুর উপজেলার তুলনায় দক্ষিণ সুনামগঞ্জে বেশি উন্নয়ন করছেন। এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, রাজনীতি ও উন্নয়নে আমার কোন বৈষম্য নেই। আমি সমানভাবে দুই উপজেলায় উন্নয়ন কাজ করে যাচ্ছি। যদিও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার উন্নয়ন কাজ চোখে দেখা গেলেও জগন্নাথপুরের কাজ অনেকটা দেখা যায় না। যে কারণে জগন্নাথপুরের কিছু মানুষ এমন কথা বলেন। কারণ হিসেবে তিনি জানান, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা হচ্ছে নতুন। এ উপজেলার সকল সরকারি-বে-সরকারি সহ সকল ভবন নতুন করে নির্মাণ করা হচ্ছে। ঠিক একইভাবে রাস্তা-ঘাট সহ সকল উন্নয়ন কাজ নতুন হওয়ায় চোখে দেখা যায়। তবে জগন্নাথপুর উপজেলা পুরোনো হওয়ায় নতুন করে কোন ভবন নির্মাণ করতে হয় না। শুধু মেরামত কাজ করতে হয়। যে কারণে জগন্নাথপুরের উন্নয়ন কাজ চোখে পড়ে না। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, আমার প্রচেষ্টায় জগন্নাথপুর উপজেলার কুশিয়ারা নদীর উপর প্রায় ১৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে সিলেট বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘতম সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে অভিযোগ আছে, রাণীগঞ্জ সেতুর কাজে অনেক অনিয়ম এবং নি¤œমানের মাটিযুক্ত কাচামাল দিয়ে কাজ হচ্ছে। এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, রাণীগঞ্জ সেতুর দিকে আমার বিশেষ নজর আছে। অনিয়ম করলে বা নি¤œমানের কাজ করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
বর্তমানে জগন্নাথপুরের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে ভাঙাচোরা রাস্তা-ঘাটের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ অভিযোগ সঠিক। এবার বন্যার কারণে রাস্তাঘাট ভেঙে গেছে। শুধু জগন্নাথপুর নয়, সারা দেশে এমন অবস্থা বিরাজ করছে। তবে অচিরেই জগন্নাথপুরে সকল রাস্তা-ঘাটের মেরামত কাজ করা হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন। তিনি আলাপ চারিতায় আরো বলেন, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রয়াত জাতীয় নেতা আলহাজ্ব আবদুস সামাদ আজাদের সাথে আমার খুব ভাল সম্পর্ক ছিল। আমি উনাকে শ্রদ্ধা করতাম আর উনি আমাকে ¯েœহ করতেন।
আপনি ৫ বছর এমপি ও ৩ বছর প্রতিমন্ত্রী সহ টানা ৮ বছরে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন কালে জগন্নাথপুর ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জে এ পর্যন্ত মোট কত টাকার উন্নয়ন করেছেন, জাইতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী জানান, এ মুহূর্তে হিসেব করে বলতে পারবো না। তবে দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে বেশি উন্নয়ন করেছি।
সম্প্রতি-মৌলভী বাজারের শ্রীমঙ্গলে একটি অনুষ্ঠানে আপনি বলেছেন জনগণ আমাদের প্রভূ। এ নিয়ে কিছু মানুষের মতানৈক্য রয়েছে। জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি সেই অর্থে এ কথা বলিনি। আমার কথা বুঝতে হলে পুরো বিষয় পড়তে হবে। তিনি বলেন, জনগণ হচ্ছে এ দেশের মালিক। আমরা হচ্ছি জনগণের সেবক। সংবিধানেও আছে মালিককে প্রভূ বলা যায়। আমি সেই অর্থে এমন কথা বলেছি। এতে কারো মনে কষ্ট পাওয়ার কোন কারণ নেই। পরিশেষে তিনি বলেন, আমার কোন চাওয়া-পাওয়া নেই, শুধু জনগণের সেবা করে যেতে চাই।
প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নানের সাথে একান্ত আলাপ চারিতায় অংশ নেন জগন্নাথপুর উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো.শাহজাহান মিয়ার নেতৃত্বে প্রেসক্লাবের যুগ্ম-সম্পাদক হিফজুর রহমান তালুকদার জিয়া, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মীরজাহান মিজান, জগন্নাথপুর পত্রিকার সম্পাদক মুহাম্মদ ইয়াকুব মিয়া সহ ৬ সদস্যের সাংবাদিক প্রতিনিধি দল। এ সময় দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হারুন রশীদ সহ প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তি সহ দলের সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে-রবিবার জগন্নাথপুর উপজেলার পাইলগাঁও ইউনিয়নের শ্যামারগাঁও গ্রাম সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান।