পিয়াইনের বুকে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য নৌকা বাইচ…

94

কে.এম.লিমন, গোয়াইনঘাট থেকে :
gowainghat (sylhet) photo-06-10-2017 (1)কোন মেস্তরি নাও বানাইলো এমন দেখা যায়/ঝিলমিল ঝিলমিল করে-রে ময়ূর পঙ্খি নায়, মাঝি-মাল্লাদের ’মারো টান হেইয়ো, জিতেই যাবো হেইয়ো-এসব নানা রকম আওয়াজ ও হাজার হাজার দর্শকদের আনন্দ উচ্ছাসের মধ্যদিয়ে সিলেটের গোয়াইনঘাটে দিন ব্যাপি গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা সম্পন্ন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে বৃহত্তর জাফলং ইঞ্জিন নৌকা মালিক সমিতির আয়োজনে নৌকা বাইচ এর ফাইনাল শুরুর আগ মুহূর্তে বাংলাবাজার এলাকার পিয়াইন নদীর দু’পারে শিশু-কিশোর, নারী-পুরুষসহ সব বয়সের কয়েক সহ¯্রাধিক মানুষের ঢল নামে।
বিকেল ৫ টায় শুরু হওয়া নৌকা বাইচ উপস্থিত দর্শকের করতালি ও মাঝি-মাল্লাদের বিভিন্ন রকম শ্লোগানের মাধ্যমে প্রতিযোগিরা উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে শেষ করে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতার ফাইনালে বড় দলে কানাইঘাট উপজেলার কাজিরপাতন গ্রামের আজিজুর রহমান ও ছোট দলের প্রতিযোগিতায় গোয়াইনঘাট উপজেলার বলেশ^র গ্রামের মহির উদ্দিন বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতা শেষে  বৃহত্তর জাফলং ইঞ্জিন নৌকা মালিক সমিতির সভাপতি আনোয়ার আহমেদের  সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে পুরস্কার বিতরণ করেন পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান লেবু। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাফলং আওয়ামীলীগের  আহ্বায়ক মিনহাজুর  রহমান, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ফারুক আহমদ, তোয়াকুল কলেজের অধ্যাক্ষ লোকমান হোসেন শিকদার, গোয়াইনঘাট থানার এস.আই সমিরন দাস, ইউপি সদস্য আব্দুল কাদির, শাহআলম, উপজেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি মাসুক আহমেদ প্রমুখ।
নৌকা বাইচ দেখতে আসা একাধিক তরুণ-তরুণীর সাথে আলাপকালে তারা জানান,কালের আবর্তে এই নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা প্রায় বিলুপ্তির পথে। বর্তমান প্রজন্মকে এই খেলায় উদ্বুদ্ধ করার জন্য এই নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার গুরুত্ব অনস্বীকার্য। এ বছরের ন্যায় প্রতি বছরই মানুষের ভিন্নধর্মী আনন্দদায়ক এই নৌকা বাইচ আয়োজন করতে আয়োজক কমিটিকে অনুরোধ জানান তারা। পাশাপাশি ঢোলের তালে তালে বৈঠা মারা। হেইয়ো হেইয়ো আওয়াজ করে পানিতে ঝোপাত ঝোপাত শব্দ তুলে সামনে এগিয়ে যাওয়ার দৃশ্যগুলো ছিল অসাধারণ। এক কথায় নৌকা বাইচ দেখে মুগ্ধ এসব তরুণ-তরুণীরা।
আয়োজক কমিটির সভাপতি আনোয়ার আহমেদ বলেন গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ কালের আবর্তে হারিয়ে যেতে বসেছে। নতুন প্রজন্মের কাছে গ্রামীণ ঐতিহ্য তুলে ধরার জন্যই আমরা এই নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি। আগামী বছরগুলোতে আরও বৃহৎ আকারে এই নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করবো বলে আমরা আশাবাদী।