কানাইঘাটে দলিল লেখক সমিতির অনির্দিষ্টকালের জন্য কলম বিরতি শুরু

42

কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
দাতার সম্পাদিত একটি দলিলকে কেন্দ্র করে গত ৯ আগষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে কানাইঘাট দলিল লেখক সমিতির সভাপতি দলিল লিখক ফয়জুর রহমানকে ডেকে নেওয়ার ঘটনায় উপজেলা দলিল লেখক সমিতির উদ্যোগে দলিল লেখকদের অনির্দিষ্টকালের জন্য কলম বিরতি কর্মসূচী শুরু করা হয়েছে। বুধবার থেকে দলিল লেখকরা এ কর্মবিরতি শুরু করেন। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দলিল লেখক সমিতির নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি দলিল লেখক ফয়জুর রহমান বড়চতুল ইউপির উন্দ্রকান্দি উত্তর মৌজার একটি দলিল সম্পাদিত করেন। দাতা ও গ্রহীতা ছাড়া ৫নং বড়চতুল ইউপির চেয়ারম্যান মাওঃ আবুল হোসাইন ও তার লোকজন দলিল লেখক ফয়জুর রহমানের কাছ থেকে গত ৯ আগষ্ট সন্ধ্যা ৭টার সময় দলিলটির কপি নেওয়ার চেষ্টাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এ ঘটনা নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহসিনা বেগম বড়চতুল ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন ও তার লোকজনের উপস্থিতিতে দলিল লেখক ফয়জুর রহমান ও দলিল লেখক নুর আহমদকে তার কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে অসৌজন্য মূলক আচরণ করায় এ অনির্দিষ্টকালের কলম বিরতির ডাক দিয়েছেন বলে প্রেস বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন। যতদিন পর্যন্ত এর সুষ্ঠু সমাধান না হবে ততদিন পর্যন্ত কলম বিরতি চলবে বলে দলিল লেখক সমিতির উপদেষ্টা সভাপতি মঈন উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান, দলিল লেখক এম. বোরহান উদ্দিন, মোঃ আফতাব উদ্দিন, জুবেল আমিন, আহমেদ হোসাইন, মোঃ আমির উদ্দিন, সেলিম আহমদ, বাবুল মিয়া, আজমল আলী, দেলোয়ার হোসেন, শাহীন উদ্দিন প্রমুখ দলিল লেখকরা জানিয়েছেন। এদিকে দলিল লেখকরা হঠাৎ করে কলম বিরতি শুরু করায় কোন দলিল সম্পাদন না হওয়ায় জমির ক্রেতা বিক্রেতারা চরম বিড়ম্বনায় পড়েছেন। গতকাল উপজেলা সদরে দলিল সম্পাদন করতে আসা অনেকেই দলিল সম্পাদন করতে না পেরে বাড়ীতে ফিরে যান। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহসিনা বেগমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বড়চতুল ইউপির উন্দ্রাকান্দি উত্তর মৌজার এজমালী সম্পত্তির একটি দলিল সম্পাদনকে কেন্দ্র করে ৯ আগষ্ট যে ঘটনাটি ঘটেছে তার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে স্থানীয় সাংবাদিক ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সহ অনেক লোকজন উপস্থিত ছিলেন। দলিল লেখক ফয়জুর রহমান কর্তৃক দলিল সম্পাদন নিয়ে ঐদিন যে ঘটনাটি ঘটেছে এ নিয়ে চতুল এলাকার মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হলে আইন শৃঙ্খলা অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় দলিল লেখক ফয়জুর রহমান আমার অফিসে উপস্থিত হয়ে তারই দ্বারা দলিলটি সম্পাদিত হয়েছে, রেজিষ্ট্রি হয়নি জানিয়ে দলিল একবার বলেন ছিঁড়ে ফেলেছেন, আবার বলেন আগুনে পুড়িয়ে ফেলেছেন। পরে বড়চতুল ইউপির চেয়ারম্যান আবুল হোসেন ও অসংখ্য লোকজনদের উপস্থিতিতে বিষয়টি স্বীকার করে আমার অনুপস্থিতিতে এলাকাবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে দলিল লেখক ফয়জুর রহমান লিখিত অঙ্গীকার করে এ ধরনের ঘটনা আর তিনি কখনও করবেন না বলে দলিল দাতা ও গ্রহীতাদের নাম উল্লেখ করে মুচলেখা দিয়েছেন। এ নিয়ে দলিল লেখকদের কলম বিরতি ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখ জনক বলে নির্বাহী কর্মকর্তা জানান। ভূমি সংক্রান্ত জাল জালিয়াতির ঘটনা কানাইঘাটে কাউকে করতে দেয়া হবে না বলে তিনি জানিয়েছেন। বড়চতুল ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন জানিয়েছেন, দলিল লেখকরা কার প্ররোচণায় কলম বিরতি শুরু করেছেন, তা সবাই জানে। দলিল লেখক ফয়জুর রহমান নিজের কৃতকর্ম স্বীকার করে এখন দলিল লেখক ভাইদের ভুল বুঝিয়ে ব্যবহার করে শাক দিয়ে মাছ ডাকার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন।