সমাজতান্ত্রিক রুশ বিপ্লবের শততম বার্ষিকী উদযাপন কমিটি, সিলেট এর উদ্যোগে শনিবার বিকাল ৫ টায় সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সমাজতান্ত্রিক রুশ বিপ্লবের তাৎপর্য ও সমকালীন বিশ্বে এর প্রাসঙ্গিকতা শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অক্টোবর বিপ্লব শতবর্ষ উদযাপন জাতীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সমাজতান্ত্রিক রুশ বিপ্লবের শততম বার্ষিকী উদযাপন কমিটি, সিলেট এর আহ্বায়ক বেদানন্দ ভট্টাচার্য এবং পরিচালনা করেন সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. আবুল কাশেম। এতে আলোচক হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্বাবদ্যালয় সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন, ত্রৈমাসিক নতুন দিগন্ত পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক মযহারুল ইসলাম বাবলা।
প্রধান অতিথির বক্তেব্যে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আজ থেকে একশ’ বছর আগে ১৯১৭ সালের অক্টোবর মাসে রুশ দেশে যে বিপ্লব ঘটেছিল তা পৃথিবীকে চমকে ও বদলে দিয়েছে। একদিক দিয়ে নয়, বহুদিক দিয়ে। পরিবর্তন ঘটিয়েছে চিন্তায়, দৃষ্টিভঙ্গিতে, রাজনীতি, সংস্কৃতি, সমাজ ব্যবস্থায়, মানবিক সম্পর্কে এবং মানচিত্রে।
তিনি বলেন, বহুকাল ধরে মানুষ সাম্য, মৈত্রী, ইনসাফের যে সমাজের স্বপ্ন দেখে এসেছে, অক্টোবর বিপ্লব সেই স্বপ্নকেই বাস্তবায়ন করার কাজ করেছে এবং তার মধ্য দিয়ে মানুষকে দিয়েছে আশা ও অগ্রযাত্রার পথের দিশা। ‘মুক্ত মানুষের মুক্ত সমাজ’ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় অক্টোবর বিপ্লব মানব নভ্যতায় সূচনা করেছিল এক নতুন যুগের। বস্তুত, মার্কসবাদী তত্ত্ব ও মতাদর্শকে ধারণ করে অক্টোবর বিপ্লব পুঁজিবাদ ও সা¤্রাজ্যবাদ বিরোধী লড়াইয়ে নতুন মাত্রা যোগ করে, সৃষ্টি করেছিল বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের এক নতুন আন্তর্জাতিকতা। শতাব্দী পার হয়ে যাচ্ছে কিন্তু ওই বিপ্লবের ঐতিহাসিক তাৎপর্য একবিন্দুও মলিন হয় নি বরং বর্তমান বিশ্বেও গাঢ় অন্ধকারের পটভূমিতে তা আরও উজ্জ্বল ও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।
অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে সোভিয়েত ইউনিয়ন পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল, এবং মার্কিন সা¤্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে আমাদের বিজয়ে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিল। সোভিয়েত ইউনিয়ন আজ আর নেই। কিন্তু সেদেশে ও বিশ্বের সব দেশে সমাজতন্ত্র-সাম্যবাদের আন্দোলন অব্যাহত আছে। সোভিয়েত ইউনিয়নের বিপর্যয় অক্টোবর বিপালবের মাহাত্ম্যকে কোনোভাবেই ক্ষুণœ করে নি বরং তার তাৎপর্যকে আরো উজ্জ্বল করে তুলেছে।
আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন সিপিবি, জাসদ, বাসদ, ওয়ার্কার্স পাটি, গণতন্ত্রী পার্টি, ন্যাপ, সাম্যবাদী দল, বাসদ (মার্কসবাদী), সম্মিলিত নাট্যপরিষদ, উদীচী, যুব ইউনিয়ন, যুবমৈত্রী, নারী মুক্তি সংসদ, চারণ সংস্কৃতি কেন্দ্র, ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, ছাত্র মৈত্রী, জাতীয় যুব ঐক্য, খেলাঘর সহ বাম প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। বিজ্ঞপ্তি