বড়লেখা থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় প্রশাসনের তৎপরতায় ৭ম শ্রেণীর এক ছাত্রীর (১৩) বাল্যবিয়ে পণ্ড হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ভ্রাম্যমাণ আদালতের পরিচালনার খবর পেয়ে কনের বাবা বিয়ের আসর থেকে কনেকে নিয়ে পালিয়ে যান। খবর পেয়ে মধ্যপথ থেকে বরেএবং কাজীও সটকে পড়েন। তবে বিয়ের অতিথি ও বরযাত্রীরা কমিউনিটি সেন্টারে পৌঁছে গেলে তারা বর-কনে ও বিয়ে ছাড়াই ভূরিভোজ করেন। শুক্রবার দুপুর ১টায় বড়লেখা উপজেলা কমপ্লেক্স সংলগ্ন সোনারগাঁ নামক কমিউনিটি সেন্টারে এ ঘটনা ঘটেছে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সমীর বিশ্বাস বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বড়লেখা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর ‘খ’ শাখার ছাত্রী শাহনাজ আক্তার রুমী। তার শ্রেণী রোল-৩০। স্কুলের ভর্তি রেকর্ড অনুযায়ী জন্মের তারিখ ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০০৫। সে হিসেবে তার বয়স ১৩ বছরের কিছু বেশি। ১১ জুলাই শুরু হওয়া অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায় তার সিট বসানো হলেও সে থাকে অনুপস্থিত। বাবা-মা তাকে পরীক্ষার সিটে না বসালেও বিয়ের মঞ্চে বসানোর আয়োজন করেন।
শিক্ষক ও সহপাঠীরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন বাবা চুনু মিয়া ও মা ছালমা বেগম বিয়ানীবাজার উপজেলার মাটিকাটা গ্রামের মৃত বশির আলীর ছেলে শাহ আলম কবির বিপ্লবের সাথে বিয়ে ঠিক করেছেন রুমীর। ১৪ জুলাই শুক্রবার উপজেলা প্রশাসন সংলগ্ন সোনারগাঁ কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ের দিন নির্ধারণ করে প্রায় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন। ঘটা করে ১৩ বছরের মেয়েকে বাল্যবিয়ে দেয়া নিয়ে উপজেলা জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।
আইনগত ব্যবস্থা নিতে দুপুরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সমীর বিশ্বাস, থানার ওসি মোহাম্মদ সহিদুর রহমান কমিউনিটি সেন্টারে উপস্থিত হওয়ার আগেই বিয়ের মঞ্চ থেকে কনেকে নিয়ে পালিয়ে যান বাবা চুনু মিয়া। এ খবরে বর ও কাজী মধ্যপথ থেকে সটকে পড়েন। তবে আমন্ত্রিত অতিথি ও কিছু বরযাত্রী উপস্থিত হলে বর-কনে ও বিয়ে ছাড়াই তারা ভূরিভোজ করেন।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সমীর বিশ্বাস জানান, স্কুল রেকর্ড অনুয়ায়ী মেয়েটির বয়স এখনও ১৪ পার হয়নি। এ বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত চালাতে গেলে কনেকে নিয়ে বাবা সটকে পড়েন। এছাড়া বর ও কাজী বিয়ের আসরে আর উপস্থিত হয়নি। থানা পুলিশ, ওয়ার্ড মেম্বার, স্কুল কর্তৃপক্ষ ও গণমাধ্যম কর্মীদের সার্বিক সহযোগিতায় নিশ্চিত এ বাল্যবিয়েটি পণ্ড হয়েছে।