মৌলভীবাজারে ৩ সাংবাদিক ও পুলিশের এএসপি সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

42

মৌলভীবাজার থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া সার্কেলের সাবেক এএসপি (বর্তমানে ডিএমপিতে কর্মরত) আলমগীর হোসেনসহ আটজনের বিরুদ্ধে নির্যাতন, ছিনতাই ও হয়রানির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গত ৯ জুলাই মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলা করেন ফার্নিচার ব্যবসায়ী মো. সাইফুল ইসলাম সজীব। আদালত তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মৌলভীবাজার সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে দায়িত্ব দিয়েছেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- মৌলভীবাজার মডেল থানার সাবেক অফিসার ইনচার্জ মো. আবদুছ ছালেক, এসআই মো. নাজিমউদ্দিন, এসআই মঞ্জুরুল হাসান মাসুদ, এসআই মো. আবদুল হাশিম এবং সাংবাদিক এসএম উমেদ আলী, আজিজুল হক বাবুল ও আবদুল মালেক মনি।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, পুলিশ কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন মৌলভীবাজারের কুলাউড়া সার্কেলের দায়িত্বে থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বাদীর বিরুদ্ধে ৪৫ মিনিটে হয়রানিমূলক ৩টি মামলা করেন। ওই মামলায় বাদী সাইফুল ইসলাম জেলও খাটেন। সম্প্রতি ওই তিন মামলার রায়ে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হন।
মামলার তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মৌলভীবাজার সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ মামলা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এরই মধ্যে মামলার তদন্ত শুরু হয়েছে। বাদীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ হয়েছে। বাদীকে নিয়ে শিগগির ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। তিনি বলেন, মামলায় ৩ জন সাংবাদিকসহ ৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। ৮ জনের মধ্যে ৫ জনই পুলিশের লোক।
জানতে চাইলে মামলার বাদী সজীব বলেন, আদালতে মামলা দায়েরের এক সপ্তাহ আগেও এএসপি আলমগীর আমাকে ফোনে হত্যার হুমকি দেন। ২০১৪ সালের ১৪ আগস্ট আমার ওপর যে বর্বর-অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে তার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে দীর্ঘদিন পর হলেও আমি মামলা করেছি।
বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, মামলার তদন্তভার পুলিশের ওপর দিলে আমি ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হব। কারণ মামলার প্রধান আসামি পুলিশের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।
এদিকে মঙ্গলবার রাজধানীর ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে (ক্রাব) সংবাদ সম্মেলনে সজীব অভিযোগ করেছেন, রাজধানীর মিরপুর জোনের এএসপি আলমগীর হোসেন তাকে ক্রসফায়ারের হুমকি দিচ্ছেন। তিনি বলেন, এই পুলিশ কর্মকর্তা ও তার বান্ধবী ডা. রাজিয়া সুলতানা ২০১২ সালে মৌলভীবাজার জেলায় কর্মরত থাকা অবস্থায় আমার কাছ থেকে ২৮ লাখ টাকা ধার নেন। আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে আট লাখ টাকার ফার্নিচারও কেনেন। টাকা চাইতে গেলে ঢাকার বনশ্রী বাসা থেকে আটক করে আমাকে মৌলভীবাজার মডেল থানায় নিয়ে যান।
নির্যাতনের পর আমার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন, চাঁদাবাজিসহ তিনটি মামলা করে পুলিশ। আমি জেলও খাটি। ২০১২ সালের ১১ অক্টোবর আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইজিপি, অতিরিক্ত আইজিপি বরাবর অভিযোগ করি। তদন্তের পর আলমগীর হোসেনকে বরখাস্ত করা হয়। কিন্তু তিনি এখনও সপদে বহাল রয়েছেন। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, আমাকে যে কোনো সময় মেরে ফেলতে পারেন। রামপুরা থানায় দুটি জিডিও করেছি।
অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে মিরপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আলমগীর হোসেন বলেন, তার কাছ থেকে টাকা নিয়েছি এর কোনো প্রমাণ নেই। অভিযোগ ভিত্তিহীন। ব্যক্তি চরিত্র ক্ষুণœ করতে এ সংবাদ সম্মেলন।